রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উক্তি, জীবনবোধে আজও যা অনুপ্রাণিত করে
সুখ হোক বা দুঃখ, অবসাদ বা সামাজিক অবক্ষয় , প্রেম বা বিরহ সমস্ত ক্ষেত্রে জীবনী শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করে তাঁর লেখা। শুধুমাত্র একটি বিশেষ দিন নয়, বাঙালি রবীন্দ্রনাথকে রোজ উদযাপন করে , তাঁর লেখা কিছু বিশেষ
রবীন্দ্র-দর্শন যে জীবনবোধের কতবড় খনি, তা যিনি রবীন্দ্রনাথকে আত্মস্থ করতে পেরেছেন , তিনিই বুঝেছেন। বাঙালি ঘরে শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যেভাবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার পরিচয় হয় ,সেভাবেই তাকে চেনানো হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। তাই নতুন করে কেবল ২৫ শে বৈশাখ উপলক্ষ্য়ে বাঙালির সঙ্গে রবীন্দ্র চেতনার পরিচিতি ঘটানোর কিছু থাকে না। তবে 'রবি'মাসের এই দিনটি বাঙালিকে আজও উস্কে দেয় 'রবি ভাবনায়'।
[আরও পড়ুন:সত্যজিতের ছবিতে কেন অভিনয় করতে দেখা যায়নি অমিতাভ বচ্চনকে]
তিনি বাঙালির কাছে এক মহীরূহের মতো। যাঁর দর্শনের ছায়া মেলে ধরেছে তাঁর উপন্যাস, গান কবিতাগুলি। আর সেই সাহিত্যই জীবনের বিভিন্ন পদক্ষেপে উজ্জিবীত করে চলেছে একটা জাতিকে। সুখ হোক বা দুঃখ, অবসাদ বা সামাজিক অবক্ষয় , প্রেম বা বিরহ সমস্ত ক্ষেত্রে জীবনী শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করে তাঁর লেখা। শুধুমাত্র একটি বিশেষ দিন নয়, বাঙালি রবীন্দ্রনাথকে রোজ উদযাপন করে , তাঁর লেখা কিছু বিশেষ লাইন।
[আরও পড়ুন:স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণীগুলি আজও উৎসাহ-অনুপ্রেরণা দেয় যুবসমাজকে]
ধর্ম নিয়ে তাঁর লেখা
ধর্মের
গোঁড়ামি
সম্পর্কে
খুব
সহজ
ভাবে
তিনি
একটি
দর্শক
তুলে
ধরেছেন
এক
বিখ্যাত
লাইনের
মাধ্যমে।
'ধর্মের
বেশে
মোহ
যারে
এসে
ধরে
অন্ধ
সে
জন
মারে
আর
শুধু
মরে'।
ন্যায় অন্যায় বোধ
তাঁর সাহিত্য় বার বার তুলে ধরেছে ন্য়ায় আর অন্যায়কে ঘিরে নানা মূল্যবোধ। এনিয়ে তাঁর বিখ্যাত একটি লাইন -'অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।'
কীভাবে মানুষ চিনবেন
মানুষ চেনা ভীষণ কঠিন! কিন্তু সেই কঠিন কাজকেও সহজ করেছেন রবীন্দ্র দর্শন। 'এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি - রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।'
অহংবোধ বড় ভয়ানক!
অহংকারে অন্ধ ব্যক্তি কখনওই সোজা পথ দেখতে পান না। একথা শাস্ত্র বলেছে। আর রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, 'যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে, পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।'
প্রেমের মোহ
প্রেম আর রবীন্দ্র চেতনার মিশেলে বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্যে উঠে এসেছে অসম্ভব সুন্দর কিছু ভাবনা। তার মধ্যে একটি '...মোহ মেঘে তোমারে দেখিতে দেয় না'। গানের শুরু 'কেন মেঘ আসে হৃদয় আকাশে..'লাইনটি দিয়ে। শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মোহে অন্ধ ব্যক্তির কাছে পছন্দের ব্যক্তিত্বটি সামনে থাকলেও ,তাঁকে ঘ্রো থাকে মোহ-দৃষ্টি। কোনও কিছুর প্রতিই মোহের সূচনা এই ভাবনা দিয়েই হয়ে থাকে। আর সেই বিষয়কে যথোপোযুক্ত সঠিক শব্দ দিয়ে তুলে ধরেছেন রবি ঠাকুর।
প্রেম-সোহাগ প্রসঙ্গে উক্তি
"সোহাগের
সঙ্গে
রাগ
না
মিশিলে
ভালবাসার
স্বাদ
থাকেনা
-
তরকারীতে
লঙ্কামরিচের
মত।"
রবীন্দ্রনাথের
এই
উক্তিই
উস্কে
দেয়
অভিমান-প্রেমের
চক্রাকার
সম্পর্ককে।
প্রেমে পড়ার মুহুর্ত
বাঙালির প্রেম মানেই সেই পর্ব কোথাও না কোথাও মিশে থাকবেই রবীন্দ্র-সাহিত্য। বহু দাম্পত্য প্রেমের সোহাগের কথোপোকথোনেই একটি লাইন বার বার উঠে আসে 'প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস, তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।'
বিচক্ষণতা প্রসঙ্গে রবি ঠাকুর
'রাশিয়ার চিঠি' প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলছেন ' যার সঙ্গে মানুষের লোভের সম্বন্ধ তার কাছ থেকে মানুষ প্রয়োজন উদ্ধার করে, কিন্তু কখনো তাকে সম্মান করে না ।' ফলে প্রিয়জন আর প্রয়োজনের মধ্যে যে সুক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে তাতে বিশেষভাবে নজর রাখা সকলের কর্তব্য।
'সত্যরে লও সহজে'
রবীন্দ্রনাথ
তাঁর
'বোঝাপড়া'
কবিতার
মাধ্যমে
এক
বাস্তবিক
সত্যকে
তুলে
ধরেছেন।
জীবনে
পরিস্থিতি
যেমনই
হোক,
সত্যকে
যে
সহজে
গ্রহণ
করে
ফেলে
,
তাঁকে
হারিয়ে
দেওয়া
কঠিন।
তাই
রবীন্দ্রনাথ
লিখেছেন
,'মনেরে
আজ
কহ
যে,
ভালো
মন্দ
যাহাই
আসুক/সত্যেরে
লও
সহজে।'
মহিলারা কেমন পুরুষ পছন্দ করেন?
এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। 'মণিহারা'-তে তিনি লিখছেন, 'সাধারণত স্ত্রীজাতি কাঁচা আম, ঝাল লঙ্কা এবং কড়া স্বামীই ভালোবাসে। যে দুর্ভাগ্য পুরুষ নিজের স্ত্রীর ভালোবাসা হইতে বঞ্চিত সে - যে কুশ্রী অথবা নির্ধন তাহা নহে; সে নিতান্ত নিরীহ।'