ফিরে দেখা ২০১৯: বাংলার সেরা খবর একনজরে
২০১৯-এ বছরের শুরু থেকে গটে গিয়েছে একের পর এক ঘটনা। একদিকে যেমন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান হয়েছে, ঠিক তেমনই ৩ টি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি তাদের জায়গা হারিয়েছে।
২০১৯-এ বছরের শুরু থেকে গটে গিয়েছে একের পর এক ঘটনা। একদিকে যেমন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান হয়েছে, ঠিক তেমনই ৩ টি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি তাদের জায়গা হারিয়েছে। ফনি আর বুলবুলের জেরে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বর্ষ শেষের মাসের সিএএ-র বিরোধিতায় রাজ্যে রেলের সম্পত্তি ধ্বংস করেছে আন্দোলনকারীরা।
লোকসভা নির্বাচন
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান ছিল ৪২-এ ৪২টি আসন। বাংলা জুড়ে বিভিন্ন সভায় তিনি এই স্লোগান তুলেছিলেন। যদিও ফলাফলের নিরিখে রাজ্যে বড় ধাক্কা খায় তৃণমূল।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে সব থেকে বেশি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। সেইবছর তারা ৩৪ টি আসন পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এর নির্বাচনে একধাক্কায় তাদের আসন সংখ্যা নেমে যায় ২২-এ। এই ধাক্কার পরেই বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুরসভায় দলবদল শুরু হয়ে যায় বিজেপির পক্ষে। তবে দেরিতে হলেও সেই পরিস্থিতি সামান দেয় তৃণমূল।
২০১৪-র নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির দুটি আসন দখল করেছিল। একটি ছিল দার্জিলিং এবং পরটি ছিল আসানসোল। সেক্ষেত্রে বিজেপির লক্ষ্য ছিল এই রাজ্য থেকে আসন বাড়ানো। সামনে ২৮-৩০ টি আসনের কথা বললেও, বিজেপি নেতারা ধরে নিয়েছিলেন তারা ২২-এর আশপাশে আসন এই রাজ্য থেকে পেতে পারেন। শেষ পর্যন্ত এই রাজ্য থেকে বিজেপি ১৮ টি আসন পায় লোকসভা নির্বাচনে।
বিধানসভার উপনির্বাচন
অন্যদিকে নভেম্বর রাজ্যে ৩ কেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচনে ৩টি তেই জয়লাভ করে তৃণমূল। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ, নদিয়ার করিমপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে জয়লাভ করে তৃণমূল। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ভোটের ফারাকও চিল বিস্তর। তৃণমূলের দাবি, এই ফলাফল বজায় রেখেই তারা ২০২১-এর নির্বাচনে জয়লাভ করবে।
পুরসভায় হাতবদল
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ১৮ টি আসন পেতেই বিভিন্ন পুরসভা এবং পঞ্চায়েতে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার ধুম পড়ে যায়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল উত্তর ২৪ পরগনা। কাঁচড়াপাড়া, নৈহাটি, ভাটপাড়া, গাড়ুলিয়া, হালিসহর, বনগাঁ পুরসভা কার্যত বিজেপির দখলে চলে যায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তৃণমূল পরিস্থিতি সামাল দেয়। বেশিরভাগ পুরসভায় নিজেদের দখল তারা ফিরিয়ে আনে। এখন ভাটপাড়ায় দখল ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি চালাচ্ছে তৃণমূল।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ
২০১৯-এ
পশ্চিমবঙ্গ
দেখেছে
দুদুটি
প্রাকৃতিক
দুর্যোগ।
একটি
হল
মে
মাসে
ফনি।
অপরটি
হল
নভেম্বরে
বুলবুল।
ফনি
মূলত
ওড়িশায়
আঘাত
করলেন,
পশ্চিম
মেদিনীপুর,
হুগলি-সহ
বেশ
কিছু
জেলায়
ক্ষতি
হয়।
অন্যদিকে
৯
নভেম্বর
ঘূর্ণিঝড়
বুলবুল
আঘাত
হানে
পশ্চিমবঙ্গের
উপকূলে।
দক্ষিণ
২৪
পরগনা,
উত্তর
২৪
পরগনা,
পূর্ব
মেদিনীপুর-সহ
বেশ
কয়েকটি
জেলায়
চাষ
ও
ঘরবাড়ির
ক্ষতি
হয়।
বেশ
কয়েকজনের
মৃত্যুও
হয়
এই
ঝড়ে।
পশ্চিমবঙ্গের
উপকূল
এলাকায়
বহু
জায়গায়
গাছ
উপড়ে
পড়ে।
ছিড়ে
যায়
বিদ্যুৎবাহী
তার।
অনেক
জায়গাতেই
যোগাযোগ
ব্যবস্থা
বিচ্ছিন্ন
হয়ে
পড়ে।
নোবেল পুরস্কার
২০১৯-এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল বাঙালির নোবেল প্রাপ্তি। এমআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক অভিজিত বিনয়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবছর নোবেল পেয়েছেন। একইসঙ্গে নোবেল পেয়েছেন অভিজিতের স্ত্রী এস্থার ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমারও। অভিজিত হলেন অমর্ত সেনের পর অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া দ্বিতীয় বাঙালি এবং নোবেল জয়ী চতুর্থ বাঙালি।
সিএএ-র বিরোধিতায় ভাঙচুর
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিএএ-র বিরোধিতায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। একের পর এক জায়গায় ট্রেনে ভাঙচুর চালানো হয়। স্টেশনে আগুন ধরানো হয়। উল্লেখযোগ্য স্টেশনগুলি হল উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া, মুর্শিদাবাদে নিমতিতা। ২১ টি স্টেশনে হামলা চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রেলের সম্পত্তি লুট করা হয়। কোনও কোনও জায়গায় লাইন উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। হাজারদুয়ারি-সহ একাধিক ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও দেরি হলেও পরিস্থিতি আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণে আসে।
সিএএ এবং এনআরসির বিরোধিতায় পথে মমতা
যখন লোকসভায় বিল পাশ হয়নি তখন থেকেই নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হতেই এক টানা পদযাত্রা করে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় পদযাত্রা করার পর পুরুলিয়া। এরপর তিনি পদযাত্রা করবেন শিলিগুড়িতে। যদিও বিজেপির অভিযোগ ২০০৫ সালে রাজ্যে অনুপ্রবেশের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সেই মমতাই অন্য কথা বলছেন পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে।