বিদ্যুৎ বিল ইস্যুতে ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত! মোদীর কাছে মমতার চিঠি যেতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাল্টা তোপ
কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত অব্যাহত। ফের একবার মমতার পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের তরফে এলো পাল্টা চিঠি। উল্লেখ্য, সামনেই ভবানীপুর উপনির্বাচন। তার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যত কোমর বেঁধে ময়দানে নামছে বিজেপি। দিদির শক্তঘাঁটি তথা ঘরের মাঠে মমতাকে চাপে রাখতে বিজেপির অস্ত্র প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। অবাঙালি ভোটব্যাঙ্কের আধিক্যে থাকা ভবানীপুরে প্রিয়াঙ্কা বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাইভোল্টেজ লড়াই কোনদিকে যাচ্ছে তা নিয়ে যখন দেশের সকলের নজর টিকে রয়েছে, তযখন কেন্দ্রের তরফে উড়ে এল পত্রবোমা।
বিদ্যুৎ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ,২০২১ ও মমতার চিঠি
বাংলার মসনদে বসেই পর পর বিভিন্ন ইস্যুতে মোদীর কাছে চিঠি পাঠাতে থাকেন মমতা। এদিকে, বাদল অধিবেশনে তুলে ধরা হয় কেন্দ্রের আনা বিদ্যুৎ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ,২০২১। যার সরাসরি বিরোধিতায় নামেন মমতা। আর সেই প্রেক্ষিতেই মমতা চিঠি পাঠান মোদীকে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি ছিল, যে এই বিল যদি কার্যকরী হয় , তাহলে বহু গরিব মানুষের পক্ষে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই চিঠি যেতেই পাল্টা কেন্দ্রের তরফে আসে বার্তা। সেই সময় মমতা প্রসঙ্গ তোলেন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির । তিনি চিঠিতে জানান যে , যদি বিদ্যুতের পৃথক নিয়ন্ত্রণ কমিশন তৈরি হয়, তাহলে সরবরাহকারী সংস্থাগুলি গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে।
পাল্টা তোপ কেন্দ্রের
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো এই চিঠির প্রেক্ষিতে পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিং। তাঁর প্রশ্ন, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির একচেটিয়া প্রভাবকে ধরে রাখতেই কি মমতা এই বিলের বিরোধিতা করছেন? উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ বিল ২০২১ এখনও মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র পায়নি, তবে তার মাঝে মমতার পত্রবোমা নিয়ে ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বিলে কী রয়েছে?
দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে 'ডিলাইসেন্সিং' করাই বিলের লক্ষ্য। যাতে বিদ্যুৎবণ্টনের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি একচেটিয়া প্রভাব বন্ধ হয়। সেই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রশ্ন, প্রাইভেট পার্টিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চিঠিতে কেন্দ্রের আনা বিলের বিরোধিতা করছেন? উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলে ইতিমধ্যেই আপত্তি উঠতে শুরি করে দিয়েছে। জানা যায়, এই বিল যদি কার্যকরী হয়, তাহলে গ্রাহকরা নিজের মতো করে বিদ্যুতের সার্ভিস প্রোভাইডারকে বেছে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছে অপশন থাকবে। কোনও এক চেটিয়া সংস্থার প্রভাব বিদ্যুৎ বণ্টনে থাকবে না।
চিঠিতে কী জানিয়েছেন মন্ত্রী?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, এই বিল যদি কার্যকরী হয় ,তাহলে ভর্তুকির ক্ষেত্রটি প্রযোজ্য থাকবে। ফলে ক্রস সাবসিডিতে সেভাবে কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে একাধিক সার্ভিস প্রোভাইডার মুম্বইয়ের মতো শহরে রয়েছে। ফলে এই বিষয়টি দেশের কাছে কোনও নতুন বিষয় নয়। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিং জানিয়েছেন যে, লাইসেন্স রাজ দেশ থেকে সরানোই তাঁদের কাছে সবচেয়ে বেশি জরুরি পদক্ষেপ। আর তার লক্ষ্যেই এমনটা করা হচ্ছে।