বিজেপিতে কি এবার তারকাদের ঢল দেখা দেবে? কাজে এল না মমতার পুরস্কারের রাজনীতি?
আট বছর আগে যখন তিনি পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন বামেদের দূর্গে ধস নামিয়ে, তখন সাধারণ মানুষের মনকে প্রভাবিত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু কৌশল নিয়েছিলেন।
আট বছর আগে যখন তিনি পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন বামেদের দূর্গে ধস নামিয়ে, তখন সাধারণ মানুষের মনকে প্রভাবিত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু কৌশল নিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই তিনি মন দিয়েছিলেন সুশীল সমাজ-চলচ্চিত্র তারকা-কুশীলবদের সমর্থনটি সুনিশ্চিত করতে। বাঙালিয়ানার প্রতি তাঁর অনুরাগ-এর কথা বলে মমতা এই শ্রেণীটির -- যারা বাংলা সংস্কৃতির এক বড় পরিচায়ক -- আশীর্বাদধন্যা হতে চেয়েছিলেন। লক্ষ ছিল: এই শ্রেণীটির উপরে প্রভাববিস্তার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও দৃঢ় করা কারণ দলের সংগঠনের দুর্বলতা ঢাকতে এই পন্থাটি খুব কার্যকর ছিল।
কালে কালে মমতা নানা পুরস্কার-এরও প্রচলন শুরু করেন। বার্তা দেন যা বামেদের সময়ে বাংলার তামাম কুশীলবদের জন্যে কিছুই করা হয়নি আর তাই তিনি সেই কাজে হাত দিয়েছেন। বাংলার সাংস্কৃতিক ধারক ও বাহকদের সম্মান জানিয়ে প্রথমেই একটি শ্রেণীগত ভোটব্যাঙ্ক তিনি বানিয়ে ফেলেন। এবং লক্ষ রাখেন, এঁদের হাত ধরে সাধারণ মানুষের ভোটটিও যাতে তাঁর ঝুলিতেই আসে।
ফের শিল্পীদের বঞ্চনার কথা যা আগেও শোনা যেত
এখন কিন্তু দেখা যাচ্ছে সেই প্রচেষ্টা তাৎক্ষণিক ফল দিলেও দীর্ঘমেয়াদে বিশেষ উপকারে লাগেনি। এখন যখন বঙ্গের শাসকদলের নির্বাচনী বিপর্যয় ঘটেছে, তখনই অনেক কুশীলবকে বলতে শোনা যাচ্ছে শিল্পীদের প্রতি বঞ্চনার কথা। একজন বলেছেন চলচ্চিত্র শিল্পে বিজেপির প্রবেশ স্বার্থ কায়েম করার জন্যে নয়, শিল্পীদের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্যে। তাহলে বাম আমলের অন্যায় যেটা তৃণমূলের তুঙ্গে থাকা বছরগুলিতে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হল, তার কী হল?
কুশীলবরাও কম বুদ্ধি ধরেন না
আসলে এই কুশীলবরাও কম বুদ্ধি ধরেন না। যেখানে শাসকদল চিটফান্ড সম্পর্কিত নানা ঝামেলায় জড়িয়েছে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে টলিউডেও এর অশুভ ছায়া পড়েছে, কেন্দ্রীয় শাসকদলের সুনজরে থাকার প্রবণতাটি সেখানে খুব আশ্চর্যজনক কিছু বলে মনে হয় না। মুম্বইতেও দেখা যায় ক্ষমতাবানের সঙ্গে সুশীল সমাজের সমঝোতা। এখানেও তার অন্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কম। আর তাছাড়া, যে সকল সেলেব্রিটি তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ার সুযোগ পাননি, তাঁদেরও তো এটাই সুযোগ।
কিন্তু পুরস্কার বিলিয়েও কি মক্কেলরা কাছে থাকল? কী ভাবছেন মমতা?