
তীব্র গরম থেকে প্রকৃতির কোলে খানিক বিশ্রাম, গ্রীষ্মে পর্যটকদের জন্য সেরা কিছু স্থানের সুলুক সন্ধান
বাইরে কাঠফাটা গরম। রোদের ঝলকানিতে গায়ের চামরা পুড়ে যাওয়ার জোগাড়। আর এই চাঁদিফাটা গ্রীষ্মের দিনে কেউ বাড়ির বাইরেই যেতে চাননা, তাও আবার বেড়াতে যাওয়া! এরকম ধারনা যাঁদের আছে তাঁরা যে সম্পূর্ণ ভুল ভাবছেন তাই নয়, মিসও করছেন দারুন দারুন ঘুরতে যাওয়ার জায়গার গ্রীষ্মকালীন সৌন্দর্যও। এমনটা মত পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু ব্যক্তির। কারণ কথাতেই বলে বাংলির পায়ের তলায় সর্ষে। তাই আর দেরি না করে সোনা রোদ্দুর গায়ে মেখেই পিঠে নেওয়া যাক রুকস্যাক। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য রইল গরমকালে ঘুরতে যাওয়ার সেরা কিছু ডেস্টিনেশনেরসুলুক সন্ধান।

উড়ে চলে মন পাহাড়ে
পাহাড় মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা হিমালয়ের চিরতুষারে ঢাকা শৃঙ্গ আর সেই সঙ্গে সূর্যোদয়। সঙ্গে থাকে চোখ সরাতে না পারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আর বেশ কিছু অ্যাডভেঞ্চার। গ্রীষ্মের মরসুমে, কেবল দেশ নয়, বিদেশী পর্যটকরাও ভারতের উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলের মতো পার্বত্য রাজ্যে বেড়াতে আসেন মনোরম আবহাওয়া উপভোগ করতে। তাই যদি গ্রীষ্মে একটু ঠান্ডা হতে কোনও জায়গায় যাওয়ার কথা ভাবেন তবে এই দুটি রাজ্যে অনায়াসে যেতে পারেন। উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলের অনেক পর্যটন গন্তব্য রয়েছে, যেখানে পর্যটকরা তাদের ছুটি কাটাতে পারেন। উত্তরাখণ্ডের অফবিট কিছু জায়গা হল, মুন্সিয়ারি, খিরসু-পউরি, মুক্তেশ্বর, চোপ্তা, ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার ইত্যাদি। পাহাড় আর প্রকৃতির বুকে কিছুদিন কাটানোর জন্য ঘুরে আসতে পারেন হিমাচলের তোশ আর কিন্নর কৈলাস। এছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীর ঘুরে আসতে পারেন এবং এখানে ঘুরে দেখতে পারেন ভূস্বর্গের সৌন্দর্য।

বীর বিলিং
হিমাচল প্রদেশের বীর বিলিং ভারতের সবচেয়ে দর্শনীয় প্যারাগ্লাইডিং স্পটগুলির মধ্যে একটি। যদি কেউ অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তবে অবশ্যই একবার বীর বিলিং ঘুরে আসা যায়। গ্রীষ্মকালে হিমাচলের এই স্থানে পর্যটক এবং অ্যাডভেঞ্চার উত্সাহীদের ভিড় থাকে। গ্রীষ্মকালে, বহু পর্যটকরা আবহাওয়া উপভোগ করতে এবং তাদের ছুটি কাটাতে বীর বিলিং পরিদর্শন করেন।

মানালি
হিমাচল প্রদেশ পর্যটকদের প্রিয় জায়গা। মানালি থেকে কুল্লু এবং মান্ডি পর্যন্ত অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে, যেখানে প্রচুর পর্যটকরা যান। হিমাচল প্রদেশ শীতের পাশাপাশি গ্রীষ্মেও পর্যটকে ভরপুর থাকে। যদি কেউ এই গ্রীষ্মে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তবে অবশ্যই মানালি যান। কারণ গ্রীষ্মকালে এখানকার আবহাওয়া খুব সুন্দর থাকে।

ধনৌলটি
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি ধনৌলটিও একটি বিখ্যাত হিল স্টেশন। এখানকার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন জয় করবেই। উঁচু পাহাড় আর পাইন ও দেবদারু গাছ শুধু তাদের দিকেই টানবে সকলকে। ক্যাম্পিং এবং অন্যান্য দুঃসাহসিক কার্যকলাপের জন্য ধানৌলটি একটি খুব ভাল জায়গা। এখানেসুরকান্দা দেবী মন্দির, দশাবতার মন্দির এবং দেওগড় ফোর্টের মত স্থান দেখতে পারেন।

গুলমার্গ
গুলমার্গ জম্মু ও কাশ্মীরের একটি অপূর্ব সুন্দর হিল স্টেশন। সৌন্দর্যের কারণে একে পৃথিবীর স্বর্গও বলা হয়। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর প্রায়ই ছুটি কাটাতে গুলমার্গে আসতেন। প্রসঙ্গত, বাদশা জাহাঙ্গীর এখানে ২১ ধরনের ফুলের বাগান করেছিলেন। এখানকার সৌন্দর্য সারা বিশ্বের মানুষকে আকৃষ্ট করে।

নৈনিতাল
দিল্লি থেকে মাত্র ৫ থেকে ৬ ঘন্টার যাত্রায় নৈনিতাল পৌঁছাতে পারবেন। এটি উত্তরাখণ্ডের একটি অত্যন্ত সুন্দর হিল স্টেশন, যেখানে প্রচুর পর্যটকরা আসেন। নৈনিতালে গিয়ে গরমের সব ক্লান্তি মুছে ফেলতে পারেন নিমেষেই। নৈনিতালের নৈনি লেকে বোটিং করা এবং এর পাড়ে বসে কিছু মুহূর্ত সময় কাটালেই তা সারা জীবনের সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে। এখানে অবস্থিত নয়না দেবী মন্দির দেখা যায়। নৈনিতালে ভ্রমণের জন্য অনেক জায়গা আছে, যেমন নয়না পিক, ভিউ পয়েন্ট, হিমালয় দর্শন ইত্যাদি। এখানে ওক গাছের ছায়া ঘেরা শীতল রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছন যায় টিফিন টপে, যেখানে কুমায়ুনী ব্যক্তিদের হাতে তৈরি নানা রকম গরম উপাদেয় খাবার মন ভরাতে বাধ্য।
২.৯ বিলিয়ন মানুষ এখনও করোনার প্রথম ডোজ পাননি, এর জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘাতই কী দায়ী!