এসএসকেএমে ভর্তির জন্য গভীর রাতেও মন্ত্রীর চেষ্টা, প্রাণে বাঁচল বারাসতের কিশোর ফুটবলার
মন্ত্রীর চেষ্টায় প্রাণে বাঁচল বছর কিশোের ফুটবলার। এসএসকেএমের এমারজেন্সিতে থাকা চিকিৎসকরা ভর্তি নিতে নারাজ হলেও পরে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ফোনে ভর্তি নেওয়া হয় মাথায় আঘাত লাগা প্রীতম বিশ্বাস
মন্ত্রীর চেষ্টায় প্রাণে বাঁচল বছর পনেরোর ফুটবলার প্রীতম বিশ্বাস। এসএসকেএমের এমারজেন্সিতে থাকা চিকিৎসকরা ভর্তি নিতে নারাজ হলেও পরে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ফোনে ভর্তি নেওয়া হয় মাথায় আঘাত লাগা প্রীতমকে। আপাতত সুস্থ আছে সে।
বারাসতের বাদুর প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার প্রীতম বিশ্বাস। শনিবার বিকেলে সেখানেই ফুটবল খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনা। বল দখলের লড়াইয়ে আরেকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। মাথায় আঘাত লাগায় লুটিয়ে পড়ে প্রীতম।
প্রীতম বিশ্বাসকে প্রথমে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিশোরের পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় কলকাতায় রেফার করা হয়। কিন্তু রাত আটটা থেকে শুরু হয় শহরের এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটোছুটি। ওই কিশোরকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখান থেকে পাঠানো হয় এনআরএস-এ। কিন্তু সেখানেও ভর্তি না নেওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম-এ। ততক্ষণে কিশোরের পরিস্থিতি যথেষ্টই খারাপ।
এসএসকেএম-এ গিয়ে আবার অন্য এক অভিজ্ঞতা হয় কিশোর প্রীতমের সঙ্গে যাওয়া বারাসতের সম্রাট ব্যানার্জি এবং তাঁর সঙ্গীদের। সেখান থেকেও জানানো হয় বেড খালি নেই।
এরপর সম্রাট ব্যানার্জি ফোন করেন তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনকে। ঘটনাস্থলে যেতে না পারলেও, এসএসকেএমের এমারজেন্সির ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু এমারজেন্সিতে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মীরা থাকলেও, ফোন ধরার মতো অবস্থায় ছিলেন না বলে অভিযোগ করেছেন কিশোরের সঙ্গে যাওয়া পাড়ার দাদারা।
অগত্যা রাত দুটোর সময় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা ফোন করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। কিশোরকে বাঁচাতে তাঁর সাহায্য চাওয়া হয়। শুভেন্দু অধিকারীও এমারজেন্সির ফোনে চেষ্টা করলেও, তখনও কেউ ফোন ধরেননি বলে অভিযোগ।
অবস্থা এমনই হয় যে, মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী কথা বলতে চাইলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ফোন ধরতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। এবার ফোনটি লাউড স্পিকারে দেওয়া হয়। অপর প্রান্ত থেকে রাত দুটো নাগাদ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ভর্তি নেবেন না লিখে দেন। এরপরেই ভর্তির তোড়জোড় শুরু হয়।
রবিবার ভোর সাড়ে চারটের সময় কিশোর ফুটবলার প্রীতম বিশ্বাসের সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আপাতত সে বিপদমুক্ত বলেই জানা গিয়েছে।
কিশোরের এসএসকেএম-এ ভর্তিতে চেষ্টা করা অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলার ওয়ান ইন্ডিয়া বেঙ্গলিকে জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। মুখ্যমন্ত্রী প্রচেষ্টায় হাসপাতালে সুব্যবস্থা থাকলেও, গুটিকয়েক জনের জন্যও বদনাম হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। নিজের দাদুকে ভর্তি করতে গিয়ে একই অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমারজেন্সিতে লোক থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁরা ফোন ধরলেন না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। যাঁদের কোনও প্রভাবশালী যোগ নেই, হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে তাঁদের অবস্থা কী হতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ঐন্দ্রিলা।
তবে কিশোর ফুটবলারকে হাসপাতালে ভর্তির পরবর্তী ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেন। কিশোরের অপারেশন সফল হওয়ায় খুশি বারাসতের বাদুর স্থানীয় বাসিন্দারাও।