বায়ু দূষণের বাড়বাড়ন্তে দুর্বল হচ্ছে শুক্রাণু! রিপোর্টে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
বায়ু দূষণের বাড়বাড়ন্তে দুর্বল হচ্ছে শুক্রাণু! রিপোর্টে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
বর্তমান পৃথিবীতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রযুক্তির উন্নয়ন। কিন্তু এই লাগাতার যান্ত্রিক জিনিসপত্রের বিকাশ আর তার ফলে জীবন যাত্রার মান যত উন্নত হচ্ছে, বায়ু দূষণের মান ততটাই বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এই মুহূর্তে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের কাছে বায়ু দূষণ রীতিমত মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে টেকনোলজির উন্নতির ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান যেমন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে, তেমনই এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ছে পৃথিবীর জলবায়ুর ওপর। আর এবার এই বায়ু দূষণের ফলে কী কী মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে মানব শরীরের, সেই সম্পর্কে উঠে এল নয়া তথ্য যা ইতিমধ্যেই কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের।
বায়ু দূষণের কু-প্রভাব
ভারতের মতো গোটা বিশ্ব এই মুহূর্তে বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। বায়ুদূষণের অনেক কুপ্রভাব রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম শুক্রাণুর ওপর কু-প্রভাব। চিনে একটি সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, বীর্যের গুণগত মানের উপর ক্রমাগত প্রভাব ফেলছে বায়ু দূষণ। বায়ু দূষণের বাড়বাড়ন্তের ফলে শুক্রাণুর সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
ক্ষমতা হারাচ্ছে শুক্রাণু
চিনে ৩০ হাজারেরও বেশি পুরুষের শুক্রাণুর বিশ্লেষণ করে গবেষকরা সম্প্রতি একটি উপসংহারে পৌঁছেছেন। সেটি হল, বায়ু দূষণ কম হলে পুরুষের ফার্টিলিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি অ্যাথেনোজোস্পার্মিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
অ্যাথেনোজোস্পার্মিয়া হল চিকিৎসা বিজ্ঞানে পুরুষদের ক্ষমতা হ্রাসের একটি রোগ। এতে মূলত বীর্যের শুক্রাণুর গতি এবাং নিষেক করার ক্ষমতা কমে যায়। গবেষকদের মতে, এই জাতীয় গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ফার্টিলিটির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যে অনেক বিষয় অস্পষ্ট থাকে।
'হু'এর অনুমান
একটি নেটওয়ার্ক জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এই গবেষণায় বলা হয়েছে, শুক্রাণুর গতিশীলতা হ্রাস পেয়েছে।পাশাপাশি অ্যাথেনোজোস্পার্মিয়ার ঝুঁকি বেড়েছে গোটা বিশ্বে বন্ধ্যাত্ব একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্বে প্রায় ১০ শতাংশ দম্পতির মধ্যে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা 'হু'এর অনুমান, বন্ধ্যাত্বের পেছনে প্রধানত দুর্বল বীর্যের গুণমান ৫০ শতাংশ দায়ী।
বাড়ছে বন্ধ্যাত্বর ঝুঁকি
জানা গিয়েছে, চিনের গবেষকরা ৩৩,৮৭৬ জন চিনা পুরুষের বীর্যের নমুনার ওপর গবেষণা করেছেন। যাদের স্ত্রীয়েরা ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সাংহাইয়ের ১৩টি হাসপাতলে প্রজননের ক্ষেত্রে নানা রকম পর্যবেক্ষণের বিষয়ে সাহায্য করেছেন। এই গবেষণায় যারা যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাঁরা চিনের বিভিন্ন প্রান্তের ৩৪০টি শহরে বসবাস করেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, উন্নত পিএম ২.৫ বা পিএম১০ এক্সপোজার মাত্রার সঙ্গে অ্যাথেনোজোস্পার্মিয়ার উল্লেখযোগ্যভাবে ঝুঁকি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য, পরিস্থিতিতে থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আরো উন্নততর গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন শুক্রাণু বিষয়ক গবেষকরা। তবে তাঁদের পেশ করা রিপোর্ট অবশ্য বলেছে যে জৈবিক প্রক্রিয়া যার দ্বারা পিএম এক্সপোজার শুক্রাণুর গতিশীলতার বিকাশকে ব্যাহত করতে পারে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।