পণের বলি: শ্বশুরবাড়িতে আগুনে পুড়ে মরল বধূ, কেউ গ্রেফতার হয়নি
নবদ্বীপের মালঞ্চপাড়ার বাসিন্দা কাকলির সঙ্গে গত বছর বিয়ে হয়েছিল খাদিপাড়ার সুমন্ত দে-র। বালুচরী শাড়ির কারিগর ছিল সুমন্ত। বিয়ের সময় নগদ ৩৫ হাজার টাকা হাতে হাতে দেওয়া হয়। সঙ্গে অন্যান্য আসবাবপত্র। কথা ছিল, বিয়ের পর আরও ৮ হাজার টাকা দেবে কাকলির বাপের বাড়ির লোকজন। কিন্তু ছ'মাস কেটে যাওয়ার পরও সেই টাকা না পাওয়ায় সুমন্ত এবং তার বাড়ির লোকজন কাকলির ওপর অত্যাচার শুরু করে। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায়ই খেতে দেওয়া হত না কাকলিকে। নিয়মিত বেল্ট দিয়ে পেটাত স্বামী। কাকলির দিনমজুর বাবা মেয়ের শ্বশুরবাড়ির কাছে কিছুদিন সময় চান। বলেন, আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দেবেন। তাতে অবশ্য সুরাহা হয়নি।
অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দিন দশেক আগে কাকলি শ্বশুরবাড়ি ছেলে চলে আসেন। তাঁর দাদা তাপস ঘোষ জানান, "আমার বোন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তাই আমরা ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে বলেছিলাম, এই অবস্থায় মারধর করা ঠিক নয়। ওরা কোনও কথাই শোনেনি। গত সোমবার ওরা এসে বোনকে নিয়ে যায়। তার পর বুধবারই খবর পাই, বোনের সারা শরীর আগুনে পুড়ে গিয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই ওকে পুড়িয়ে মেরেছে।" তিনি জানান, বুধবার সন্ধেয় নবদ্বীপ হাসপাতালে তাঁর বোন মারা যান।
যদিও কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, "পণজনিত কারণে অত্যাচার এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, মেয়েটি নিজেই গায়ে আগুন দিয়েছে।"
ওই মৃত বধূর শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনকে খুঁজছে পুলিশ। সবাই পলাতক। তাদের ধরতে বর্ধমান জেলার বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে।