প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কি দূরত্ব তৈরি হয়েছে তৃণমূলের! রাজ্য রাজনীতিতে চরম জল্পনা
প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কি দূরত্ব তৈরি হয়েছে তৃণমূলের! রাজ্য রাজনীতিতে চরম জল্পনা
একুশের বিধানসভা নির্বাচন মেটার পর প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের হয়ে জাতীয় ক্ষেত্রে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদী বিরোধী প্রদান মুখ করে তুলতে তিনি বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠেন। কিন্তু তারপরই হঠাৎ তাঁকে দেখা যায় কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে। যদিও কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর পাকাপাকি গাঁটছড়া বাঁধা হয়নি, কিন্তু তৃণমূলে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না তারপর থেকে। তাতেই জল্পনা বেড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
তৃণমূলে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না পিকেকে
বর্তমানে তৃণমূল যখন ঘরোতর সমস্যায় তখন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর নিষ্ক্রিয়। তাঁকে দলের হয়ে কোনও ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে না। এমনকী তৃণমূল নিয়ে গত তিনমাসে তাঁকে সে অর্থে কোনও মন্তব্য করতেও দেখা যায়নি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে পড়েছে প্রশান্ত কিশোরের হল কী! তিনি কি তবে সংগোপনে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে দিলেন। তৃণমূলের রাজ্যস্তরেও তিনি নেই, আর জাতীয়স্তরেও তাঁকে কোনও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না।
নীতীশে প্রতিক্রিয়া, তৃণমূলে নিশ্চুপ কেন প্রশান্ত কিশোর
সম্প্রতি তিনি বিহারের পালাবদল নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। নীতীশ কুমারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বাংলা নিয়ে বা তৃণমূল নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তাতেই প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়েছে। কংগ্রেসে 'আবেদন' বানচাল হয়েছে, তৃণমূলেও সক্রিয় নন, তাহলে কোন ভূমিকায় প্রশান্ত কিশোর, সেটাও এক বিরাট প্রশ্ন ভারতীয় রাজনীতিতে।
২০২৬ পর্যন্ত চুক্তি, কিন্তু তৃণমূলে সাড়া নেই পিকের
প্রশান্ত কিশোর সম্প্রতি তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির হয়ে ভোট কৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। খাতায়-কলমে এখনও তিনি তৃণমূলেরও ভোট কৌশলী। ২০২৬ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি তৃণমূলের। কিন্তু একুশ-পরবর্তী কোনও নির্বাচনেই তাঁকে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি তৃণমূলের হয়ে কোনও কর্মসূচি রূপায়ণেও। কিংবা বর্তমানে যে দুর্নীতির জাল বিছনো হয়েছে, তা কী করে কাটিয়ে উঠবে তৃণমূল, তারও কোনও রূপরেখা দেননি তিনি।
২০১৯-এর পরিত্রাতা, ২০২২-এ কেন দূরে
২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফলাফল করতে না পেরে যখন মুষড়ে পড়েছিল তৃণমূল, তখনই আবির্ভাব হয়েছিল প্রশান্ত কিশোরের। তাঁর নির্দেশিত পথে এগিয়েই সাফল্য পায় তৃণমূল। তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত 'দিদিকে বলো', 'বাংলার গর্ব মমতা'-সহ নানা কর্মসূচি আলোড়ন ফেলে দেয় বাংলায়। তারপর 'বাংলার যুবশক্তি'ও জনপ্রিয় হয়। সরকারের পক্ষেও তিনি 'দুয়ারে সরকার', 'পাড়ায় পাড়ায় সমাধান'-এর মতো একাধিক প্রকল্পে বাজিমাত করেন।
প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের
তবে হালে 'এক ডাকে অভিষেক' নামে যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, সেখানে প্রশান্ত কিশোরের কোনও অবদান আছে কি না, তা পরিষ্ফুট নয়। একইভাবে 'দিদিকে বলো-২' নিয়েও প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকায় প্রশ্ন থাকছে। মোট কথা, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব তৈরি হয়েছে তৃণমূলের। তা যতই প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেস-সখ্যতা পর্বে মমতা দাবি করেন, তিনি তৃণমূলের ভোট কৌশলীই থাকছেন।
'মুখ্যমন্ত্রী’ নীতীশ কুমারের প্রতি 'সাধারণ নাগরিক’ প্রশান্ত কিশোর, কী জানালেন প্রতিক্রিয়ায়