(ফটো ফিচার) কবিগুরুর জন্মদিনে তাঁর সম্পর্কে এই তথ্যগুলি আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শুভ জন্মদিনে বাঙালি আজীবন তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করে চলেছে, এবং করেও যাবে। জন্মদিনে কবিগুরুকে নিয়ে কিছু কম জানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক একনজরে।
বাঙালি মননে, চিন্তায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিরন্তন হয়ে রয়েছেন। তাঁর কর্মব্যাপ্তি শুধু নয়, অতুলনীয় জীবনবোধই তাঁকে সর্বযুগের সেরা কবি-লেখকের স্থলাভিষিক্ত করেছে। লেখনীর এমন কোনও মাধ্যম নেই যেখানে কবির বিস্তার ঘটেনি, এবং শুধু বিস্তার নয়, নিজের লেখনীর মাধ্যমে তাকে জয় করেছেন তিনি।
মূর্তি পূজায় বিশ্বাস করতেন না। বিশ্বাস ছিল না পুঁথিগত শিক্ষায়ও। প্রথাগত শিক্ষাকে যেমন নিজে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন, তেমনই পরের প্রজন্মও যাতে সেই পথে হাঁটতে পারে সেজন্য বীরভূমের শান্তি নিকেতনে তৈরি করেছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এহেন বিশ্বকবির শুভ জন্মদিনে বাঙালি আজীবন তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করে চলেছে, এবং করেও যাবে। জন্মদিনে কবিগুরুকে নিয়ে কিছু কম জানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক একনজরে।
জন্মদিন নিয়ে বিভ্রান্তি
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মেছিলেন ৭ মে ১৮৬১ সালে। তবে বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখটা ছিল ২৫শে বৈশাখ। আর এই বৈশাখ মাসের ২৫ তারিখটিকেই ধরে নিয়ে কবিগুরুর জন্মদিন পালিত হয় যা হল ৯ মে। ফলে রবিঠাকুরের জন্মদিন নিয়ে ইংরেজি ও বাংলা মতে বিভ্রান্তি রয়ে গিয়েছে।
প্রথম নন-ইউরোপীয় হিসাবে নোবেল জয়
কবিগুরু ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পান। গীতাঞ্জলির বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন তিনি। এবং তার জন্য প্রথম ভারতীয় শুধু নয়, প্রথম নন ইউরোপীয় হিসাবে এই পুরস্কার তিনি লাভ করেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত ২০০৪ সালে বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নোবেল পুরস্কার চুরি যায়। যা আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনের শুরু
প্রথাগত শিক্ষাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষাকে ক্লাসরুমের বাইরে নিয়ে উন্মুক্ত করেছিলেন। বীরভূমে বিশ্বভারতী তৈরি করার জন্য নোবেল পুরস্কারের মূল্য ছাড়াও সারা বিশ্ব থেকে অনুদান সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরে ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতীকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হয়।
তিনটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা তা অনেকেই জানেন। তবে তিনি যে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও লিখেছিলেন তা অনেকেই জানেন না। ১৯৩৮ সালে কবির লেখা গান 'নম নম শ্রীলঙ্কা মাতা' তাঁরই এক ছাত্র পরে সিংহলী ভাষায় অনুবাদ করেন। এবং সেটাই ১৯৫১ সালে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়।
গান্ধী ও আইনস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীজিকে মহাত্মা নাম দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই। তাঁদের মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্ব ছিল। তবে নানা ইস্যুতে গান্ধীর বিরোধিতায়ও সরব হয়েছেন কবিগুরু। অন্যদিকে অ্যালবার্ট আইস্টাইনের সঙ্গে ১৯৩০-৩১ সালের মধ্যে চারবার দেখা হয়েছে কবিগুরুর। দুজনে একে অপরের কাজের প্রশংসাই বরাবর করেছেন।
স্বামীজির উত্তরসুরী
স্বামী বিবেকানন্দের পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভাষণ দেন। ১৯২৯ ও ১৯৩৭ সালে এই দু'বার তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন।
ছবি সৌজন্য উইকিপিডিয়া ক্রিয়েটিভ কমন্স