সাবধান! ভুত চতুর্দশীতে ভুলেও যাবেন না এইসব জায়গায়। গেল কিন্তু রক্ষা নেই! এসব জায়গায় গেলে নির্ঘাত তেনাদের সঙ্গে দেখা হবে এইদিনে। সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আচমকা ধাক্কা খেতে পারেন। কিংবা চোখের সামনে দেখলেন আলো জ্বলছে আর নিভছে। এমনও হতে পারে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল দরজা! এমনও কিন্তু দেখতে পারেন দরজার সামনে দিয়ে কেউ হেঁটে চলে গেল।
[আরও পড়ুন:কার্শিয়াং-এর ডাও হিল-এর' হাড়হিম করা ঘটনা আজও আতঙ্কে রাখে অনেককে , কী দেখা যায় জানেন]
এঁরা কিন্তু কেউ ইহজগতের বাসিন্দা নন। অশরীরী আত্মার আনাগোনা হয় বিশেষ বিশেষ দিনে। বিশেষ করে কালীপুজোর আগে এই ভূত চতুর্দশীর দিন হলে কথাই নেই। তেনারা বেরিয়ে পড়েন সবাই! আর বেরিয়ে পড়া মানেই নানাভাবে জানান দিয়ে যান তাঁদের উপস্থিতি। তাই যাঁদের ভয় রয়েছে ভূতে, ভুলেও যাবেন না এইসব জায়গায়। ভূত চতুর্দশীতে নয়ই।
আবার উল্টোটাও হতে পারে। আপনি হয়তো খুব এনজয় করেন বিষয়টি। ভুতুড়ে কাণ্ডকারাখানার সঙ্গে আপনার মিলিত হওয়ার খুব শখ। সে সাহসও আপনার আছে। সেরকম হলে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন আজকের দিনে। ঘুরে আসতে পারেন সেইসব জায়গা থেকে। গা ছমছমে অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হলে একবার যাওয়া দরকার!

ন্যাশনাল লাইব্রেরি
কলকাতার সুপ্রাচীন লাইব্রেরি এটি। ভুতুড়ে কার্যকালাপে এই লাইব্রেরির যথেষ্ট দুর্নাম রয়েছে। পড়াশোনা করতে গিয়ে অনেকেই এই লাইব্রেরিতে ভূতের দেখা পেয়েছেন। হয়তো পড়ায় মনোনিবেশ করেছেন। হঠাৎ আপনার ঘাড়ের কাছে অনুভব করতে পারেন কারও নিঃশ্বাস। দিনদুপুরেই অশীরীর পদচারণার শব্দও পেতে পারেন। কিন্তু কার পদচারণার শব্দ শুনছেন আপনি? কেই-বা আপনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে গেলেন? প্রচার রয়েছে, লর্ড মেটাকাফের স্ত্রীর আত্মাই নাকি ঘোরাফেরা করে লাইব্রেরিতে। শুধু আপনিই নন, ওই অশীরীরির উপস্থিতি টের পেয়েছেন লাইব্রেরি কর্মীরা।

হেস্টিংস হাউস
আলিপুরের অন্যতম পুরনো স্থাপত্য। গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের বাসস্থান ছিল এটি। এখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা কলেজ। এখানকার ছাত্রীরাই ভুতুড়ে কাণ্ড-কারখানার কথা জানিয়েছে। অনেকে ঘোড়ায় চড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতেও দেখেছে এক সুটেড-বুটেড ম্যানকে। তারপর মিলিয়ে গিয়েছে সে। কখনও আবার কাগজপত্রের খসখসানি শোনা যায়। হেস্টিং সাহেব স্বয়ং নাকি এই বাড়িতে বিরাজ করেন। তিনি ঘোড়ায় চড়ে এসে কাগজপত্র ঘাঁটেন। কেউ কেউ মনে করে এক ফুটবল প্রেমীর আত্মা রয়েছে এই বাড়িতে। ওই যুবক নাকি ফুটবল খেলতে গিয়ে মারা গিয়েছিল।

