করোনার আবহে শীতের ছুটির নির্জন আকর্ষণ হতে পারে অরণ্যসুন্দরী ভালকি
করোনার আবহে শীতের ছুটির নির্জন আকর্ষণ হতে পারে অরণ্যসুন্দরী ভালকি
করোনা ভাইরাসের আবহেও ভ্রমণপিপাসু বাঙালির উড়ু উড়ু মন। উপযুক্ত স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষাবিধি মেনে দলে দলে পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্রে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। ট্রেনের টিকিট অমিল। হু হু করে বিকোচ্ছে বাস এবং বিমানের আসনও। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েও লাভ নেই। আগামী তিন মাসের মধ্যে হোটল বুকিংও কার্যত সরষে ফুল। এমতাবস্থায় গহীন অরণ্যের নির্জনতায় অবকাশ কাটাতে ঢুঁ মারাই যায় কাছেপিঠে সুন্দরী ভালকিমাচানে। শাল-পিয়ালের বন, যমুনাদিঘি এবং ইতিহাস যেখানে কথা বলে।
অবস্থিতি
কলকাতা থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ভালকিমাচানে রয়েছে শাল-পিয়ালের জঙ্গল। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা বনাঞ্চলের অন্তর্গত এই অরণ্য কোনও এক সময় জমিদারদের দাপট ছিল বলে শোনা যায়।
কীভাবে পৌঁছবেন
কলকাতা থেকে সড়ক পথে নিজস্ব গাড়িতে সরাসারি পৌঁছে যাওয়াই যায় ভালকিমাচানে। কিন্তু যাঁরা শিয়ালদহ, হাওড়া কিংবা কলকাতা স্টেশন থেকে রওনা হবেন ট্রেনে, তাঁদের নামতে হবে গুসকরা স্টেশনে। সেখানে থেকে অটো, বাস, কিংবা ভাড়ার গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগবে।
কেন এমন নাম
কিছু মানুষের মতে এই জঙ্গলে বহু আগে নাকি ভাল্লুকের আনাগোনা ছিল। জমিদার আমলে ওয়াচ টাওয়ার বা মাচান থেকে সেই প্রাণীদের দর্শনও মিলত। সেখান থেকেই চলত ভাল্লুক শিকারও। দুইয়ে মিলে এই স্থানের নাম নাকি রাখা হয় ভালকিমাচান। যেখানে এখনও মাঝে মাঝে দর্শন মেলে বন্য প্রাণীর।
কী অনুভব করবেন
১) ভালকি জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে বনবাংলো। যার পাশেই মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছে যমুনাদিঘি। যেখানে চাইলেই বোটিং করতে পারেন পর্যটকরা। বিরাট জলাশয়কে ঘিরে রয়েছে গোলাকৃতি বাগান। যার শোভা বর্ধনে হাজির নানা রঙ এবং গন্ধের ফুল।
২) রাস্তার অন্যধারে জঙ্গলে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বহুকালের ওয়াচ টাওয়ার বা ইঁটের মাচান। যেখানে বসে জমিদাররা বন্যপ্রাণী সংহার করতেন বলে শোনা যায়। আবার অনেকের মতে এই মাচান থেকেই শত্রুদের ওপর নজর রাখতেন রাজার সৈন্যরা। পাঁচটি স্তম্ভের মাঝে খানিকটা জায়গা নিয়ে তৈরি করা লোহার জালে ঢাকা কুয়ো নাকি প্রাচীন সুড়ঙ্গ। যা ২৫ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান রাজবাড়িতে শেষ হয়েছে বলে দাবি। স্বদেশী যুগে এই গোপন পথ বিপ্লবীরাও ব্যবহার করতেন বলে অনেকের মত। সেই স্থান এবং আশেপাশের অরণ্যে গা ছমছমে ভাব অনুভূত হবেই।
৩) খানিকটা এগোলেই দেবদারু, আমলকী, হরিতকি, শাল, সেগুনের বনে নানা রঙের পাখির কলতানে মন হারিয়ে যেতে চায়।
কোথায় থাকবেন
জঙ্গলের মধ্যে তৈরি করা বন বাংলো অরণ্যসুন্দরী কলকাতা থেকে বুকিং করতে পারেন পর্যটকরা।
কলকাতার অদূরে কয়ালের বাগান এক দমকা বাতাস, পাখিদের কলতান
ছবি সৌ :ইউটিউব