নিরিবিলি তাজপুর করোনা পরবর্তী পুজোর সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে, কেন জেনে নিন
নিরিবিলি তাজপুর করোনা পরবর্তী পুজোর সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে, কেন জেনে নিন
করোনা ভাইরাসের দাপটে কাঁপছে দেশ। অতিমারীর তৃতীয় ঢেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারে ভারতে। আতঙ্কে কাঁপছে শহর থেকে জেলা। তবু তারই মধ্যে সাহস করে পুজোর সম্ভাব্য ভ্রমণসূচি তৈরি করে ফেলছেন সফরপ্রিয় বাঙালি। করোনা ভাইরাসের তৃতীয় স্রোত বিদায় নিতে পারে কতদিনে, তার একটা ছক বানিয়ে নিয়েই চলছে ছয়ে ছুটিতে ভ্রমণে লুটির পরিকল্পনা। তবে ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তাই অতিমারীর আবহে দূরে কোথাও না গিয়ে কাছপিঠ থেকে ঘুরে আসাই হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ। তেমনই এক আদর্শ ডেস্টিনেশন হতে পারে এ বঙ্গের সমুদ্রশোভা নিরিবিলি তাজপুর। সচেতন করোনা যেখানে আপনাকে ছুঁয়েও দেখবে না।
অবস্থিতি ও জনসংখ্যা
তাজপুর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। মন্দারমণি ও শঙ্করপুরের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত এই সমুদ্র-গ্রামে এখনও পর্যটকদের আনাগোনা সীমিত। তাই এই স্থানে জনবহুল দীঘার বিকল্প পর্যটনের প্রসার ও সমুদ্র বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মোট ৪.৫৭ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই এলাকার সমুদ্রতল থেকে ৩ থেকে ৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থায়। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এ গ্রামের মোট জনসংখ্যা ৯২১ (২০১১ সালের সুমারি অনুযায়ী)।
কীভাবে পৌঁছবেন
কলকাতা থেকে দীঘা যাওয়ার পথেই পড়ে তাজপুর। মহানগর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই গ্রামে পৌঁছনোর জন্য ট্রেন ধরলে দীঘা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি কিংবা বাস ধরা যায়। এবার কেউ কেউ কাঁথি কিংবা রামনগর স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে চাউলখোলা হয়ে তাজপুরে পৌঁছন। কলকাতা থেকে ৪ ঘণ্টার সড়কপথ বাস কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে অতিক্রম করেন কেউ কেউ। বাসের যাত্রীদের চাউলখোলায় নেমে ভ্যান কিংবা টোটো ধরতে হবে।
সুন্দরী তাজপুর
মন্দারমণি ও শঙ্করপুরের মাঝে সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামের প্রধান আকর্ষণই হল নিরিবিল সৈকত ও বালিয়াড়ি। শহুরে কোলাহল, দূষণকে সরিয়ে রেখে তাজপুর পর্যটকদের কাছে হতে পারে অপার বিশ্রামের স্থান। সূর্যোদর এবং সূর্যাস্তের মাঝে স্বভাবশান্ত ঢেউয়ের আশা-যাওয়ার মৃদু শব্দ মনকে উদাস করে। বর্ষা ঋতু ছাড়া এ স্থানে ভ্রমণের পরিকল্পনা না করা যায় যে কোনও সময়। দীঘার মতোই ওয়াটার স্পোর্টস, প্যারাগ্লাইডিংয়ের সুবিধা রয়েছে তাজপুরেও। প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার সমুদ্র বন্দর গড়ার পরিকল্পনা থাকায় স্থানটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আপাতত সে গ্রামে বিদ্যুতায়নের কাজ শুরু হয়েছে। তাজপুরে একরাত কাটিয়ে দীঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুরেও ঢুঁ মারেন পর্যটকরা।
কোথায় থাকবেন
তাজপুর রিট্রিট, তাজপুর রিসর্ট, বে ভিউ রিসর্ট, লেক ভিউ ভিলেজ রিসর্ট সহ একাধিক হোটেল ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে এই গ্রামে। যেখানে পর্যটকরা নিজেদের মতো করে হাত-পা ছুঁড়ে শান্তিতে থাকতে পারেন। মৎস্য শিকার যদি তাজপুরের মানুষের রোজগারের প্রধান উৎস হয়, তবে হোটেল শিল্প থাকবে সেই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে সেখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানানো হয়েছে।
ছবি সৌ:ইউটিউব