মেঘের রাজ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যান, বন্ধু যেখানে রডোডেনড্রন
ফেব্রুয়ারিতে শীতের আমেজ কমতেই আম বাঙালির মন পাহাড়ের গান গেয়ে উঠবেই। ফলে যাওয়ার জায়গা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। মার্চ থেকে এপিলের মধ্যে দার্জিলিং তো বটেই, সিকিমেও হোটেলে ঘর পাওয়া দায়। তবু আশা ছাড়ছেন না অনেকে। ভ্রমণের তরে ব্যাকুলতা ধরে রাখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। সেসব মানুষদের কাছে সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যান দুর্দান্ত ডেস্টিনেশন হতে পারে।

অবস্থিতি
পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে নেপাল, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম সীমান্তে অবস্থিত সিঙ্গালীলা রেঞ্জ। দার্জিলিং জেলার অন্যতম আকর্ষণ এই স্থানের প্রধান মুকুট সান্দাকফু (১১,৯০৯ ফুট) ও ফালুট (১১,৮১১ ফুট)। তাদেরই কোলে রডোডেনড্রনের বন ঘিরে তৈরি হওয়া সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যান পর্যটকদর মূল আকর্ষণ। যা দুটি ভাগে বিভক্ত। দক্ষিণ অংশের (৭,৯০০ ফুট) শুরুটা হয় মানেভঞ্জন দিয়ে। প্রায় ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় ফালুটে শেষ হয় রেঞ্জ। উত্তর অংশটি সংযুক্ত রিমবিকের সঙ্গে।

কীভাবে পৌঁছবেন
ট্রেনে বা বাসে শিলিগুড়ি পৌঁছে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে পৌঁছতে হবে দার্জিলিং। এক রাত কাটিয়ে সেখান থেকেই সিঙ্গালীলা রেঞ্জের দিকে রওনা হন পর্যটকরা। অনেকে আবার শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মানেভঞ্জন পর্যন্ত গাড়ি বুক করেন। সেখান থেকে ট্রেকিং করে সিঙ্গালীলা রেঞ্জের দিকে রওনা হন। কেউ আবার টামলিং গ্রামে (৯,৬০০ ফুট) এক রাত বিশ্রাম নিয়ে ফের ট্রেকিং শুরু করেন। রিমবিক থেকে চড়াই উতরাই পেরিয়েও জাতীয় উদ্যানে পৌঁছন অনেকে।

ইতিহাস
১৯৮৬ সালে সিঙ্গালীলা রেঞ্জের এই বনকে বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯২ সালে এই জঙ্গলকে জাতীয় উদ্যান হিসেব ঘোষণা করা হয়।

কী কী দেখবেন
রডোডেনড্রন বনের বুক চিরে তৈরি সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানে ওক, হেমলক, রূপালি দেবদারু, রুপালি ফার এবং বার্চ জাতীয় গাছের দেখা মেলে। বর্ষার মরসুমে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে উপত্যকা। আর উদ্যানের ভিতরে রেড পান্ডা, সোনালী বিড়াল, বন বিড়াল, কালো ভাল্লুক, হরিণ, জঙ্গলী শুকর, চিতা বাঘের পদধ্বনি পর্যটকদের মুগ্ধ করে। নানা মরসুমে পরিযায়ী পাখিদের আগমনে এই বন যেন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
ছবি সৌ:ইউটিউব
ঘরের কাছে প্রাণী বৈচিত্রের স্বাদ নিতে ঘুরে আসুন বেথুয়াডহরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য