এখনও হাসপাতাল নয়, ভরসা ওঝার কেরামতিতে, সুন্দরবনে প্রাণ গেল সাপে কাটা যুবকের
যুবক নবকুমার মন্ডলের বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ায়। মামার বাড়ি হিঙ্গলগঞ্জের একটি গ্রামে।
একবিংশ শতকে পৌঁছেও রাজ্যের নানা এলাকায় এখনও সভ্যতার আলো এসে পৌঁছয়নি। যুবক নবকুমার নামে এক যুবক শিকার হল কুসংষ্কারের। তাঁর বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ায়। মামার বাড়ি হিঙ্গলগঞ্জের একটি গ্রামে। গত দুদিন আগে সোমবার মামা নিতাই চন্দ্র মৃধার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার সকাল বেলা পুকুরের দিকে যাচ্ছিলেন মাছ ধরতে ধানের ক্ষেতের মধ্য দিয়ে। সেই সময় বিষধর সাপ তাড়া করে ছোবল মারে।
ওই যুবককে স্থানীয় হাসপাতাল থাকতেও ওঝার কাছে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। বেশ কয়েক ঘন্টা ঝাড়ফুঁক চলে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। যুবককে নিয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে গাছের পাতা-ডাল আবার কখনও শিকড় খাইয়ে দেওয়া চলতে থাকে। এরপরই ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে যুবক।
তারপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত দেরি হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় ১৩ নম্বর হিঙ্গলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করালেও নবকুমারকে বুধবার ভোর বেলায় চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মামার বাড়ির লোকজন, স্থানীয় গ্রামবাসী ও ওঝার কেরামতিতে একটি জীবন চলে গেল। সাপের কামড় নিয়ে বিজ্ঞান মঞ্চের এত কর্মশালা সুন্দরবনে। প্রচার সচেতনতা সত্ত্বেও একবিংশ শতাব্দীর অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। যেখানে হাসপাতাল বাড়ি থেকে একশো মিটারও না সেখানে না গিয়ে ওঝার বাড়ি গেলেন সকলে।
যুবককে টানা কয়েক ঘন্টা ঝাড়ফুঁক চলার পর তরতাজা বাইশ বছরের নবকুমারের প্রাণ গেল। ওঝার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ। নবকুমারকে হাসপাতালে যখন নিয়ে যাওয়া হয় তখন সে প্রায় মৃত যুবক, এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।