বিজয় সালগাঁওকারকে ছাপিয়ে গেলেন টাবু, প্রথম পর্বের রহস্য কি উন্মোচন হল দৃশ্যম ২–তে?
বিজয় সালগাঁওকারকে ছাপিয়ে গেলেন টাবু, প্রথম পর্বের রহস্য কি উন্মোচন হল দৃশ্যম ২–তে?
বলিউড সাসপেন্স থ্রিলারকে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য খুব একটা পরিচিত নয়। প্রথম ছবিতে যে থ্রিলার দেখা যায় তা সিক্যুয়েলে অনেক সময়ই দেখা যায় না। তবে এক্ষেত্রে 'দৃশ্যম ২' দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া 'দৃশ্যম' যেরমকম দর্শকদের শরীরে শিহরণ জাগিয়ে ছিল, তেমনি ২০২২ সালে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত 'দৃশ্যম ২'-এর সাধারণ চরিত্র, পুলিশ ও পরিবারকে একসূত্রে গেঁথে ফেলেছে। দর্শকদের জন্য এটাই বলা যায় প্রথমে আপনি যা দেখেছিলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এখন যেটা দেখছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
অশিক্ষিত বিজয় সালগাঁওকারের বুদ্ধির জোর দেখা যাবে
গোটা বিশ্ব বিজয় সালগাঁওকারের (অজয় দেবগণ) মধ্যে কি পেয়েছেন? নিতান্তই পরিবার নিয়ে চিন্তা করা এক ব্যক্তি যিনি দুই সন্তানের বাবা, যিনি স্থানীয় কেবল পরিষেবা চালান এবং সিনেমার প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা অথবা চতুর্থ শ্রেণীতে ফেল করা এক অশিক্ষিত ব্যক্তি যাঁর কাছে পরিবারই আসল। 'দৃশ্যম'-এর প্রথম অংশে দর্শকরা দেখেছিলেন বিজয় সালগাঁওকারের দৃষ্টিতেই মীরা দেশমুখ (টাবু) তাঁর পুত্র নিখোঁজ ও খুনের গোটা ঘটনা দেখতে পান। গোয়ার আইজিপি এই অশিক্ষিত সাধারণ মানুষের বুদ্ধির কাছে রীতিমতো হেরে যান। সেখান থেকেই শুরু হয় 'দৃশ্যম ২'। প্রথম পর্ব থেকে এই দুই প্রধান চরিত্রকে তুলে নেওয়া হয়েছে, যাঁরা উভয়ই অভিভাবক হিসাবে দারুণ। পরিচালক জিতু যোসেফ, যিনি মালায়ালম ভার্সনে দুই ছবিই পরিচালনা করেছেন। অন্যদিকে দৃশ্যম-এর হিন্দি রিমেকের প্রথম পরিচালক নিশিকান্ত কামাতের মৃত্যুর পর এই ছবির সিক্যুয়েন্সের দায়িত্ব এসে পড়ে অভিষেক পাঠকের ওপর।
চরিত্র সবই এক রয়েছে দ্বিতীয় ভাগে
২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া দৃশ্যম ছিল একটি সুপার হিট ছবি, সাসপেন্স-থ্রিলারটি এই নোটে শেষ হয়েছে যেখানে অজয় দেবগনের চরিত্রটি তাবু এবং রজত কাপুরের সামনে পরোক্ষভাবে অপরাধ স্বীকার করেছে, যা দর্শকদের আরও কৌতূহলী করে তুলেছিল, এরপর কী? আর এই প্রশ্নের উত্তরকে কেন্দ্র করে তৈরি দৃশ্যম ২। মোটামুটি সব চরিত্রকেই সিক্যুয়েন্সে নিয়ে আসা হয়েছে। সাতবছর ধরে গোপন করে রাখা খুনের রহস্য এবং একমাত্র সালগাঁওকারের পরিবারই জানেন স্যামের মৃত্যুর আসল কারণ। দৃশ্যম ২-তেও অজয় দেবগণের স্ত্রীর ভূমিকায় থাকা শ্রিয়া শরণের চুল, শাড়ি পরার ধরণ, চোখে ভয় কিন্তু তা লোকানো কাজলের আড়ালে, খুনের ঘটনায় রাত জাগা এবং তাঁর কথা বলার ধরনও এক রাখা হয়েছে।
প্রথম পর্বের গল্পকেই টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে
দৃশ্যম ২ প্রথম পার্টের গল্পকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই অংশে নতুন করে সংযোজন হয়েছে নতুন আইজি তরুণ ওরফে অক্ষয় খান্না। দৃশ্যম-এ টাবুকে দর্শকরা নৈতিক কর্তৃপক্ষ, দৃঢ় মনোবল ও অসহায় হিসাবে দেখেছি, যিনি দুর্দান্ত পুলিশ অফিসার সত্ত্বেও ছেলেকে খোঁজার জন্য মরিয়া মাও। অক্ষয় খান্নার চরিত্র কিছুটা হলেও আলাদা টাবুর থেকে। তবে তাঁর উপস্থিতি সিনেমাকে আরও মজাদার করে তুলেছে, যিনি তদন্তকারী পুলিশের মতোই অজয় দেবগণের চোখে সত্য খুঁজতে থাকেন। টাবু এবং তাঁর ব্যবসায়ী স্বামী মহেশ দেশমুখ শোকার্ত মা-বাবা হিসাবে ফিরে আসেন। তাঁদের ভূমিকা সীমিত, কিন্তু টাবু যতক্ষণ বড়পর্দায় ছিলেন তিনি রাজ করেছেন। বলা চলে অজয় দেবগণের পাশাপাশি তাঁর উপস্থিতিও জোরদার ছিল।
সফল পরিচালক
পরিচালক সফল হয়েছেন দৃশ্যম ২-তেও রহস্য অবিকল রাখতে। যা প্রথম পর্ব থেকে শুরু হয়েছিল। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, চিত্রনাট্য যথেষ্ট প্রশংসার যোগ্য। সবকিছু মিলিয়ে দৃশ্যম-এ যে রহস্যের সমাধান হয়নি তা দৃশ্যম ২-তে হলো কিনা সেটা দেখার জন্য দর্শকদের সিনেমা হলে আসতেই হবে এবং তাঁরা নিরাশ হবেন না।