মেঘের অপার পার্বত্য রহস্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মিরিক পর্যটকদের অবারিত দ্বার
মেঘের অপার পার্বত্য রহস্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মিরিক পর্যটকদের অবারিত দ্বার
করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমলেই কোথায় বেড়াতে যাবেন এখনও ঠিকই করতে পারেননি যারা, তাদের জন্য সেরা ঠিকানা হতে পারে মিরিক। মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রহস্যময়তা এই স্থানকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছে। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন এই পার্বত্য শহর সৌন্দর্য্যের প্রেক্ষিতেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা চা বাগান, সবুজ অরন্য এবং মেঘ রাজার স্পর্শ এই স্থানকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসন মিরিককে ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা নেওয়ায় এই স্থানে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে।
মিরিকের অবস্থান
মিরিক কথাটি এসেছে মির-ইয়ক। যার অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ১৭৬৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মিরিকের দূরত্ব দার্জিলিং থেকে ৪৯ কিলোমিটার। ঘুম এবং কার্শিয়াং থেকে যথাক্রমে ৪১ ও ৪৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত রাজ্যের অন্যতম সুন্দর ও রহস্যময় এই শৈলশহর।
যাত্রাপথ
কলকাতা থেকে ট্রেন বা বাসে শিলিগুড়ি কিংবা নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছে যাওয়া কোনও ব্যাপারই নয়। বিমানে চোখের নিমেশে পৌঁছে যাওয়া যায় বাগডোগরা। শিলিগুড়ি থেকে ৫২ এবং বাগডোগরা থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব অবস্থিত মিরিকে পৌঁছতে হয় সড়ক পথে। সঙ্গী হয় বাস কিংবা প্রাইভেট বা ভাড়া করা গাড়ি। পথিমধ্যে পার্বত্য শোভা ও আঁকাবাঁকা পথ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
দেখার কী আছে
১) টিংলিং ভিউ পয়েন্ট : মিরিক শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টিংলিং ভিউ পয়েন্ট থেকে দার্জিলিং জেলার সবকটি চা বাগানের দর্শন মেলে একসঙ্গে। যার শোভা অপরূপ।
২) দেওসি দারা : সমুদ্রতল থেকে ১৭৬৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই স্থান থেকে মিরিক শহর এবং তার আশেপাশের পাহাড়ের শোভার সাক্ষী থাকা যায়।
৩) মিরিক লেক : মিরিক শহরের অন্যতম আকর্ষণ এই লেকের দৈর্ঘ্য প্রায় ১.২৫ কিলোমিটার। ওক, মাপলে গাছ দিয়ে ঘেরা এই জলাশয়ে বোটিং করতে আসেন অনেকে। লেকের অদূরে ঘোড়সওয়ারির ব্যবস্থাও রয়েছে।
৪) রামিতে দারা : এটি একটি সবুজে মোড়া পাহাড়। যার সর্বোচ্চ স্থান থেকে বরফাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য্য অনুভব করা যায়।
৫) মিরিক চা বাগান : মিরিক লেক থেকে দুই কিলোমিটার দূরের এই স্থানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রয়েছে আটটি চা বাগান। দার্জিলিং জেলার অন্যতম সেরা এই চা বাগান পর্যটকদের অবারিত দ্বার।
থাকার জায়গা
আবহাওয়া মনোরম হওয়ায় সব মরসুমেই মিরিকে ঢুঁ মারতে পারেন পর্যটকরা। সে কথা ভেবেই এই পাহাড় ঘেরা শহরে বেশ কয়েকটি হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং হোম স্টে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
ছবি সৌ:ইউটিউব