ভারতীয় দলকে নিয়ে কেন দ্বিধা ও চিন্তায় থাকে বিপক্ষ, খোলসা করলেন মহম্মদ শামি
ইংল্যান্ডের মাটিতে ছটি টেস্ট খেলতে জুনের শুরুতেই রওনা দেবে ভারতীয় দল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। তারপর রয়েছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্টের সিরিজ। ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় জোরে বোলাররা স্যুইংকে অস্ত্র করে বাজিমাতের অপেক্ষায় থাকেন। ভারতীয় দলের বোলিং আক্রমণে তাই বড় দায়িত্ব থাকবে মহম্মদ শামির।
শামির কামব্যাক
অ্যাডিলেডে গত ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেছেন মহম্মদ শামি। চোটের কারণে দেশে ফিরতে হয়েছিল। ন্যাশনাল ক্রিকেট আকাদেমিতে রিহ্যাবের পর আইপিএল খেলেন। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজেও খেলার সুযোগ পাননি। তবে ইংল্যান্ডগামী দলে শামি রয়েছেন। রয়েছেন দুর্দান্ত কামব্যাকের অপেক্ষায়। ইংল্যান্ডে শামি ৮টি টেস্টে মোট ২১টি উইকেট নিয়েছেন। দেশে ও বিদেশে মিলিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি ১১টি ম্যাচে ৩১টি উইকেট দখল করেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭টি টেস্টে তাঁর উইকেটসংখ্যা ২৩। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে চারটি টেস্টে শামি ১৫টি উইকেট পেয়েছেন। ৫০টি টেস্টে শামির উইকেটসংখ্যা ১৮০। ইংল্যান্ডের মাটিতেই তাই ২০০তম টেস্ট উইকেট পেতে পারেন ভারতের এই পেসার।
আইপিএলের পারফরম্যান্স
চোট সারিয়ে মাঠে ফেরার পর আইপিএলে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে আটটি ম্যাচেই খেলেন শামি। পেয়েছেন মোট ৮ উইকেট। বোলিং গড় ২৯.২৫। ইকনমি ৮.১৬। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচেই ২১ রান খরচ করে ২টি করে উইকেট দখল করেন শামি।
বিপক্ষের মাথাব্যথা
বরাবরের মতো এবারও ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ বোলিং আক্রমণ বিপক্ষকে চিন্তা ও দ্বিধায় রাখবে বলে আত্মবিশ্বাসী মহম্মদ শামি। তিনি বলেন, আমাদের বোলিং আক্রমণে স্পিন ও পেসের এমন বৈচিত্র্য রয়েছে যা সব সময় বিদেশি প্রতিপক্ষকে চিন্তায় রাখবে কেমন উইকেট আমাদের বিরুদ্ধে বানাবে সেই বিষয়ে। স্পিনিং ট্র্যাক দিলে ভারতীয় স্পিনাররা কীভাবে দাপট দেখান তা সকলেরই জানা। সিমিং ট্র্যাক বানিয়েও বিপক্ষ চাপে থাকে, কারণ সেই দলের ক্রিকেটারেরা ভালোরকমই জানেন ভারতের পেসাররা তাঁদের এতটুকু জায়গা ছাড়বেন না। আর তাতেই বিপক্ষের মাথাব্যথা থেকেই যায়। ব্যাটিং বরাবরই ভারতের শক্তিশালী। এখন বোলিং আক্রমণের শক্তিও অনেকটাই বেড়েছে। আমাদের দলে যেমন ৩-৪ জন কোয়ালিটি স্পিনার রয়েছেন তেমনই তিন-চারজন ভালো পেসারও রয়েছেন। এতেই দ্বিধায় পড়ে যায় বিপক্ষ উইকেট বানাতে গিয়ে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর আটটি টেস্ট সিরিজের মধ্যে মাত্র একবারই হেরেছে ভারত। সেটাও নিউজিল্যান্ড সফরে। অস্ট্রেলিয়া সফরে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে মধুর প্রতিশোধ নিতে মুখিয়ে ভারত।
বিরাটকে নিয়ে
একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাতকারে শামি মুখ খুলেছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে নিয়েও। তিনি বলেন, অধিনায়ক দলের সব বোলারকেই স্বাধীনতা দিয়ে থাকেন। কোনও পরিকল্পনা প্রয়োগ করা না গেলে তাঁকে কিছুটা উত্তেজিত মনে হয়, কিন্তু এমনিতে আমাদের খোলা মনে বোলিং করতে দেন। পাশে থেকে সবরকম সহযোগিতা করেন। অকারণে কারও ওপর কোনও চাপ তৈরি করেন না। অনেকে এমনিতে সংশয়ে থাকেন বা কুণ্ঠা বোধ করেন অধিনায়ককে কিছু বলতে। কিন্তু বিরাটের ক্ষেত্রে সেটা একেবারেই প্রযোজ্য নয়। বরং মাঠেও বিরাট শৈশবের বন্ধুর মতোই নানারকম মজা করতে থাকেন সতীর্থদের সঙ্গে। অনেক সময় আমরাও অ্যাগ্রেসিভ হয়ে গিয়ে দলের সতীর্থদের মধ্যে কিছু বলি। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও জানি সকলেই দেশের হয়ে সেরাটাই দিতে চাইছেন। এমনকী বিরাট নিজে আমাদের বলেন, আমার কিছু ভুল হলে সে ব্যাপারে বলতে দ্বিধা করো না। এভাবেই বিরাটের দল এখন সুখের সংসার। ২০০৭ সালের পর ফের ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিততে বদ্ধপরিকর ভারত।