হাজারদুয়ারিরই মূল আকর্ষণ নয়, দেখে আসুন মুর্শিদাবাদের খুরুরের টেরাকোটার মসজিদ
হাজারদুয়ারিরই মূল আকর্ষণ নয়, দেখে আসুন মুর্শিদাবাদের খুরুরের টেরাকোটার মসজিদ
মুর্শিদাবাদ মানেই হাজারদুয়ারি, নবাব সিরাজউদদৌল্লার প্রাসাদ সেটাই সকলে জানে। কিন্তু এই মুর্শিদাবাদেই লুকিয়ে রয়েছে এক অন্যরকম পর্যটন কেন্দ্র। যার নাম খেরুর। এখানকার মূল আকর্ষণ পোড়ামাটি আর টেরাকোটার কাজ করা মসজিদ। এরকম মসজিদ ভূ-ভারতে নেই বললেই চলে। তাই মুর্শিদাবাদে এলে হাজারদুয়ারি দেখার মাঝে একবার ঢুঁ মারতেই পারেন এই খেরুর বা খেরুল গ্রামে।
খেরুরে টেরাকোটার মসজিদ
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের কাছেই রয়েছে খেরুর বা খেরুল গ্রাম। সেই গ্রামেই দেখা মেলে এই টেরাকোটার মসজিদের। মোঘল যুগের আগেই এই মসজিদ গুলি তৈরি করা হয়েছিল। এখন প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা। তেমন রক্ষনাবেক্ষণ করা হয় না। পর্যটকদেরও তেমন আনাগোনা নেই। সেকারণে ভিড়ও নেই। বেশ ফাঁকাফাঁকায় ঘুরে নেওয়া যা অনেকটা। অনেকেই এদিকে আসেন না। যাঁরা জানেন তাঁরাই কেবল দেখতে যান এই ফেরুরের এই টেরাকোটার মসজিদ।
মসজিদের পরতে পরতে লুকিয়ে ইতিহাস
মুর্শিদাবাদ জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। তা সে হাজার দুয়ারিই হোক বা টেরাকোটার মসজিদই হোক। সেই গ্রামে গেলেই সেখানকার মানুষ শুনিয়ে দেবেন ইতিহাসের পাতায় লুকিয়ে থাকা খুরুরের টেরাকোটার মসজিদের গল্প। সাধারণ মন্দিরেই ঠাকুর দালানেই টেরাকোটার কাজ দেখা যায় বেশি। কারণ টেরাকোটা শিল্পটি তৈরি হয়েছে ঠাকুর দেবতা অথবা ইতিহাসের কোনও কাহিনীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মসজিদে তো ঈশ্বর নিরাকার। কাজেই নানারকম জ্যামিিতক নকশার ধরাদিয়েছে এই খেরুরের টেরাকোটারব মসজিদে।
কী বলছে ইতিহাস
খেরুরের এই টেরাকোটার মসজিদটি তৈরি করিয়েছিলেন সুলতান হুসেন শাহের সেনাপতি খাঁ ময়জ্জম রিফাত খাঁ। সেসময় পাথরে খোদাই করে যে শিল্পীরা কাজ করতেন তাঁদের সম্মান ছিল টেরাকোটার শিল্পীদের তুলনায় বেশি। তাঁরা বেশি পারিশ্রমিকও পেেতন। তাই টেরাকোটা শিল্পীদের সম্মান এবং পারিশ্রমিক বাড়াতে এই মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল। মসজিদের কাছেই রয়েছে একটি উঁচিমিনার। চার থেকে পাঁচটি গোম্বুজ। অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে। এই ভগ্নপ্রায় মসজিদেও টেরাকোটা শিল্পীদের নিপুন কাজ চোখ টানবেই। এই গ্রােমই আবার পাল এবং েসন যুগের পুরাতাত্মিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে।
কীভাবে যাবেন
খেরুর গ্রামে যেতে হলে বহরমপুর হয়ে যেতে হবে। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে সোজা বহরমপুর। তারপর সেখান থেকে খেরুর গ্রামের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। সড়ক পথে গেলে সেখদিঘি বা মনিগ্রাম থেকে টোটোতে করে পৌঁছনো যায় খেরুরে। আর ট্রেনে যেতে হলে মোড়গ্রাম স্টেশনে নেমে আরও ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার যেতে হবে। গ্রামে কোনও থাকার জায়গা নেই থাকতে হলে বহরমপুরেই থাকতে হবে। কাজেই খেরুরে পৌঁছতে হলে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়াই ভাল।
অত্যন্ত সুন্দর হলেও কেন ভারতে এই স্থানগুলিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা জানেন কি?