আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে এসেছেন বাড়ির এই সদস্য, প্রতি সপ্তাহে তাঁর নতুন রূপ দেখা যাচ্ছে বিগ বসে
আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে এসেছেন বাড়ির এই সদস্য, প্রতি সপ্তাহে তাঁর নতুন রূপ দেখা যাচ্ছে বিগ বসে
বিগ বস-১৪ শুরু হয়েছে প্রায় ছ'সপ্তাহ হয়ে গেল। ঘরের মধ্যে ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি থেকে শুরু করে নমিনেশন-এভিকশন সবকিছু হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কমবেশি সব দর্শকরাই তাঁদের প্রিয় বাড়ির সদস্য বানিয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে, 'উইকেন্ড কা ওয়ার'-এ সলমন খানের রায় শোনার পর অনেক দর্শকই তাঁদের রায় বদলে নিয়েছেন। কিন্তু এই শোয়ের মধ্যে এমন অনেক ঘটনাই ঘটছে যেটা দেখে মনে হচ্ছে সবকিছু আগে থেকে পূর্ব-পরিকল্পিত। ৬ সপ্তাহে এমন ৬টি ঘটনা দেখে অন্তত এমনটাই মনে হচ্ছে যে বিগ বসের শোয়ে যা চলছে তা প্রথম থেকেই ভাবনা-চিন্তা করে করা হয়েছে। তবে এটা শোয়ের কথা নয়, বরং এই শোয়ে থাকা এক প্রতিযোগীর কথা বলা হচ্ছে। প্রতিযোগী তথা বাড়ির সদস্যের নাম রাহুল বৈদ্য।
প্রথম হপ্তা: শান্ত ছেলে, জরুরি বিষয়ে কথা বলেন
আপনারা হয়ত বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু রাহুল বৈদ্য যেভাবে ঘরের মধ্যে খেলছেন, আশঙ্কা হচ্ছে যে তিনি আগে থেকে সবকিছু পরিকল্পনা করে এসেছেন। নয়ত রাহুল নিজে একজন মাস্টারমাইন্ড আর নয়ত তাঁর জনসংযোগে কাজ করা কর্মীরা তাঁকে শিখিয়ে পড়িয়ে বিগ বসে পাঠিয়েছেন। প্রথম সপ্তাহের কথা যদি ধরি তবে দেখা যাবে রাহুল বাড়ির ভেতর প্রবেশ করেন। যেখান কিছু সদস্য দারুণ সক্রিয় ছিলেন, সেখানে রাহুলকে দেখা যায় কম কথা বলতে, ঝগড়ার মধ্যে বেশি যুক্ত না হতে। তবে নিজের ওপর প্রশ্ন ওঠার পরই রাহুলকে তর্ক করতে দেখা যায়। অর্থাৎ বাড়ির এমন এক সদস্য যে কেবল ঘরের জরুরি বিষয়ের ওপরই কথা বলেন। অন্য কারোর বিষয়ে নাক গলান না। যেই কারণে তিনি সক্রিয় নন এমন সদস্যদের মধ্যে তিন নম্বরে চলে আসেন। কিন্তু এতে রাহুলের সুবিধা হল এই যে তাঁর ভাবমূর্তি গম্ভীর ও বোঝদার তৈরি হল।
দ্বিতীয় সপ্তাহ: শান্ত ছেলে মনোরঞ্জন দিতে লাগল দর্শকদের
শুরু হল বিগ বসের বাড়িতে দ্বিতীয় সপ্তাহ। গার্ডেনের টাস্কে রাহুল দর্শকদের দারুণ মনোরঞ্জন করেন। মানে ঘরের কোণে চুপচাপ বসে থাকা রাহুল হঠাৎই দারুণ উত্তেজিত হয়ে টাস্কে গউহর খান ও হিনার মন জয় করতে শুরু করেন। এরপর তিনি এই একই টাস্কে মেয়েদের পোশাক পরে তো কখনও বেগুনি রঙের টাওয়াল জড়িয়ে এসে টাস্ক জেতার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেন। রাহুল সব করেছেন টাস্ক জেতার জন্য। অর্থাৎ শান্ত, কম কথা বলা রাহুল এখন দর্শকদের মনোরঞ্জন করছেন চুটিয়ে। বন্ধুত্বের বিষয়েও তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন, কিন্তু কেউই রাহুলের ওপর সম্পূর্ণ ভরসা করতে পারেননি। এমনকী এই কথা স্বীকার করেছেন খোদ রাহুলের বন্ধু নিশান্ত মালকানি, জান কুমার শানু ও নিক্কি তাম্বোলি।
তৃতীয় সপ্তাহ: রাহুলের মুখে স্বজন পোষণ অভিযোগ
তৃতীয় সপ্তাহ আসতে আসতে রাহুলকে নিয়ে সকলের পারদ আকাশচুম্বী হয়ে গিয়েছিল। সলমন খানের বকা খাওয়ার পর রাহুল বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে ঝগড়া শুরু দেন, যা দেখে মনে হয় যে এটা তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। কিন্তু চালাক রাহুল তুরুপের তাস নিয়ে বসে রয়েছেন। তিনি নমিনেশনের সময় স্বজন পোষণের অভিযোগ তোলেন। যার কোনও প্রয়োজন ছিল না। তাও আবার জান কুমারকে নিয়ে, যাঁকে তিনি গত দু'সপ্তাহ ধরে নিজের বন্ধু ভাবছিলেন। এই কারণে ঘরের মধ্যে তাঁকে নিয়ে নিন্দা শুরু হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল স্টার হয়ে যান। সলমন খান এর জন্য রাহুলের সমালোচনা করলেও ভোটের দিক দিয়ে তিনি দর্শকদের বিপুল ভোটে জয়ী হন। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল হিরো হয়ে যান এবং সকলেই বলেন যে রাহুলের দম আছে।
চতুর্থ সপ্তাহ: মারাঠি ভাষা ও জ্যাসমিনের রাগ
স্বজন পোষণ মামলার কারণে রাহুল বৈদ্য দর্শকদের হারিয়ে যাওয়া ভোট ফের পেতে সফল হন। এবার চাই সম্মান। এখানে দু'টো বিষয় হল। যদিও এই দু'টো কথাই রাহুল বলেননি, কিন্তু এতে লাভ তাঁরই হল। মারাঠি ভাষা নিয়ে জান কুমার শানু আপত্তিকর মন্তব্য করেন। জন এমন কিছু বলেন যা মারাঠি সম্প্রদায়কে আঘাত করে। যার ফলে জানের সঙ্গে মারাঠি ভাষায় কথা বলা রাহুলের সুবিধা হল। মারাঠি ভোটও রাহল পেতে শুরু করলেন। সেরকমই জ্যাসমিন ছোট্ট একটি কথাকে বড় করে ঝগড়া শুরু করলেন রাহুলের সঙ্গে। এখানেও রাহুল সমর্থন পেলেন দর্শকদের, কারণ জ্যাসমিন অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলেন।
পঞ্চম সপ্তাহ: এখন চাই পুরো সম্মান
সম্মান পাওয়ার জন্য মরিয়া রাহুল পঞ্চম সপ্তাহে এসে দারুণ সুবিধা পেলেন। তবে এটি অপ্রত্যাশিত ছিল। অক্সিজেন মাস্কের টাস্কে নিক্কি মাস্ক পেটের ভেতর রেখে দিয়েছিলেন। রাহুল যদি চাইতেন তবে খেলায় নিক্কির পেট থেকে তা বের করতে পারতেন। কিন্তু রাহুল তা করেননি। ফল এটা হল যে সলমন খান নিজে রাহুলে প্রশংসা করেন। এর অর্থ চতুর্থ ও পঞ্চম সপ্তাহে রাহুল পুরো সম্মান পেয়ে যান।
ষষ্ঠ সপ্তাহ: মন জেতার জন্য তৈরি রাহুল
বিগ বসে টিকে থাকার জন্য এবার রাহুল নিজের চালে বেগমকে এগিয়ে দিলেন। বিগ বসের ইতিহাসে রোম্যান্টিকদিক দারুণ কাজ করে, তার সাক্ষী আছেন দর্শকরা। ঘরে ঢোকার পরই রাহুল জানিয়ে ছিলেন যে তাঁর কোনও প্রেমিকা নেই। রাহুল নিক্কি ও জ্যাসমিনের সঙ্গে নিজের রসায়ন তৈরির চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেখানে কোনও ফল পাননি। এরকম পরিস্থিতিতে ষষ্ঠ সপ্তাহে এসে রাহুল তাঁর মোড়ক থেকে নিজের প্রেমিকাকে বের করলেন এবং বাড়ির সব সদস্যদের সামনে টেলি অভিনেত্রী দিশা পরমারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। আর এতেই বাজিমাত করে বেড়িয়ে গেলেন বুদ্ধিমান রাহুল।