
স্বাধীনতার পর শ্যামাপ্রসাদকে সবার আগে মনে পড়বে বাঙালির, বলেছিলেন কবি নজরুল
ডঃ শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশংসা ও সমালোচনা দুই-ই হয়ে এসেছে চিরকাল। এখনও শ্যামাপ্রসাদকে সুভাসচন্দ্র বোসের বিরোধী বলে দাবি করেন অনেক৷ আবার কখনও সাম্প্রদায়িকতার দায় চাপানোর চেষ্টা হয় তাঁর উপর। কিন্তু নিজের লেখা চিঠিতে কবি কাজী নজরুল ইসলাম ডঃ মুখোপাধ্যায়কে ক্লিনচিট দিয়ে গেছেন এই দুই অপবাদ থেকেই৷

নজরুলের চিঠির প্রেক্ষাপট
সালটা ১৯৪২, তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। অসুস্থ শরীরে কাজী নজরুল ইসলাম পর পর অনেকগুলি চিঠি লিখেছেন কিষান প্রজা পার্টির নেতা ও বঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হককে। সে সব চিঠিতে থাকত কাতর আবেদন, তিনি অসুস্থ, ভুগছেন অর্থকষ্টেও! সাহায্য চায়।
চিঠিগুলির উত্তর এসেছিল শেষ পর্যন্ত, সাহায্যও মিলেছিল। কিন্তু তা তৎকালীন বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নয়৷ নজরুলের সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। মধুপুরে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অসুস্থ নজরুলের চিকিৎসা করিয়েছিলেন ডঃ মুখার্জি। সেখানেই প্রায় ছ'মাস স্বস্ত্রীক ছিলেন নজরুল।
নজরুলের চোখে শ্যামাপ্রসাদ
এই মধুপুরে থাকা অবস্থায় ১৯৪২ এর ১৭ জুলাই ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লেখেন কবি নজরুল। চিঠিতে তিনি লেখেন, শ্রীচরণেষু, এই কোয়ালিশন মিনিষ্ট্রি-র একমাত্র আপনাকে (শ্যামাপ্রসাদ) আমি অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি ও ভালবাসি। আর কাউকে নয়। আমি জানি আমরাই এই ভারতবর্ষকে পূর্ণ স্বাধীন করব। সেদিন বাঙালির আপনাকে (শ্যামাপ্রসাদকে) ও সুভাষবাবুকেই সকলের আগে মনে পড়বে। আপনারাই হবেন এদেশের পতাকার নায়ক।
কাজী নজরুল ইসলাম।'
এখানেই শেষ নয় এরপরও অবশ্য বহুবার শ্যামাপ্রসাদের প্রকাশ্য প্রশংসা করেছেন কবি নজরুল। এরপরও ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে সাম্প্রদায়িক বলা চলে কিনা সে বিতর্ক এখনও জীবিত রয়েছে৷