স্বামী বিবেকানন্দের স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব যুব সমাজ ও পরবর্তী প্রজন্মের উপর, বেলুড়মঠে বললেন মোদী

"স্বাধীনতার পর থেকে আমরা 'অধিকার' নিয়ে শুনে আসছি। তবে এখন অধিকারের পাশাপাশি 'কর্তব্য'-এর উপর নজর দিতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দের ভারতকে শ্রেষ্ট করে তোলার সেই স্বপ্নকে পূর্ণ করতে এই কর্তব্য আমাদের পালন করতে হবে।" আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৭তম জন্মবার্ষিকীতে এভাবেই দেশের যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
|
সকালে বিশেষ পুজো দেন মোদী
শনিবার কলকাতায় দুই দিনের সফরে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে থেকেই শহর জুড়ে মোদী বিপোধী তথা সিএএ ও এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয় শহর কলকাতা। তবে সেই বিক্ষোভকে উপেক্ষা করেই নিজের সফর জারি রাখেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নিজের সফর সূচিতে বদল এনে রাত কাটান বেলড়মঠে। সকাল হতেই তিনি স্বামী বিবেকানন্দের ঘরে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন ও বিশেষ পুজো দেন।
|
আমাকে যেন আরও বেশি কাজ করার জন্যে বলছেন স্বামীজি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'আমি আজ সকালবেলা স্বামী বিবেকানন্দের ঘরে গিয়েছিলাম। এটা আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। আমার সেই ঘরে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যে তিনি আমাকে আরও বেশি কাজ করার জন্যে বলছেন। আশীর্বাদ দিচ্ছেন। আমি সেই আশীর্বাদ নিয়েই আমি ভারতকে আরও এগিয়ে যাব। স্বামীজি বলতেন ভারত মাকে নিজের মা হিসাবে দেখ। আমিও দেশের যুব সমাজকে এই আহ্বান করছি।'
|
'আমাদের জাগ্রত হতে হবে'
তিনি বলেন, 'আমাদের জাগ্রত হতে হবে। স্বামীজি বলতেন, আমি যদি ১০০ জন তেজস্বী যুবক পেয়ে যাই তবে আমি ভারতকে বদলে দেব। এটি আমাদের মনে রাখতে হবে। ভারতেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, কিছু করে দেখানোর জন্যে আমাদের তেজ ও করে দেখানোর যোশ দরকার। এই শতককে ভারতের নামে করতে এখন দেশের কোটি কোটি যুবক প্রতি কোণায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। নতুন ভারত গড়ে তুলতে আমরা অঅনেক সঙ্কল্প নিয়েছি। এই সংকল্প শুধু সরকারের নয়, বরং ১৩০ কোটি ভারতীয়র। ৪০ বছর আগে কেউ ভাবতে পারত না যে ভারতে ডিজিটাল পেমেন্টের বিষয়ে অগ্রগতি করতে পারবে না। তবে আজ ভারত বিশ্বের দেশগুলির তালিকায় এই নিরিখে শীর্ষে। ভারতকে স্বচ্ছ বানাতে আমাদের দেশের যুবকরা এগিয়ে এসেছে। ৫ বছর আগে স্বচ্ছ ভারত নিয়ে নিরাশা থাকলেও আজ পরিস্থিতি বদলে গেছে।'
|
'স্বামী বিবেকানন্দের স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব আমার উপর, যুব সমাজের উপর'
মোদী বলেন, 'স্বামী বিবেকানন্দ কেবল একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি এক জীবন ধারা ছিলেন। তিনি তাঁর সময়কালে গরিব মানুষের জন্যে কল্যাণমূলক কাজ করেছেন। আজও তাঁর অনুপ্রেরণায় মানুষ বাঁচার উর্জা খুঁজে পায়। আজও দেশের যুব সমাজ তাঁর থেকে অনুপ্রেরণা পায়। শতক বদলেছে কিন্তু স্বামীজির সেই স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব আমার উপর, আপনাদের উপর, এই দেশের সমস্ত যুব সমাজের উপর, পরবর্তী প্রজন্মের উপর। মাঝে মাঝে মনে হয়, যে আমি একা এই কাজ করে কী করব। আমার কথা কেউ শোনে না, কেউ আমল দেয় না। কিন্তু তখন আমার গুরুজনদের থেকে পাওয়া শিক্ষা মনে পরে যায়। আমরা কখনই একা থাকি না। আমাদের ঈশ্বর সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকে।'
|
'বেলুড়মঠকে নিজের বাড়ি মনে হয়'
আজ কলকাতা সফরের দ্বিতীয় দিনে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বেলুড়মঠে বক্তৃতা রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'বেলুড়মঠে আসতে পারা যে কোনও মানুষের জন্যে তীর্থ যাত্রার থেকে কম নয়। তবে আমার কাছে এখানে আসা বাড়িতে ফেরার মতো। বিবেকানন্দজির বাণী ও ব্যক্তিত্ব আমার মতো আরও বহু মানুষকে এখানে টেনে নিয়ে আসে। এই ভূমিতে এলে সারদা মায়ের আঁচল এই ভূমিতে থেকে যাওয়ার জন্যে থেকে যেতে বলে।'