করোনার বিরামে ভ্রমণ পিপাসুদের ডাকবে যে যে সবুজ পাহাড়িয়া গ্রাম
করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমলে রাজ্যের কোন কোন ভ্রমণ স্থানে ভিড় বাড়তে পারে।
বাক্স প্যাঁটরা গুছিয়েও অপেক্ষায় বসে বাঙালি। আর তর সয় না। প্রশ্ন একটাই, আর কতদিন থাকবে করোনা ভাইরাস? এ যে শেষ হয়েও হইছে না শেষ। সবুজ পাহাড়, পাইন-ফারের ঘন বনানী, মেঘের রাজ্যের থেকে আর কী দূরে থাকা যায়! তবু সময় নিরুপায়। অপেক্ষায় যে মোক্ষলাভ, তা এতদিনে বুঝে গিয়েছেন ভ্রমণ-পিপাসুরাও। তাই করোনা-উত্তর কালেই বাড়বে ভ্রমণের ঝোঁক। সেই সূত্রে দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু পার্বত্য এলাকা, যা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিবেশও। তাই আগেভাগে পুজোর ছুটির প্ল্যান করে ফেললে মন্দ হয় না। পরে হাত কামড়িয়ে কোনও লাভ নেই।
সিলেরি গাঁও
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত সিলেরি গাঁও-কে সৌন্দর্য্যের নিরিখে 'নতুন দার্জিলিং' বলে আখ্যা দেওয়া হয়। কালিম্পং থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত পাহাড় এবং জঙ্গলে ঘেরা গ্রামে ধাপ কেটে নেমে এসেছে রঙিন পাহাড়ি ফুলের শোভা। তারই ফাঁকে উঁকি দেয় ঘরবাড়ি। ঘন কুয়াশা ও মেঘের রাজত্ব ঠেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার মুখরিত শোভা সিলেরি গাঁও-এর প্রধান আকর্ষণ।
ইচ্ছে গাঁও
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ইচ্ছে গাঁও-তে পৌঁছতে হয় ট্রেকিং করে। কালিম্পং থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই গ্রামে কাঞ্চনজঙ্ঘার শোভা ছাড়াও পাহাড় কেটে তৈরি করা নগরের সৌন্দর্য্যও পর্যটকদের নজর কাড়ে। রাতে ইচ্ছে গাঁও-এর রূপ হয় অন্যরকম। পাহাড়ের কোলে মায়াবী আবহ তৈরি করে চাঁদের হাসি ও ক্ষুদ্র কুটিরের আলো।
রামধুরা
কালিম্পং জেলার অন্তর্গত এই পার্বত্য এলাকা সমতল থেকে পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। কালিম্পং শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বের এই ছোট, নিরিবিলি, নিস্তব্ধ গ্রাম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা যায়। ঘন জঙ্গল, অন্ধকার, ঝিঝির গানে মুখরিত রামধুরায় থাকার একমাত্র উপায় হোম স্টে। দেবতা রাম এবং ধুরা অর্থাৎ গ্রাম মিলিয়ে এই এলাকার নামকরণ হয়েছে বলে শোনা যায়।
ডেলো পাহাড়
কালিম্পং শহরের দুটি পর্বতমালার মধ্যে একটির নাম ডুরপিন এবং অন্যটি ডেলো। সমুদ্রতল থেকে ৫৫৯০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই স্থান কালিম্পং শহরের সর্বোচ্চ স্থান। যেখান থেকে সুদূর রেলি উপত্যকা, তিস্তা নদী এবং দূর-দূরান্তের গ্রামগুলি স্পষ্ট দেখা যায়। ডেলো পাহাড়ের ওপর তৈরি করা হাউজিং, দুটি জলাশয় এবং বাগানের শোভা এই স্থানের মূল আকর্ষণ।
মিরিক
মিরিক কথাটি এসেছে মির-ইয়ক থেকে এসেছে। এর অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ১৭৬৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মিরিকের দূরত্ব দার্জিলিংয়ের থেকে ৪৯ কিলোমিটার। ঘুম এবং কার্শিয়াং থেকে যথাক্রমে ৪১ ও ৪৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত রাজ্যের অন্যতম সেরা শৈলশহর। টিংলিং ভিউ পয়েন্ট, দেওসি ডারা, মিরিক লেক, রামিতে ডারা এই এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মিরিক লেক থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই স্থানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রয়েছে আটটি চা বাগান। দার্জিলিং জেলার অন্যতম সেরা এই চা বাগান পর্যচকদের অবারিত দ্বার।