
শ্রীকৃষ্ণ জীবনের আসল মন্ত্র দিয়ে গিয়েছেন মহাভারতে, যা শুনলে কখনই হতাশ হবেন না আপনিও
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জীবনের আসল মন্ত্র দিয়ে গিয়েছেন মহাভারতে। মহাভারতে তিনি যে সমস্ত উপদেশ সখা পার্থ বা অর্জুনকে দিয়ে গিয়েছিলেন, তা-ই জীবনের প্রকৃত শিক্ষা। যা শুনলে বা মেনে চললে আপনি কখনই হতাশ হবেন না। আপনার সমস্ত হতাশা এক লহমায় দূরীভূত হয়ে যাবে। যেমনটা ঠিক হয়েছিল মহাভারতের শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর অর্জুনের ক্ষেত্রে।

জীবনের আসল মন্ত্র
অর্জুন যখন ধর্মযুদ্ধে কুরুক্ষেত্রে গিয়ে যুদ্ধ করবেন না বলে বেঁকে বসেছিলেন, তখন তাঁকে বাস্তবজ্ঞান দিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া মহাভারতে বর্ণিত সেই উপদেশ গীতায় উল্লেখ আছে। শ্রীকৃষ্ণের সেই উপদেশগুলিকেই বলা হয় জীবনের আসল মন্ত্র। যা পালনে আপনাকে কোনওদিনই হতাশা গ্রাস করতে পারবে না। আপনার হতাশা মুহূর্তে দূর হয়ে যাবে।

কুরুক্ষেত্রের ধর্মযুদ্ধে
মহাভারতে অর্জুনের প্রতি শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা ভগবদ্গীতায় বর্ণিত হয়েছে। মহাভারতের যুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধ বলা হয়েছিল এই কারণেই যে এই যুদ্ধ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার, এই যুদ্ধে ছিল মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর। এই যুদ্ধ ছিল মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার, অধর্মের বিরুদ্ধে ধর্ম প্রতিষ্ঠার, এই যুদ্ধ ন্যায়ের পরিত্রাণের, দুষ্কৃতের বিনাশের। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অধর্মের বিরুদ্ধে জয় হয়েছিল ধর্মের। মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর।

কর্ম হল উপাসনা
এই যুদ্ধের প্রারম্ভেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের উদ্দেশে জীবনের রহস্য উন্মোচন করেছিলেন। জীবন দর্শন বুঝিয়েছিলেন সখা অর্জুনকে। যা বিশ্ব জানে গীতা উপদেশ নামে। শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, সময় হল সবথেক শক্তিশাল। আর কর্ম হল উপাসনা। শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া এই জ্ঞানকেই ধরা হয় জীবনের মৌলিক মন্ত্র।

সময় খুবই শক্তিশালী
শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া এই সকল জ্ঞানকে পাথেয় করে একজন ব্যক্তি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে, প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মহাভারতের যুদ্ধের আগে অর্জুন যখন বিভ্রান্ত, তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে সঠিক মার্গ দর্শন করেছিলেন। এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়ে বলেছিলেন সময় খুবই শক্তিশালী।

তুমি নিমিত্ত মাত্র...
অর্জুনের উদ্দেশে শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, তুমি যদি মনে করো যে তুমি অস্ত্র না ধরলে পাপীদের বিনাশ করা যাবে না। তা মিথ্যা। তুমি তো একটা যন্ত্র। সবার বিনাশ নিশ্চিত হয়ে রয়েছে। তা অবশ্যই ঘটবে। তুমি একটা নিমিত্ত মাত্র। তুমি নিজেকে পরমাত্মার হাতে অর্পণ করে সমস্ত কাজ কর। যত খারাপ পরিস্থিতিই হোক, একদিন তা কেটে যাবে।

মা ফলেষু কদাচন...
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কর্ম-যোগের শিক্ষাও দিয়েছিলেন। পরামর্শ দিয়েছিলেন কর্মযোগী হওয়ার। অর্জুনকে জীবনের আসল রহস্যের কথায় তিনি বলেছিলেন- "কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন, মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সংস্তাকর্মাণি"। অর্থাৎ কর্ম হল উপাসনা, কর্ম হল ভক্তি, সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাই কর্ম করা উচিত। কর্মফলের জন্য ভেবো না। তুমি যে কাজ করতে এসেছো, সেটা করো। কারণ কর্মে তোমার অধিকার, কর্মফলে নয়।

ইষ্টে বিশ্বাস রেখে কর্ম
শুধু কর্মযোগ নয়, ভক্তি যোগের কথাও বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। অর্জুনকে উপদেশ দিতে গিয়ে ভক্তিকে শাশ্বত প্রক্রিয়া বলে বর্ণনা করেন তিনি। আর অর্জুনকে বলেন, ইষ্টে বিশ্বাস রেখে কর্ম করার কথা। ভক্তিযোগে তিনি বিশ্বাসকে সর্বাগ্রে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ইস্ট দেবতা বা ঈশ্বরকে বিশ্বাস রেখে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে। তাহলে সাফল্য আসবেই।