বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অনন্য প্রোটিন আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের, নামকরণ মাতৃত্বের দেবীর নামানুসারে
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অনন্য প্রোটিন আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের, নামকরণ মাতৃত্বের দেবীর নামানুসারে
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অনন্য প্রোটিন আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা। সেই প্রোটিনের নাম নামকরণ হল মাতৃত্বের দেবীর নামানুসারে। বিজ্ঞানীরা প্রথমবার এই জাতীয় প্রোটিন আবিষ্কার করেছেন, যা শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর আনুগত্য ও ফিউশনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যা বন্ধ্যাত্বের নির্ণয় ও চিকিৎসায় অভূতপূর্ব সহায়ক বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অনন্য প্রোটিনের নামকরণ গ্রিক মাতৃত্বের দেবীর নামে
বিজ্ঞানীরা এই অনন্য প্রোটিনের নামকরণ করেছেন গ্রিক মাতৃত্বের দেবীর নামে। প্রোটিনটির নাম দেওয়া হয়েছে 'মাইয়া'। চেক অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স ইনস্টিটিউট অফ বায়োটেকনোলজি থেকে ক্যাটিনা কমরোসকোভার নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক দল দ্বারা পরিচালিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানব ওসাইট প্রোটিনের উৎপাদনের জন্য কোষ সংস্কৃতির বিকাশকেও তুলে ধরে।
শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সংমিশ্রণে জীবন সৃষ্টি করে প্রোটিন
সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে যে, গেমেট ফিউশন স্তন্যপায়ী নিষিক্তকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই গবেষক দল মানুষের ডিমে একটি নতুন রিসেপ্টর জাতীয় প্রোটিন আবিষ্কার করেছে, যা মূল শুক্রাণু প্রোটিনের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। এর ফলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সংমিশ্রণে জীবন সৃষ্টির দিকে পরিচালিত করে।
প্রায় দুই দশক আগে এই গবেষণা শুরু হয়েছিল
ইংল্যান্ডের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যারি মুরের ল্যাবে প্রায় দুই দশক আগে এই গবেষণা শুরু হয়েছিল। প্রায় ২০ বছর গবেষণা করে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। ইংল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান-সহ সারা বিশ্ব থেকে ১৭টি বিভিন্ন অনুষঙ্গের সহায়তায় এই গবেষক দল ওয়ান বিড ওয়ান কম্পাউন্ড অ্যাস পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল। কমরোসকোভা ব্যাখ্যা করেন, আমরা শত সহস্র বিভিন্ন পুঁতি তৈরি করেছি। যার প্রতিটির পৃষ্ঠে প্রোটিনের মতো একটা অংশ রয়েছে। আমরা এই পুঁতিগুলিকে মানুষের শুক্রাণু দিয়ে ইনকিউব করেছি। এবং একে অপরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াকে বিচ্ছিন্ন করেছি। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা ফিউশন শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
মানুষের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু ব্যবহার করতে ২ বছর
প্রোটিন শুধুমাত্র মানুষের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে বলে গবেষণার জন্য প্রথমে অনুমোদন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল দলটি। গবেষণার জন্য মানুষের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু ব্যবহার করতে দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে বলে জানান গবেষকরা। প্রধান গবেষক বলেন, আমরা এর জন্য বিশেষ কোষ সংস্কৃতি তৈরি করেছি, যা ডিমের নকল। এই কোষগুলি তখন এমন প্রোটিন উৎপাদন করতে সক্ষম ছিল, যা সাধারণত মানুষের ডিমের পৃষ্ঠে পাওয়া যায়।
মানব জীবনে এই নতুন আবিষ্কারের বিশেষ গুরুত্ব
গবেষকরা জানান, তারা মানব ডিমের উপর মাইক্রোভিলি দেখতে সক্ষম হয়েছিল, যা তারা আবিষ্কার করা প্রোটিনের অন্তর্গত সংকেত দ্বারা আচ্ছাদিত। তাঁরা আশাবাদী যে প্রোটিনের আবিষ্কার বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নতিসাধন করবে। ভবিষ্যতের গর্ভনিরোধক অবস্থাকে বিকাশের দিকে পরিচালিত করবে। মানব জীবনে এই নতুন আবিষ্কার বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে।
বরফের চাঁই গলছে, মারা যাচ্ছে প্রবাল! জলবায়ু পরিবর্তনে সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা