আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলির দিনক্ষণ চূড়ান্ত, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা
আইপিএলের বাকি ৩১টি ম্যাচ কবে থেকে শুরু হবে এবং কবে ফাইনাল তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এমনটাই দাবি বিসিসিআইয়ের এক কর্তার। সম্প্রতি দুবাইয়ে গিয়েছিলেন বিসিসিআইয়ের শীর্ষকর্তারা। সেখানেই বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
ক্রীড়াসূচি নিয়ে
বিসিসিআই সূত্রে খবর, ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হবে আইপিএল। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর। আইপিএলের খেলাগুলি হবে আবু ধাবি, শারজা ও দুবাইয়ে। বিসিসিআইয়ের এক কর্তা সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, বিসিসিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভার আগেই আইপিএল সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে আয়োজনের বিষয়ে মৌখিক সম্মতি দিয়েছিল এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড। গত সপ্তাহেই আনুষ্ঠানিকভাবে আইপিএল আয়োজনের সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ দেশে ফিরে এলেও সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ বিসিসিআই শীর্ষকর্তারা দুবাইয়ে ক্রীড়াসূচি-সহ যাবতীয় পরিকল্পনা সেরে ফিরবেন। ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ড থেকে সোজা ১৫ সেপ্টেম্বর চার্টার্ড বিমানে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে পৌঁছাবেন। তাঁরা জৈব সুরক্ষে বলয়ে থাকায় সম্ভবত তিনদিনের কঠোর নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। বিসিসিআই প্রথমে দশটি ডাবল হেডারের পরিকল্পনা করলেও মরুদেশের গরমে ক্রিকেটারদের অসুবিধার কথা ভেবে তা কমিয়ে পাঁচ বা ছয় করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার ফাইনাল হলে দুবাইয়ে যেহেতু সেদিন ছুটি তাই অনেক মানুষ খেলা দেখতে আসবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। ১৫ অক্টোবর অবধি বাড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে ডাবল হেডার কমাতেই।
বিদেশিদের আনতে
বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের বিষয়ে বিসিসিআই কর্তার দাবি, বিসিসিআইয়ের তরফে এ ব্যাপারে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সদর্থক দিকে এগোচ্ছে বলে খবর। বেশিরভাগ বিদেশি ক্রিকেটারই আইপিএল খেলতে আসবেন বলে আমরা আশাবাদী। তবে যাঁরা আসতে পারবেন না তাঁদের বিকল্প হিসেবে কী পদক্ষেপ হবে তা পরে চূড়ান্ত হবে। সবমিলিয়ে আইপিএলের জৌলুস একইরকম থাকবে বলে নিশ্চিত বিসিসিআই।
বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে বিশ্বকাপ সরলে অক্টোবরের প্রথমেই স্টেডিয়াম তুলে দিতে হবে আইসিসিকে। পিচ-সহ পরিকাঠামোগত কারণে আইসিসি ইভেন্টের দিন পনেরো আগে আইসিসি-র হাতে স্টেডিয়াম তুলে দেওয়াই নিয়ম। ফলে ১৫ অক্টোবর আইপিএল ফাইনাল হলে সেটা কীভাবে সম্ভব তা চিন্তার বিষয়। অন্তত ১০ অক্টোবরের আগে তো ফাইনাল সম্ভবই নয়। একটি কেন্দ্রে আইপিএলের অতগুলি ম্যাচ আয়োজন সম্ভব না হলেও বোর্ডের পরিকল্পনা রয়েছে, প্লে অফ-সহ শেষের দিকের কয়েকটি ম্যাচ দুবাইয়ে করার। ফলে আবু ধাবি ও শারজা আইসিসি-র হাতে যথাসময়ে তুলে দেওয়া হতে পারে। তাতে সরকারিভাবে না হলেও আইসিসি সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলেও খবর। কেন না, ১৬ দলের বিশ্বকাপের আগে বিভিন্ন দেশের শিবির শুরু হবে। প্রস্তুতি ম্যাচও হওয়ার কথা। ফলে দুবাইয়ে আইপিএলের শেষের দিকে খেলাগুলি হলে ওমানে বিশ্বকাপের প্রথম দিকের ম্যাচগুলি আয়োজনেও কথাবার্তা চালাচ্ছে আইসিসি।
দৌড়ে শ্রীলঙ্কা
এরই মধ্যে ডার্ক হর্স হিসেবে উঠে এসেছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলি আয়োজনের আগ্রহ দেখিয়েছিল। এর আগে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনও করেছে শ্রীলঙ্কা। বিসিসিআই সূত্রের খবর, বোর্ডকর্তারা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন তাঁরা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে রাজি কিনা। শ্রীলঙ্কার নিভৃতবাস-বিধিও তেমন কঠোর নয়। শ্রীলঙ্কা রাজি হলে বিসিসিআইয়ের আইপিএল আয়োজন ও স্টেডিয়াম নিয়ে চিন্তা অনেকটাই কমবে। কেন না, শ্রীলঙ্কার কলম্বোতেই রয়েছে তিনটি স্টেডিয়াম। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর থেকে স্টেডিয়ামের সংখ্যা বেশি। সবচেয়ে বড় কথা, পিচ নিয়ে বিতর্ক এড়ানোও সম্ভব হবে শ্রীলঙ্কায় টি ২০ বিশ্বকাপ করা গেলে। সম্প্রচারকারী সংস্থাও আয়োজক বিসিসিআইয়ের পাশে থাকবে বলেই আশা বোর্ডকর্তাদের। বোর্ডের প্রস্তাব শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড ফেরাবে না বলেই মনে করছে ক্রিকেট মহল। কেন না, কোভিড পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কট কাটাতে বিসিসিআই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার আশ্বাস দিয়ে রেখেছে। এমনিতেই আর্থিক হাল খারাপ থাকায় ক্রিকেটারদের জন্য যে নতুন বেতন কাঠামো চালু করা হয়েছে তা নিয়ে ক্রিকেটারদের বিদ্রোহে প্রবল চাপে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড।
ছবি- বিসিসিআই/আইপিএল