জানেন কি কোথায় ছিল খনার শ্বশুরবাড়ি, সপ্তাহান্তে ঘুরে আসুন ঘরের কাছেই চন্দ্রকেতুগড় থেকে
জানেন কি কোথায় ছিল খনার শ্বশুরবাড়ি, সপ্তাহান্তে ঘুরে আসুন ঘরের কাছেই চন্দ্রকেতুগড় থেকে
চন্দ্রকেতুগড়। অনেকে জানেন আবার অনেকেই জানেন না। কলকাতার একেরাবেই কাছে রয়েছে এই ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্রটি। শীতের ছুটিতে বাড়ির সকলকে নিয়ে সেই ইতিহাসের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ানোর সুন্দর জায়গা চন্দ্রকেতু গড়। রাজপ্রাসাদ, ঘুমঘর, স্নানপুকুর সবই রয়েছে এখনও। তার ভগ্নাবশেষ পড়ে রয়েছে এই চন্দ্রকেতু গড়ের আনাচে কানাচে।
ঘরের কাছের পর্যটন কেন্দ্র চন্দ্রকেতুগড়
কলকাতা থেকে কয়েকঘণ্টার পথ বেড়াচাঁপা। আর সেখানেই রয়েছে চন্দ্রকেতুগড়। একসময় যাঁর নাম ছিল দেউলিয়া। রাজা চন্দ্রকেতুর রাজধানী। সেই রাজা আর তার রাজ্যপাট না থাকলেও রয়ে গিয়েছে তার ভগ্নাবশেষ। সেই চন্দ্রকেতু গড়ে যেতে হলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। রেল এবং সড়ক উভয় পথেই অত্যন্ত সুগম বেড়াচাঁপা। কলকাতা থেকে বেশি দূরেও নয়। কাজেই সকাল সকাল ব্যাগ গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন। আবার বিকেল বিকেল সন্ধেবেলায় বাড়িও ফিরে আসতে পারবেন।
কী আছে এই চন্দ্রকেতু গড়ে
চন্দ্রকেতুগড় বলে এখন আর কেউ প্রায় চেনে না জায়গাটিকে। সেখানকার বাসিন্দারাই কেবল মনে রেখেছে নামটি। এটি এখন বেড়াচাঁপা নামেই বেশি পরিচিত। কলকাতা থেকে যেতে মাত্র ২ ঘণ্টা সময় লাগে এই চন্দ্রকেতু গড়ে। বাংলার বিখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৯ সালে এসেছিলেন এই চন্দ্রকেতু গড়ে। তিনিই প্রথম এই চন্দ্রকেতুগড়ের ঐতিহাসিক সত্যতা প্রকাশ্যে আনেন। এখানে খনন কার্য চালিয়ে রাজা চন্দ্রকেতুর সময়ের একাধিক প্রত্নতাত্বিক জিনিস পেয়েছিলেন। পাওয়া গিয়েছিল মৌর্য যুগের নিদর্শন। এমনকী কুষাণ, গুপ্ত এবং পাল রাজাদের আমলের নিরর্শনও রয়েছে এই চন্দ্রকেতু গড়।
বরাহ-মিহিরের ঢিবি
এই চন্দ্রকেতু গড়ের কাছেই রয়েছে বরাহ-মিহিরের ঢিবি। রাজা বিক্রমাদিত্যের সভারত্ন ছিলেন বরাহমিহির। জ্যোতির্বিদ বরাহমিহিরের পুত্রবধূ ছিলেন খনা। সেই খনার কাহিনী সকলেরই প্রায় জানা। অব্যর্থ ছিল যার ভবিষ্যৎবানী। যা আজও খনার বচন নামে পরিচিত। চন্দ্রকেতুগড়ের মাটির তৈরি দুর্গের ভেতরেই রয়েছে এই বরাহ মিহিরের ঢিবি। প্রত্নতাত্বিক খনননে তা থেকে বেরও করে আনাছে। তা সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে।
কীভাবে যাবেন
ট্রেনে চন্দ্রকেতু গড় আসা যায়। সময় লাগে মাত্র ২ ঘণ্টা। হাসনাবাদ বা বসিরহাট শাখার যেকোনও লোকাল ট্রেনে চড়ে নামতে হবে হাড়োয়া রোড স্টেশনে। আর গাড়িতে আসতে হলে টাকি রোড ধরে এগোতে হবে। বসিরহাট থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বেড়াচাঁপা মোড়। সেটাই চন্দ্রকেতুগড়। সেখানে অলিতে গলিতে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। ঘরের কাছের ইতিহাসকে জেনে নেওয়া শীতের ছুটিতে মন্দ লাগবে না।