লক্ষ্য লোকসভা! পাহাড়ে ১৫ 'উন্নয়ন বোর্ড'-ই বিজেপির বিরুদ্ধে হাতিয়ার মমতার
একদিনে পাহাড়ে ১১ টি গোষ্ঠীকে উপজাতি তকমার প্রতিশ্রুতি না রাখা, অন্য দিকে, পাহাড়ের গোষ্ঠীগুলির জন্য একের পর এক বোর্ড গঠনে, ছত্রখান বিজেপি।
একদিনে
পাহাড়ে
১১
টি
গোষ্ঠীকে
উপজাতি
তকমার
প্রতিশ্রুতি
না
রাখা,
অন্য
দিকে,
পাহাড়ের
গোষ্ঠীগুলির
জন্য
একের
পর
এক
বোর্ড
গঠনে,
ছত্রখান
বিজেপি।
লোকসভার
আগে
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের
একের
পর
এক
পদক্ষেপে
পাহাড়ে
কার্যত
দুর্বল
হয়ে
পড়েছে
কেন্দ্রের
শাসক
দল।
এছাড়াও,
গত
১০
বছর
ধরে
সঙ্গী
থাকা
গোর্খা
জনমুক্তি
মোর্চার
বড়
অংশ
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কাজে
খুশি।
দিল্লিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি গোর্খা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চের নেতারা। সেন্টারটি তৈরি করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকার, বিশেষ করে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার জন্য।
সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের জাতি গোষ্ঠীগুলির সাংস্কৃতিক এবং আর্থিক প্রয়োজনে ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করেছে সরকার। দিল্লির গোর্খা ওয়েলফেয়ার সেন্টার সেরকমই একটি কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। এইপথেই তৃণমূল বিজেপির থেকে দার্জিলিং আসনটি দখল করতে চায় এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
উন্নয়নকে হাতিয়ার করে পাহাড়ে পা রেখেছে তৃণমূল। মাঝে মধ্যেই পাহাড় সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতমাসে দার্জিলিং সফরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তাঁর সরকার এলাকার সমস্যার চূড়ান্ত সমাধানে কাজ করবে। যার ফলে দার্জিলিং-এর পরিস্থিতিও ভাল হবে।
দিল্লিতে গোর্খা ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কোনও বিজেপি নেতা উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু গত ১০ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গী থাকা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা হাজির ছিলেন। বিজেপির দার্জিলিং আসন জয়ে এই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অবস্থান যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে ২০১৩ সালে প্রথম বোর্ড গড়েছিলেন লেপচাদের জন্য। নাম ছিল, মায়ে লং লেপচা ডেভেলপমেন্ট বোর্ড। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৪-তে গড়া হয় তামাং ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, ২০১৫-তে ভূটিয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তৈরি করা হয়। এরপর থেকে গোর্খাদের সবকটি গোষ্ঠীই তাদের জন্য বোর্ড গঠনের দাবি জানায়। সেই সুযোগে তৃণমূলও তাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ২০১৭ সালের শেষে পাহাড়ে সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ১৫ টি ডেভেলপমেন্ট এবং সাংস্কৃতিক বোর্ড। ২০১৮-র অগাস্টে রাজ্য সরকার তৈরি করে ওয়েস্ট বেঙ্গল তরাই, ডুয়ার্স, শিলিগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ড( গোর্খা কমিউনিটি)।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ইতিমধ্যেই বিভাজিত। একটি গোষ্ঠীর নেতা দলের প্রধান বিমল গুরুং। যিনি দীর্ঘদিন ধরেই নিরুদ্দেশ। অপর গোষ্ঠীর নেতা জিটিএ-র চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জিটিএ-কে ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, এই টাকা দিয়েই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তামাং গোষ্ঠীকে নিজের অনুগত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পাহাড়ের জন্য গঠিত বোর্ডগুলিকে রাখা হয়েছে, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টস-এর অধীনে। এই বোর্ডগুলিকে জিটিএ-র অধীনে রাখা হয়নি।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত হল এলাকায় নিজেদের ভিত্তি কিছুটা হারিয়েছে বিজেপি। কেননা কেন্দ্র তাদের প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। পাহাড়ের ১১ টি গোষ্ঠীকে উপজাতি তকমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
ইতিমধ্যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তামাং গোষ্ঠী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করার ব্যাপারে কার্যত ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন বিনয় তামাং। তিনি বলেছেন, এর আগে কোনও সরকার এত উন্নয়নমূলক প্রকল্প পাহাড়ের জন্য রাখেনি।
তৃণমূল সরকার টাকা ছড়িয়ে পাহাড়ে জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এটা পাহাড়ের প্রকৃত উন্নয়ন নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।