কলকাতার অদূরে কয়ালের বাগান এক দমকা বাতাস, পাখিদের কলতান
কলকাতার ব্যস্ত জীবনে হাঁপিয়ে যাওয়া মন দু-দণ্ড শান্তি চায়, তখন উইকেন্ডে ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির সেরা ঠিকানা হতে পারে চিন্তামণি কর পাখিরালয়। শহরের অদূরে শাখা-প্রাশাখা মেলে দাঁড়িয়ে থাকা এই সবুজ বনে একদিনের চড়ুইভাতি করতে ভিড় জমান অনেকে। নানা প্রজাতি ও রঙের পাখি, প্রজাপতি, ফার্ন এবং অর্কিডের বন ছেড়ে বেরিয়ে আসতে মন চাইবে না।

অবস্থিতি
কলকাতার অদূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় রয়েছে চিন্তামণি কর পাখিরালয়। যা কয়ালের বাগান নামেই অধিক পরিচিত। এই স্থানের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে নরেন্দ্রপুর রেল স্টেশন। গড়িয়া এবং বাইপাসের থেকেও কয়ালের বাগানের দূরত্ব খুব বেশি নয়। হাওড়া স্টেশন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই পক্ষীনিবাস।

কীভাবে যাবেন
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন ধরে নরেন্দ্রপুর রেল স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে অটো, টোটো কিংবা গাড়িতে পৌঁছে যাওয়া যায় কয়ালের বাগান। হাওড়া থেকে গড়িয়ামুখী বাস ধরে নরেন্দ্রপুর স্ট্যান্ডে নেমে কয়ালের বাগান সংযোগকারী যান পাওয়া যায়।

ইতিহাস
১৯৮২ সালে জঙ্গলটিকে অভয়ারণ্যের মর্যাদা দেয় রাজ্য সরকার। ২০০৫ সালে পক্ষীনিবাসটিকে অধিগ্রহণ করে সরকার। ২০০৪ সাল পর্যন্ত বনটি নরেন্দ্রপুর অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছিল। যে ব্যক্তির জমিতে তৈরি হয়েছে এই মস্ত পাখিরালয়, সেই চিন্তামণি করের স্মৃতিতে স্থানটির নতুন নামকরণ করা হয়।

কী কী দেখবেন
মেটে ফিঙে, এশীয় কোকিল, ভুতুম প্যাঁচা, কালো ফিঙে, পাতি শিকরে, দেশি কানবিক, বামন ফিঙে, গো বক, তিলা মুনিয়া, ছোট বগা, ছোট পানকৌড়ি, সাদা খঞ্জন, সবুজ বাঁশপাতি, পাতিকাক, দাঁড় কাক, খয়েড়ি হাঁড়িচাচা, মাছরাঙা সহ মোট ২০০টি প্রজাতির পাখির বাস এই অভয়ারণ্যে। ডালে ডালে উড়ে বেড়ায় হরতনি, লোপামুদ্রা, হরিনছড়া, হলুদ চিতা, চাঁদনরি, নয়ান সহ প্রায় ২০ প্রজাতির সুদৃশ্য প্রজাপতি। জঙ্গলে রয়েছে নানা প্রজাতির মাকড়সাও। তাই এই স্থানের আকর্ষণ মানুষের কাছে অন্যরকম।
গুরুদেবের শান্তির নীড়ে এক টুকরো বন্যপ্রাণের চারণভূমিতে লুকিয়ে অপরিসীম পরিতৃপ্তি