বাংলা ছবির জনপ্রিয় কিছু সংলাপ ,যা প্রায়ই উঠে আসে বাঙালির কথাবার্তায়! দেখুন ফোটোফিচার
বাংলা চলচ্চিত্রের বিভিন্নকালে, উঠে এসেছে নানা জনপ্রিয় সংলাপ । সেই সমস্ত সংলাপ বাংলা ও বাঙালির সঙ্গে একাত্ম হয়ে রয়েছে। সংলাপের ওপর নির্ভর করে বহু বহু ব্যক্তিত্বই হয়ে উঠেছেন ' অভিনেতা', হয়ে উঠেছেন ভক্তদের 'নায়ক'। নিত্য়দিনের চলার পথে নানা সময়ে,কখনও বা নিজের অজান্তেই বাঙালির মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে এই সব সংলাপ।
বাণিজ্যিক ছবিই হোক বা সমান্তরাল ছবি, সব ক্ষেত্রেই বাংলা ছবির বেশ কিছু সংলাপ আজও প্রাসঙ্গিক। কখনও কখনও ক্ষেত্র বিশেষে সংলাপ ব্যবহার করেও আত্মতুষ্টিও মেলে অনেকের! একনজরে দেখে নেওয়া যাক বাংলা ছবির সেই সংলাপগুলি, যা বাঙালির নিত্য বুলির মধ্যে পড়ে।

"জানার কোনও শেষ নাই জানার চেষ্টা বৃথা তাই"
সত্যজিৎ রায়ের 'হিরক রাজার দেশ' ছবির সেই বিখ্যাত সংলাপ এটি। যেখানে অত্যাচারী রাজা , রাজ্যে জ্ঞানের প্রসার হওয়া থেকে রাজ্যবাসীকে আটকাতে চান, যাতে তাঁরা বেশি শিক্ষিত না হয়ে যান। বেশি জ্ঞান হলে ,তাঁরা অত্যাচারী রাজার ভুল ধরতে না পারেন। তার জন্য হিরক রাজ এই স্লোগান চালু করেন-"জানার কোনও শেষ নাই জানার চেষ্টা বৃথা তাই"। যে সংলাপ আজও ক্ষেত্রে বিশেষে ব্যবহার করে থাকেন বহু বাঙালি।

"আই উইল গো টু দ্য টপ দ্য টপ দ্য টপ"
উত্তম কুমারের কালজয়ী এই সংলাপ ,সত্যজিতের ছবি 'নায়ক'-এর। বহু বাঙালির অবসাদ থেকে মূলস্রোতে ফেরার সঙ্গী হয়েছে এই সংলাপ। আজও উচ্চাঙ্খী বহু বাঙালিরই পথ চলার পাথেয়, এই সংলাপ।

মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে
স্কুল, কলেজ হোক বা বড়সড় দফতরই হোক, বাঙালি আয়েশ করে এই সংলাপটি বলতে বেশ ভালোবাসে! টলিউডের 'গুরু' মিঠুন চক্রবর্তীর এই জনপ্রিয় সংলাপ 'ফাটা কেষ্ট' ছবির। ছবিতে যে মেজাজে মিঠুন এই সংলাপটি ফুটিয়ে তুলেছেন তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

"জীবনে ভাত, ডাল , আর বিরিয়ানির তফাৎটা বুঝতে শেখো"
খুবই প্রাসঙ্গিক এই সংলাপ সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি 'বাইশে শ্রাবণ'-এর। এই সংলাপ ছিল অভিনেতা প্রসেনজিতের। "জীবনে ভাত, ডাল , আর বিরিয়ানির তফাৎটা বুঝতে শেখো", এই লাইনটির ব্যাখ্যা হিসাবে ছবিতে আরেকটি সংলাপ যোগ করা হয়, তা হল-" প্রথমেরটা নেসেসিটি , পরের টা লাক্সারি"।

" সাবাশ তোপসে"
সত্যজিৎ রায়ের লেখা 'সোনার কেল্লা' ছবির এই সংলাপ প্রায়সই ঘোরাপেরা করে সাধারণ বাঙালির মুখে। ফেলুদার চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এই সংলাপকে পরিবেশনায় এক অদ্ভুত অভিনয়ের পরিপাট্য দেখিয়েছিলেন। যা তাঁর চোখে মুখের অভিব্যক্তিতে ধরা পড়ে। কোথাও কাউকে পিঠ চাপড়াতে হলে বা কারোর প্রশংসা করতে হলে, এই সংলাপের ব্যবহার করে থাকেন অনেক বাঙালিই।

"প্রথম ইনাম দেওয়ার অধিকার গৃহস্বামীর"
সত্যজিৎ রায়ের আরেক কালজয়ী ছবি "জলশাঘর"। যে ছবির মূল চরিত্র জমিদার বিশ্বম্ভর রায় ছিলেন দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্যক্তিত্ব। এই চরিত্রে অভিনয় করেন কিংবদন্তী অভিনেতা ছবি বিশ্বাস। তাঁরই এই সংলাপ ছিল যে, "প্রথম ইনাম দেওয়ার অধিকার গৃহস্বামীর"।

"বাংলা মিডিয়ামের বয়ফ্রেন্ড পোষাচ্ছেনা" ?
ছবির নাম 'বাইশে শ্রাবণ' প্রসেনজিৎ, পরমব্রত, রাইমা, আবীর অভিনিত এই ছবির বহু সংলাপই বাঙালি চেনা জীবনধারার সঙ্গে থাপ খায়। ছবিতে অভিজিত(পরমব্রত) ও অমৃতা (রাইমা) -র একটি দৃশ্যে, পরমব্রতর সংলাপ ছিল- " কী ম্যাডাম বাংলা মিডিয়াম বয়ফ্রেন্ড আর পোষাচ্ছে না?" এই সংলাপ ক্ষেত্র বিশেষে বাঙালির প্রেম জীবনে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।