হার মানাবে কাশ্মীরের টিউলিপ গার্ডেনকেও, ঘুরে আসুন ঘরের কাছে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার
ঘুরে আসুন ঘরের কাছে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার
করোনা আবহে ঘরে বসে মন খারাপ। একবেলা কাটিয়ে আসুন ক্ষীরাইয়ে। মন ভাল করে দেবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ারস। এই নামেই ডাকা হয় ক্ষীরাইকে। পূর্ব মেদিনীপুরের ছোট্ট একটা গ্রাম ক্ষীরাই। কলকাতা থেকে ট্রেনে অথবা সড়ক পথে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া সেখানে। গাড়ি বা বাইক নিয়ে যেকেউ বেরিয়ে আসতে পারেন। খেতের পর খেত জুড়ে কেবল রং বেরঙের ফুল। যেদিকে চোঠ যাবে খালি ফুল দেখতে পাবেন। মুহূর্তে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।
ছোট্ট গ্রাম ক্ষীরাই
ক্ষীরাই যেতে হলে রেল পথে নামতে হবে পাঁশকুড়া স্টেশনের পরের স্টেশনই ক্ষীরাই। সেখান থেকে রিকশা বা ভ্যানে করে পৌঁছে যাওয়া যাবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার খিরাইয়ের। মূলত ক্ষীরাই নদীর নাম থেকেই খিরাই নাম। গ্রামের পাশ িদয়েই বসে গিয়েছে সেই ক্ষীরাই নদী। তাহলে আন্দাজ করতেই পারছেন কেমন হতে পারে সেই গ্রামের সৌন্দর্য। ফুলের উপত্যকা কেন বলা হয় খিরাইকে। একদিকে বয়ে গিয়েছে ক্ষীরাই নদী আর তার পাড় জুড়ে বিঘের পর বিঘে জমিতে চাষ হয়েছে রংবেঙের ফুল। কাশ্মীরের টিউলিপ গার্ডেন বা সিকিমের অর্কিড গার্ডেনের থেকে কোনও অংশে কম নয় ক্ষীরাইয়ের এই ফুলের উপত্যকা।
ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার
গোটা রাজ্যে এই খিরাই এলাকা থেকেই ফুল রপ্তানি হয়ে থাকে। এমনকী দেশ বিদেশেও পাড়ি দেয় এখানকার ফুল। গাঁদা, গোলাপ, আষ্টার, চন্দ্রমল্লিকা, মোরগঝুঁটি কত রকমের ফুল রয়েছে তার নাম শেষ হবে না। দুর্গাপুজোর পর থেকেই এখানে ফুলের চাষ বেশি করে শুরু হয়। গোটা শীতকাল জুড়ে খিরাই ঢেকে থাকে ফুলে। বিশেষ গাঁদা চাষ হয় এখানে। সেই সঙ্গে শীতের মরশুমি ফুল তো রয়েইছে। পিটুনিয়া, স্প্যাঞ্জি, ডালিয়া, স্বোবল, চন্দ্র মল্লিকা আরও কত রকমের ফুল। রঙের বাহারও তেমন। ফুলের গন্ধে প্রজাপতি, মৌমাছিদের আনাগোনাও বেশি। তাই শীতকালে অত্যন্ত মনোরকম হয়ে হয়েছে ক্ষীরাই। উত্তুরে হাওয়া ফুলের উপত্যকায় ঢেউ তুলে যায় রঙের বাহার।
কীভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টা দূরত্বের এই ক্ষীরাই আসা এবং যাওয়া দুটোই সহজ। ভোর থাকতে বেরিয়ে পড়ুন। খড়গপুর লোকাল ধরে নেমে পড়ুন ক্ষীরাই স্টেশন। সেখান থেকে মেঠো পথে ২০ মিনিট হাটলেই পৌঁছে যাবেন ফুলে উপত্যকায়। েযতে যেতে পথের ধারের চায়ের গুমটিতে জিরিয়ে নিন মিনিট দুয়েক। ধোঁয়া ওঠা চায়ে হাতে নিয়ে চুমক দিন মাটির ভাঁড়ে। মন তৃপ্তিতে ভরে যাবে। ফের হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাবেন ফুলের উপত্যকায়। মন ভরিয়ে দেবে সকলের। ঘরের কাছে একেবারে ছোট্ট ট্যুর। খরচও কম। আবার করোনা কালে কোথাও থাকার ঝুঁকি নেই। ফিরে আসুন বাড়িতে। গ্রামবাংলার রূপে মুগ্ধ হয়ে মনটাও অনেকটা ভাল হয়ে যাবে।
মন ভরিয়ে দেবে ক্ষীরাই
মেঠো সরু মাটির রাস্তা বরাবর কিছুদূর যাওয়ার পর পড়বে কসাই নদী। তার দুপাড় জুড়ে রয়েছে ফুলে ফুলে ভরা ক্ষীরাই। প্রজাপতি, ফড়িং, মৌমাছি উঁকি মারছে ইতিউতি। ফুলের গালিচা যেন পেতে দিয়েছে প্রকৃতি এতটাই তার মুগ্ধ করা রূপ। মন ভরে যাবে সকলের। করোনা আবহে কাশ্মীর বা সিকিমের ফুলের বাগান না দেখতে পাওয়ার মন খারাপ কেটে যাবে অনায়াসে।