মঙ্গলগ্রহে পাতলা বায়ুমণ্ডলের জন্য উল্কাপাতের সম্ভাবনা পৃথিবীর দ্বিগুন, জানাল নাসা
মঙ্গলগ্রহে পাতলা বায়ুমণ্ডলের জন্য উল্কাপাতের সম্ভাবনা পৃথিবীর দ্বিগুন, জানাল নাসা
নাসা মঙ্গলগ্রহ নিয়ে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। যার জেরে পৃথিবীর থেকে মঙ্গলগ্রহের পার্থক্যটা ঠিক কোথায়, সেই বিষয়ে একা ধারণা পাওয়া যাবে। নাসার তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত ক্ষীণ। সৌর জগতের গ্রহাণু বেল্টের একদম কাছে থাকার কারণে অনেকটাই ঝুঁকিতে রয়েছে মঙ্গলগ্রহ। যেকোনও মুহূর্তে গ্রহাণু দ্বারা আঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহের মধ্যে অনেক পার্থক্য। কিন্তু এটি দুটি প্রতিবেশী গ্রহের বৈশিষ্ট্যকে আলাদা করে দিচ্ছে।
নাসার বিজ্ঞানীরা বর্তমানে রোবোটিক ইনসাইট ল্যান্ডারের সাহায্যে এই মঙ্গলগ্রহের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বা ধারণা পাচ্ছেন। সোমবার নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কীভাবে ইনসাইট চারটি উল্কাপিণ্ডের প্রভাব থেকে সিসমিক এবং অ্যাকোস্টিক তরঙ্গ শনাক্ত করতে তাঁরা সম্ভব হয়েছেন।
এছাড়াও মঙ্গলগ্রহে একাধিক বড় গর্ত বা খাদ পাওয়া গিয়েছে। নাসার বিজ্ঞানীরা সেই বিষয়ে গবেষণা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। গবেষকরা গর্তের অবস্থানগুলি নিশ্চিত করতে মহাকাশে নাসার মার্স রিকনেসেন্স অরবিটার থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ইনসাইট মিশনের প্রধান গবেষক তথা নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গ্রহের ভূ-পদার্থবিদ ব্রুস ব্যানার্ড বলেছেন, মঙ্গল ও অন্যান্য গ্রহের ভূমিকম্পের পরিমাপের জন্য আমরা একটি সিসমোমিটার ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছি।
নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের লেখক ব্রাউন বলেন, মঙ্গলগ্রহের গর্তগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সিসমিক সিগন্যালটি ব্যবহার করতে পারি। প্রথমে আমরা পরিচিত একটি উৎসের ধরণ, আকার, অবস্থান বুঝতে সিসমিক সিগন্যালটি ব্যবহার করতে পারি। সেখান থেকে সিসমিক সিগন্যালের ব্যবহার সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারি। এরপরে সেই সিসমিক সিগন্যালটি আমরা চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি।
গবেষকরা মনে করছেন, ২০১৮ সালে গবেষণায় যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সিসমিক আবিষ্কারের পর তা বিস্তারিত তথ্য গবেষণায় পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইনসাইট মিশনের তিনটি দিক রয়েছে। সিসমিক ইনভেস্টিগেশন, জিওডেসি ও হিট ট্রান্সপোর্ট। ২০১৮ সালে এলিসিয়াম প্লানিটিয়া মঙ্গলগ্রহে বিষুব রেখার ঠিক উত্তরে একটি বিস্তীর্ণ এবং অপেক্ষাকৃত সমতল সমভূমিতে অবতরণ করেছিল।
এই প্রসঙ্গে বলেছেন তুলুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএসএই-সুপাইরো ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস-এর গ্রহ বিজ্ঞানী এবং গবেষণার প্রধান লেখক রাফেল গার্সিয়া বলেছেন, চাঁদে ভবিষ্যতের উল্কার প্রভাব বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইনসাইট মিশনের অধীনে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলগ্রহে হালকা উল্কাপাতের ঘটনার সম্ভাবনা পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুন। পৃথিবীর ঘন বায়ুমণ্ডল পৃথিবীকে রক্ষা করে। কিন্তু মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল পাতলা হওয়ার কারণে এই সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
বৃহস্পতির উত্তর মেরুতে বইছে শক্তিশালী ঝড়, নাসার জুনো মিশনে অবাক করা ছবি