২৩শে শুক্রে যাবে নাসা, তিনটি মিশনে পৃথিবীর যমজ গ্রহে পাড়ি দিতে যুক্ত হচ্ছে এসাও
চাঁদ ও মঙ্গলের পর পৃথিবীর সবথেকে কাছের গ্রহ শুক্র গ্রহে অভিযান শুরু করতে চলেছে নাসা। শুক্রে কখনও জল ছিল কি না, তাও নির্ধারণ করবে এই মহাকাশযান। তারপর এসার এনভিশন মিশন রয়েছে।
এতদিন চাঁদ ও মঙ্গল নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বেশি ভেবেছেন। কিন্তু পৃথিবীর সবথেকে কাছের গ্রহ শুক্রকে নিয়ে সেভাবে ভাবেনি কোনও গবেষণা সংস্থা। এবার শুক্র গ্রহেও অভিযান শুরু করতে চলেছে নাসা। পর পর তিনটি শুক্র মিশনের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। এই অভিযানে নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এসাও।
জ্যোতর্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি শুক্র নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসার বিজ্ঞানীরা শুক্রে তিনটি নতুন মিশন পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাঁরা জানতে চান, পৃথিবীর সদৃশ এই গ্রহটি কীভাবে কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। কী করে নিঃশেষ হয়ে গিলে জল, হয়ে উঠল একটি অগ্নিপিণ্ড। আগ্নেয়গিরিতে ভরে গেল গোটা গ্রহ।
শুক্রে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পুরু কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের আবরণ রয়েছে বায়ুমণ্ডলে। এছাড়া সালফিউরিক অ্যাসিড সমৃ্দ্ধ মেঘ রয়েছে। সৌরমণ্ডলের সবথেকে উষ্ণতম গ্রহে সীসা গলে যায়। সেখানে কী করে অভিযান চালাবে নাসা ও এসা, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।
নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানান, শুক্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৯০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আগামী এক দশকে শুক্র গ্রহে অন্তত তিনটি মিশনে নামছেন তাঁরা। নাসার দ্য ভিঞ্চি যাচ্ছে ভেনাস ইনভেস্টিগেশনে। এটিই প্রথম মহাকাশযান যা শুক্র গ্রহের আকাশে উড়বে।
নাসার এই মহাকাশযান শুক্র মিশনে টেলি যোগাযোগ হাব হিসেবে কাজ করবে। তার পাশাপাশি শুক্র গ্রহের মেঘ এবং ভূখণ্ড সম্পর্কে ডেটা ক্যাপচার করবে। আর দ্বিতীয় মিশনটি হল একটি ডিসেন্ট প্রোব। এটি শুক্র ঘন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে নেমে আসবে। এই মিশনে বিপজ্জনক পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ডেটা সংগ্রহ করবে।
নাসা ও এসা ভেরিটাস নামে আরও একটি মিশন হবে শুক্রে। ১৯৯০-এর দশকের পর শুক্র গ্রহ পরিদর্শনকারী প্রথম নাসার অরবিটার হয়ে উঠবে এই ভেরিটাস। ভেরিটাস মহাকাশযানটি শুক্র এবং তার ইতিহাসের একটি বড় ছবি তৈরি করবে। সেইসঙ্গে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে শুক্রের আগ্নেয়গিরি সম্পর্কে জানতে।
শুক্রে কখনও জল ছিল কি না, তাও নির্ধারণ করবে এই মহাকাশযান। তারপর এসার এনভিশন মিশন রয়েছে। নাসার সহয়োগিতায় সেই মিশনটি হবে ২০৩০-এর দশকে। এই এনভিশন মিশন জানার চেষ্টা করবে কেন পৃথিবীর যমজ গ্রহ হয়ে শুক্রের আবহাওয়া ও প্রকৃতির এত পার্থক্য। বিশেষ এই অভিযানে শুক্রের প্রতিকূল বায়ুমণ্ডল এবং অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র নিয়ে পর্যবেক্ষণ চালাবে নাসা ও এসা।