২০২২ সালের মধ্যেই কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করতে পারবে মোদী সরকার?
কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সামগ্রিকভাবে কৃষির উন্নতির জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে তা নিয়ে এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে।
গতবছর ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন ২০২২ সালের মধ্যেই কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার সবরকম প্রয়াস করবে কেন্দ্র সরকার। তবে এই ধরনের উদ্যোগ কতটা সফল হবে তা সময়ই বলবে।
কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সামগ্রিকভাবে কৃষির উন্নতির জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার কী উদ্যোগ নিয়েছে তা নিয়ে এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব।
বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনা, সয়েল হেলথ কার্ড স্কিম এবং ন্যাশনাল এগ্রিকালচার মার্কেট নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
এনডিএ সরকারে প্রথম দুই বছরে খরার কারণে কৃষিক্ষেত্রে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের রোজগার ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়েছে। ঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ভারতের মতো কৃষিপ্রধান দেশে মূলত বৃষ্টির জলের উপরে নির্ভর করেই চাষবাস সম্পন্ন হয়। ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বড় বিপদ ডেকে এনেছে। আর সেজন্যই কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে ও রোজগারকে সুরক্ষিত করতে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনাকে সামনে আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার অগ্রগতি
২০১৬-১৭ বর্ষের পুরোটা পেয়েছে এই যোজনা। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল যত বেশি সম্ভব ফসলকে বীমার আওতায় নিয়ে আসা। এবং দেখা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় গত একবছরে বীমার আওতায় আসার পরিমাণ ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০ শতাংশ হয়েছে। মাত্র একবছরের সময়কাল হিসাব করলে এই অগ্রগতি প্রশংসনীয়। একইসঙ্গে এই খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ৫৫০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার অধীনে ৩.৫ কোটি কৃষকের বীমা করা হয়েছে ন্যাশনাল এগ্রিকালচার ইনস্যুরেন্স স্কিম মেনে। এবং বীমার পরিমাণও ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনা
বর্ষার উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতা ভারতীয় কৃষির সবচেয়ে বড় সমস্যা। ভারতের কৃষিক্ষেত্রের অর্ধেকের বেশি জমি বৃষ্টির জলেই চাষ হয়। যেখানে অবিলম্বে সেচের সুব্যবস্থা থাকা উচিত। আর সেজন্য প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ২০১৫ সালে তা চালু হয়।
এই প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চন যোজনার অগ্রগতি কতটা হয়েছে তা নিয়ে বলচে গেলে দেখা যাবে, মোট ৯৯টি সেচের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২১টি ২০১৭ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সেচের সুব্যবস্থা ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে তা বলা যেতে পারে। ২০০৫-০৬ সালে যেরকম অবস্থা ছিল তার চেয়ে অনেক ভালো অবস্থা ২০১৬-১৭ সালে এসে হয়েছে।
সয়েল হেলথ কার্ড স্কিম
ধীরে ধীরে বহুল ব্যবহারের জন্য জমির উর্বরতা কমছে। ফলে উৎপাদনকে ধরে রাখার জন্য জমিকে রক্ষা করা প্রয়োজন। সরকারকে তাই কৃষকের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। কীভাবে নিজের জমিকে রক্ষা করে সবচেয়ে বেশি ফায়দা তোলা যায় তা কৃষকের জানা প্রয়োজন। আর সেজন্য সয়েল হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জমির মাটি পরীক্ষা
গত দু'বছরে জমির মাটি পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে সরকার অনেকটাই এগিয়েছে। মোট ২.৫৩ কোটি নমুনার মধ্যে ২.৩ কোটি নমুনা ইতিমধ্যে পরীক্ষা করা হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৭.১১ কোটি সয়েল হেলথ কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।
জাতীয় কৃষি বাজার
ভারতীয় কৃষকরা প্রযুক্তির ব্যবহারে একেবারেই পিছিয়ে রয়েছেন। ফলে আবহাওয়ার খবর পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় ভরসা ছিল এপিসিএম-গুলিই। জাতীয় কৃষি বাজার ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকদের সারা দেশ জুড়ে বাজার তৈরি হয়েছে। সারা দেশে যাতে কৃষকের পণ্যতে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করাই কৃষি বাজারের কাজ।
নিম মিশ্রিত ইউরিয়া
নিম মিশ্রিত ইউরিয়া ব্যবহার করিয়ে কৃষিজাত পণ্যের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ইউরিয়া উৎপাদনকারীদের নিম মিশ্রিত ইউরিয়া তৈরি করা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে সরকার। এর ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়ছে ও তা বেশি উন্নতমানেরও হচ্ছে।
সবশেষে বলা যায়, মোদী সরকার কৃষিক্ষেত্রে উন্নতির আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। কৃষকরা যাতে বেশি রোজগার করতে পারেন ও কম ক্ষতির সম্মুখীন হন তা নিশ্চিত করতে বধ্যপরিকর মোদী সরকার। তবে একবার কিছু শুরু করে থেমে থাকলেই হবে না, সেটাকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে। এবং কৃষকদের আয়কেও সুনিশ্চিত করতে হবে। একমাত্র তাহলেই কৃষকদের সুন্দর ভবিষ্যত দিতে সক্ষম হবে মোদী সরকার।
Read in Hindi: 2022 तक दोगुनी होगी किसानों की आय? जानें प्रोगेस रिपोर्ट
Read in Kannada: ಅನ್ನದಾತನ ಕೈಹಿಡಿದಿರುವ ಮಹತ್ವಾಕಾಂಕ್ಷಿ ಯೋಜನೆಗಳು
Read in Malayalam: കർഷകന്റെ ക്ഷേമം ഉറപ്പാക്കാൻ മോദി സർക്കാർ !! വരൾച്ച പ്രതിരോധത്തിനും വിള ഇൻഷൂറൻസിനും അധികം തുക
Read in Tamil: தொடரும் மோடியின் நல திட்டங்கள்- 2022ல் விவசாயிகளின் வருமானம் இரட்டிப்பாகும்?
Read in Telugu: 2022 కల్లా డబుల్ ఆదాయం: మోడీ ప్రభుత్వం సాధించేనా?
Read in Gujarati: શું 2022 સુધીમાં ખેડૂતોની કમાણી બમણી કરી શકશે મોદી સરકાર?