রঙবেরঙের বৌদ্ধ উৎসবে যোগ দিতে হলে বেড়াতে যেতে পারেন দেশের এই বৌদ্ধ-শহরগুলিতে
বৌদ্ধ সংস্কৃতির রঙে সাজানো এই শহরগুলি চোখ জুড়িয়ে দেয়। একনজরে জেনে নেওয়া যাক কোথায় কোথায় রয়েছে দেশের এই বৌদ্ধ শহরগুলি।
রোজকার ঝক্কি ঝঞ্ঝাটের জীবন থেকে দূরে শুধুমাত্র প্রকৃতিকে খোঁজার লক্ষ্য়ে অনেকেই পাড়ি দেন প্রত্যন্ত এলাকায়। সেই প্রকৃতির সঙ্গে যদি ঈশ্বর একাত্ম হয়ে থাকেন ,সেরকম জায়গায় কয়েকদিন ছুটি উপভোগ করতে কে না চাইবেন!
[আরও পড়ুন:ভিড় থেকে অনেক দূরে পুজোয় বেড়াতে যেতে পারেন দেশের এই জায়গাগুলিতে, দেখুন ফোটো ফিচার]
প্রকৃতি যেখানে নিজের সমস্ত নীরবতা দিয়ে নিজেকে সাজিয়েছে , সেখানেই চরম প্রশান্তি। সেখানে রোজের বাস-ট্রামের কোলাহল যেমন নেই, তেমনই পিচ রাস্তার গরম, আর জল-কাদার প্যাচপ্যচানি নেই। বরং সেজায়গায় রয়েছে অন্যমাত্রার এক আত্মতুষ্টি। এরকমই কিছু জায়াগা হল ভারতের কয়েকটি বৌদ্ধ-শহর। বৌদ্ধ সংস্কৃতির রঙে সাজানো এই শহরগুলি চোখ জোড়ানোর সামিল। একনজরে জেনে নেওয়া যাক কোথায় কোথায় রয়েছে দেশের এই বৌদ্ধ শহরগুলি।
হেমিস
লাদাখের হেমিস গ্রামে অবস্থিত হেমিস মনস্ট্রি। যে মনস্ট্রিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটা গোটা গ্রামের শিল্প সংস্কৃতি। এখানে হেমিস উৎসবের সময়ে মানুষের ভিড় জমে। এই উৎসবে বৌদ্ধ তন্ত্রসাধনা সংক্রান্ত বহু বিষয়ে চর্চা হয় বলে শোনা যায়। জুন মাসের শেষের দিকে সাধারণত এই উৎসব পালিত হয়।
বায়লাকুপ্পে
সাধারণত উত্তরভারতের বিভিন্ন জায়গায় বৌদ্ধমঠের সন্ধার মেলে । তবে দক্ষিণভারতের বিভিন্ন শহরেও যে বৌদ্ধস্থপত্যকলা রয়েছে , তা সচরাচর সামনে আসেনা। কর্ণাটকের মাইসোরের বেয়ালাকুপ্পেতে রয়েছেন বহু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ । রয়েছে একটি বৌদ্ধ মঠও। ১৯৬১ সাল থেকে এই শহরে বৌদ্ধদের বসবাস। এই বৌদ্ধরা ৬১ -র যুদ্ধে চিন থেকে বেরিয়ে এখানে এসে বসবাস শুরু করেন।
ধর্মশালা
এদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৌদ্ধ বসবাস করেন ধর্মশালাতে। ১৯৫৯ সালে ধর্মগুরু দালাই লামা এই শহরে তিব্বত থেকে এসে ওঠেন। তাঁরে অনুসরণ করে এখানে বহু তিব্বতি সেই সময় থেকেই এসে রয়েছেন। এই শহর জুড়ে তিব্বতি সংস্কৃতির ছাপ বিদ্যমান। এখানের নামগয়াল মনস্ট্রিতে রয়েছে ৮০, ০০০ বৌদ্ধ পুঁথি। এই এলাকা 'লিটল লাসা' নামেও পরিচিত।
বির
হিমাচল প্রদেশের কাঙ্গড়া উপত্যকায় রয়েছে এই বৌদ্ধ শহর। এশহরে সেভাবে ভিড় বা লোকারণ্য চেখে পড়ে না। এখানের ডিয়ার পার্ক ইন্সিটিউটে মেডিটেশনের ব্যবস্থা করা হয় যা এই শহরে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের বাড়তি পাওনা। এই এলাকার একটি বিখ্যাত মনস্ট্রি রয়েছে। এছাড়াও বহু প্রাচীন বৌদ্ধ স্তূপ ও মন্দির এখানে দেখা যায়।
রেওয়ালসার
গুরু পদ্মসম্ভবাকে দ্বিতীয় বৌদ্ধ বলে মনে করা হয়। কথিত আছে, এই পদ্মসম্ভবাকে যেখানে জীবন্ত দাহ করা হয়, সেখানে থেকেই রেওয়ালসার হৃদটির জন্ম। তারপর এক ১৬ বছর বয়সী ছেলের মধ্যে পদ্মসম্ভবা আবার জন্ম নেন। পরবর্তী কালে তিনি তিব্বত যান ধর্মপ্রচারে। হিমালচল প্রদেশের মান্ডির কাছে অবস্থিত এই শহর রেওয়ালসার, যে শহর গড়ে উঠেছে রেওয়ালসার হৃদকে ঘিরে। নৈসর্গিত দৃশ্যপট এই শহরের মূল আকর্ষণ।
তাওয়াং
অরুণাচল প্রদেশের এই অঞ্চলের নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। তবে এখানের বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও বৌদ্ধ রেওয়াজ রীতি মন কেড়ে নেওয়ার মতো। এখানেই রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ মনস্ট্রি। মনস্ট্রির নাম 'গ্লাদেন নামগে লহতসে', যার অর্থ ' খোলা আকাশের স্বর্গ'।
ট্যাবো
হিমাচলের স্পিতি উপত্যকায় ছোট এলাকা ট্যাবো। ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্য শৈলি দেখতে হলে যেতেই হবে এইখানে। রেকং পিও এবং কাজা এলাকার মাঝে এই অঞ্চল। এলাকায় রয়েছে একটি হাজার বছরের পুরনো মনস্ট্রি। যা বৌদ্ধ স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন। গোটা এলাকার মধ্যেই রয়েছে এক ঐশ্বরিক স্নিগ্ধতা।