মল্লিকঘাট
হাওড়া ব্রিজের নিচে মল্লিকঘাট ফুলবাজারের সামনের ঘাটেও ভূতের অস্তিত্ব টের পান অনেকেই। এখানে আবার সাদা শাড়ি পরিহিত মহিলা ভূত। যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁরা নাকি প্রতিদিন একটা না একটা ভৌতিক কাণ্ডকারখানার স্বাক্ষী থা্কেন। কখনও দেখেন এক মহিলাকে সাদা শাড়ি পরে ঘুরতে। কখনও নাকি-সুরে কান্নার আওয়াজও পান যাত্রীরা। তাঁদের ধারণা, গঙ্গায় ডুবে কোনও মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর আত্মাই এখন ঘুরে বেড়ায়।

নিমতলা শ্মশানঘাট
কলকাতার বিখ্যাত শ্মশানঘাট এই নিমতলা। অমবস্যার রাত এলেই এখানে তেনাদের আনাগোনা শুরু হয়। তারপর ভূত চতুর্দশীর বিশেষ দিনে তো কথাই নেই। কত অশীরীরি আত্মার বিচরণ ঘটে এই নিমতলা ঘাটে। কত রকমের অলৌকিক ঘটনা ঘটে। তবে এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এখানে বহু মানুষের শবদাহ হয়। সেখানে অশীরির আত্মার বিচরণ করা স্বাভাবিক ঘটনা তাঁদের কাছে।

লোয়ার সার্কুলার রোডের গোরস্থান
লোয়ার সার্কুলার রোডের এই কবরস্থানে শায়িত রয়েছে স্যার উইলিয়াম হে ম্যাকনটন। প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে তিনি নিহত হয়েছিলেন। তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল এই গোরস্থানে। স্যর উইলিয়ামের স্ত্রী স্বামীর ছিন্নভিন্ন দেহ আফগানিস্তান থেকে নিয়ে এসে সমাধিস্থ করেছিলেন কলকাতায়। উইলিয়াম সাহেবের এই সমাধির কাছে গেলেই কবরের সামনে ছায়াদানকারী গাছটি কাঁপতে থাকে। কথিত আছে, উইলিয়ামের ক্ষুব্ধ আত্মার আস্ফালনেই কাঁপে গাছটি।

দক্ষিণ পার্ক স্ট্রিট গোরস্থান
পার্কস্ট্রিটের দর্শনীয় স্থান এই সেনা-গোরস্থান। এখানকার বেশিরভাগ সমাধিই ব্রিটিশ সৈন্যদের। কলকাতার সবথেকে পুরনো এই কবরস্থান নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে। অনেকেই এই জায়গা পরিদর্শন করে অনেক অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেছেন। একবার এক দল যুবক এই কবরস্থানের ফটো তুলেছিলেন। সেই ছবিতে কিছু অদ্ভুত আকৃতি ধরা পড়ে। তাঁরা প্রত্যেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তারপর। এই ঘটনাকে অনেকেই ঘুমন্ত আত্মার অভিশাপ বলে বর্ণনা করেন।

রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন
এই স্টেশনেই নাকি আড্ডা বসায় ভূতের দল। একেবারে গোলটেবিল বৈঠক শুরু হয় রাত নামলেই। যাঁরাই শেষ মেট্রায় সওয়ারি হয়ে রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনে নেমেছেন, তাঁরা সাক্ষী থেকেছেন ভুতুড়ে কাণ্ডের। রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনে নাকি যাত্রীরা বিভিন্ন ছায়ামূর্তিকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন। যাত্রীদের ব্যাখ্যা, মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের অশীরীরি আত্মাই সন্ধ্যার পর এই স্টেশনে এসে মিলিত হন।

মহাকরণ
রাজ্যের মূল প্রশাসনিক ভবন। এই বাড়ির ফাঁকা ঘরগুলিই ছিল ভূতের বাসস্থান। রাত নামলেই তাঁদের হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এমনকী এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, কেউ ওই ফাঁকা ঘরগুলির আশেপাশের ঘরগুলিতে থেকে কাজই করতে পারতেন না। কেউ সাহসও করতেন না সন্ধ্যার পর ওই ঘরগুলির আশেপাশে একা যাওয়ার। মাঝরাতে কান্নার আওয়াজও পাওয়া যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে এই তথ্য জানা গিয়েছে।
Oneindia এর ব্রেকিং নিউজের জন্য . সারাদিন ব্যাপী চটজলদি নিউজ আপডেট পান.subscribe to Bengali Oneindia.