চিতাকে হারিয়ে প্রাণপণ সংগ্রামে জয়ী চা বাগানের মহিলা শ্রমিক!
বাঘের সঙ্গে অসম লড়াইয়ে জিতল মানুষই। চিতাকে হারিয়ে জীবন বাঁচালেন চা বাগানের এক মহিলা শ্রমিক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা আলিপুরদুয়ারের রাজাভাত চা বাগানে।
আলিপুরদুয়ার, ১০ নভেম্বর : বাঘের সঙ্গে অসম লড়াইয়ে জিতল মানুষই। চিতাকে হারিয়ে জীবন বাঁচালেন চা বাগানের এক মহিলা শ্রমিক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা আলিপুরদুয়ারের রাজাভাত চা বাগানে। যুদ্ধে হেরে বাঘ পালিয়েছে। সিসিলিয়া খড়িয়া নামে ওই মহিলা বাঘের থাবায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আলিপুরদুয়ারের এই রাজাভাত চা বাগান এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চিতার উপদ্রব শুরু হয়েছিল। আতঙ্কে দিন কাটছিল চা বাগান শ্রমিকদের। বুধবার সন্ধ্যায় যখন শ্রমিকরা সবাই কাজ সেরে বাড়িমুখী, তখনই ঘটে যায় এই ঘটনা। আচমকা হানা দেয় চিতা। একেবারে পূর্ণবয়স্ক ওই চিতাবাঘ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সিসিলিয়ার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
আচমকা হানায় প্রথমে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও, নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ লড়াই শুরু করে সিসিলিয়া। চিতা-মানুষে খণ্ডযুদ্ধ চলতে থাকে বেশ খানিকক্ষণ। কিছুতেই বাঘটিকে কাবু করতে পারছিলেন না। এইসময় চিতার থাবাও খেতে হয় থাকে। তারপর আচ্ছা কষে চিতাটির দুটি কান বাগিয়ে ধরতেই কাবু হয়ে পড়ে চিতাটি।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে সিসিলিয়া বলছিলেন, কানদু'টো ধরতেই বিকট চিৎকার করে উঠল বাঘটি। তারপর আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ছুটে পালাল। এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। তিনি বললেন, প্রথমে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারপর ভাবলাম, আর তো বেঁচে ফেরা হবে না। শেষ চেষ্টা করে দেখি। এরপর গুরুতর আহত সিসিলিয়াকে প্রথমে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে।
পরে তাঁকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। তাঁর চোখের আশপাশে চিতার নখের আঘাতে ক্ষত তৈরি হয়েছে। ভয় রয়েছে দৃষ্টিশক্তি হারানোর। রাজাভাতখাওয়া চা বাগানের ম্যানেজার টি এন পান্ডে বলেন, 'সিসিলিয়ার চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। যতদিন না সুস্থ হচ্ছেন ওই শ্রমিক তাঁকে নির্দিষ্ট হাজিরা দেওয়া হবে। শ্রমিকদের সুরক্ষায় খাঁচা পাতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষ।