করোনার সঙ্কটের জের, ভরা মরসুমেও দার্জিলিংয়ে পর্যটন শিল্পে ৩৫০ কোটির ক্ষতির আশঙ্কা
করোনার জেরে লকডাউনে বিপর্যস্ত দার্জিলিংয়ের পর্যটন শিল্প। ইতিমধ্যেই গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের নিরাশ করেছে দার্জিলিং। আসন্ন উৎসবের মরসুমেও কার্যত জনশূন্যই থাকতে চলেছে বাঙালীর অন্যতম পছন্দের এই পর্যটন কেন্দ্র। এমনটাই মনে করছেন সকলে। ফলত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

পর্যটক শূন্য দার্জিলিংয়ে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক হোটেল
আগামী দিনে পাহাড়ে পর্যটকদের সমাগম নিয়ে প্রায় সকলেই আশা হারিয়েছেন। তাই বন্ধ হচ্ছে একের পর এক হোটেল। হিমালয়ান হসপিট্যালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট স্যান্যাল জানিয়েছেন, "মার্চের মধ্যবর্তী সময় থেকে মে মাস পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে প্রতিদিন দার্জিলিংয়ে প্রায় ৬ কোটি টাকার লাভ হয়। সেই লভ্যাংশ পুরোটাই এখন জলে।" আদিত্য বোথরা নামে এক ট্যুর অপারেটর জানান, "মধ্য মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে প্রায় ৩৫% পর্যটক এলেও মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য নভেম্বরের মধ্যে ৪৫% পর্যটক আসেন। এই বছর বর্ষার আগে লভ্যাংশ শূন্য, উৎসবের মরসুমে কি হবে কে জানে!"

অধিকাংশ লভ্যাংশ আসে বিদেশি পর্যটকদের থেকে
মূলত অক্টোবর থেকে ক্রিসমাস পর্যন্ত বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে দার্জিলিং জুড়ে। দার্জিলিংয়ের লভ্যাংশের প্রায় সিংহভাগ আসে এঁদের পকেট থেকে। মোট পর্যটকের প্রায় ১০% অর্থাৎ প্রায় ৫০,০০০ জনই বিদেশি পর্যটক। নেচার বিয়োন্ডের কর্মকর্তা পল্লব ভট্টাচার্য্য জানান, "এনারা আগে থেকেই হোটেল বুকিং করে ফেলেন এবং জুন থেকেই সমস্ত ব্যবস্থা হয়ে যায়। এই বছর সেসবের সিকিভাগও হয়নি।"

আগে থেকে বুক করে রাখা হোটেল ক্যানসেল
ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ রাজ বসু জানান, "প্রায় ৯০% বিদেশি বুকিং ক্যানসেল হয়েছে। দেশীয় পর্যটকদেরও একই অভিমত। ফলত হোটেল চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে।" অতি স্বল্প পরিমাণ পর্যটকের আশায় তাই কোনও হোটেলই খোলা থাকছে না। মাত্র ১০% বিদেশি বুকিংয়ের কারণে হোটেল চালানোর বিশাল খরচ অনেকের কাছেই হাতি পোষার সমান হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মত পর্যটন অধিকর্তাদের।

পর্যটনের হাল ফেরাতে উদ্যোগী রাজ্য
রাজ বসু আরও জানিয়েছেন, "করোনার জেরে যা ক্ষতি হল তা পর্যটন শিল্পে আগামীতে সুদূরপ্রসারী ছাপ ফেলবে। বিদেশে যেসকল সংস্থা ভারতে ভ্রমণের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে, তারাও অন্তত আগামী বছর পর্যন্ত কাজ করার মত অবস্থায় থাকবে না। ভিসা-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হওয়ার ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।" যদিও রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে পুনরায় আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বিক্রি করতে বিজ্ঞাপন! কড়া পদক্ষেপ সরকারের