তৃণমূল কেন হেরেছে লোকসভায়, ২০২১-এর আগে ‘ফাঁস’ করে দিলেন খোদ সভাপতিই
তৃণমূল কেন হেরেছে লোকসভায়, ২০২১-এর আগে ‘ফাঁস’ করে দিলেন খোদ সভাপতিই
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রবল ধাক্কা খেয়েছে বিজেপির কাছে। ৪২-এ ৪২-এর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ভোট ময়দানে নেমে জুটেছে মাত্র ২২টি আসন। কিন্তু কেন এমন পদস্খলন হল তৃণমূলের, কেন ৩৪ থেকে নেমে ২২-এ পৌঁছে গেল তৃণমূল? এতদিন পর তার সঠিক কারণ খুঁজে পেলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি।
ব্যর্থতার ব্যাখ্যায় ফাঁস চরম তথ্য
এখন হারের গ্লানি তিনি মুছে ফেলতে পারেননি। লোকসভায় নিজেও সাংসদ পদে না লড়লেও প্রাক্তন সাংসদ দলের হারে ব্যথিত। বিগত নির্বাচনের সেই ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি ফাঁস করে দিলেন এক চরম তথ্য। যে কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ল একুশের নির্বাচনের আগে।
হারের জন্য দায়ী নিজেদের ভূমিকাই
কোচবিহারের গোপালপুরের এক জনসভায় মাঠভর্তি জনতার সামনে্ প্রাক্তন সাংসদ তথা কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় হারের জন্য দায়ী করলেন নিজেদের ভূমিকাকেই। হারের পর্যালোচনায় তাঁর উক্তি, আমরা পঞ্চায়েতে জোর করে ভোট করিয়েছি। তার জন্যই লোকসভায় আমাদের হারতে হয়েছে।
স্বীকারোক্তিতে গুঞ্জন জেলা তৃণমূলের অন্দরে
এলাকার মানুষের সামনে তাঁর এই স্বীকারোক্তি গুঞ্জন তুলেছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি এই কথা ফাঁস করে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের ক্ষতি করে দিলেন? নাকি সরল স্বীকারোক্তিতে তিনি জনসাধারণের কাছে মার্জনা চেয়ে নিলেন। এবং তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করলেন?
বিরোধীদের অভিযোগই সত্য বলে মান্যতা
২০১৩ সালের পর ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল জোর করে ভোট করে বলে অভিযোগ ওঠে। লাগাতার হিংসা, সন্ত্রাস ও ভয় প্রদর্শন করে পঞ্চায়েত দখল করা হয় বলে বিরোধীরা কাঠগড়ায় তুলে এসেছে তৃণমূলকে। এবার সেই অভিযোগই সত্য বলে মান্যতা দিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।
২০১৯-এর লোকসভায় মানুষ ভোট দেয়নি
জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ বলেন, আমরা উত্তরবঙ্গে সমস্ত আসনে হেরেছি লোকসভায়। তার কারণ ২০১৯-এর লোকসভায় মানুষ আমাদের ভোট দেয়নি। কিন্তু কেন মানুষ আমাদের ভোট দিল না। আমরা তো মানুষের জন্য কাজ করেছি। তবু কেন নাকচ করল আমাদের আবেদন?
মানুষ শিক্ষা দিয়েছে, আমরা শিক্ষা নিয়েছি
প্রাক্তন সাংসদের কথায়, আমরা মানুষের উপর আস্থা না রেখে জোর করে ভোট করিয়েছি। অনেক জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে আমাদের পার্টি। ফলে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আর লোকসভায় ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়ে তৃণমূলকে জবাব দিয়েছে মানুষ। মানুষ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। আমরা তা থেকে শিক্ষা নিয়েছি।
তৃণমূল ভাঙিয়েই জিতেছেন বিজেপির প্রার্থী
উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের হারের আরও একটা বড় কারণ হল অন্তর্দ্বন্দ্ব। তৃণমূল লাগাতার নিজেদের মধ্যে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। আর সেই ফাঁকে তৃণমূল ভাঙিয়েই জিতে বেরিয়ে গিয়েছে বিজেপির প্রার্থী। উত্তরবঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়, উদয়ন গুহের মধ্যে দ্বন্দ্ব জারি থাকায় সুবিধা পেয়েছে বিজেপি।
দলের ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন সভাপতি
কোচবিহারের বর্তমান জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে লড়েননি। তাঁকে টিকিট না দিয়ে পরেশ অধিকারীকে দাঁড় করানো হয়। তিনি বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল-ছুট নিশীথ প্রামাণিকের কাছে গোহারা হারেন। এতদিন পর প্রাক্তন সাংসদ দলের ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
২০২১-এর আগে ক্ষতে প্রলেপ তৃণমূলের! হিন্দি সেল গড়ে যে আসনগুলিকে টার্গেট মমতার