বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাথায় অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ কেন, উঠছে প্রশ্ন
বেকার ছেলেমেয়েদের হাতের কাজ শিখিয়ে স্বাবলম্বী করাই রাজ্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সংসদের উদ্দেশ্য। তাই ডিগ্রিধারী শিক্ষাবিদ, ইঞ্জিনিয়ার বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কৃতীদের এর সভাপতি পদে বসানো হয়। যেমন, সংস্থাটির প্রাক্তন সভাপতি সুস্মিত হালদার ছিলেন একজন কৃতী ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর এমবিএ ডিগ্রিও ছিল। কিন্তু অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের মুকুটে এমন কোনও পালক নেই। তিনি বিএসসি পাশ।
এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, "আমি এই খবর শুনে বিস্মিত হয়েছি। এমন পজে একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ বসবেন, এটাই প্রত্যাশিত। একজন চিত্রতারকা তো এই পদে অযোগ্য। তাঁকে বসানোর কোনও যুক্তিই নেই। এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের কোও উপকার হবে না।"
আর এক শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের কথা ভাবছেন কি না, তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। ছেলেমেয়েদের বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করা গেলে এ রাজ্যে বেকার সমস্যার অনেকটাই লাঘব হত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটা বোধ হয় লক্ষ্য নয়। তিনি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিভিন্ন পদে বসিয়ে তাঁদের বশংবদ করে রাখতে চাইছেন। লোকসভা ভোটে নায়ক-নায়িকাদের প্রার্থী করা, ইডেনে শাহরুখ খানের নাচানাচি করার মতোই রুদ্রনীল ঘোষকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে বসিয়ে তিনি একই উদ্দেশ্য সাধন করতে চাইছেন। এটা নিঃসন্দেহে অবনমন।"
যদিও এমন অভিযোগ মানতে নারাজ রুদ্রনীলবাবু। তিনি বলেন, "আমার কিছু বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ রয়েছে। এটা আগামী দিনে আমায় সংসদ সভাপতি হিসাবে কাজ করতে সহায়তা করবে।" অবশ্য কী বিষয়ে তাঁর প্রশিক্ষণ রয়েছে, সেটা খোলসা করেননি।
রুদ্রনীল ঘোষ কিছুদিন আগেও কট্টর বামপন্থী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। সিপিএমের সদস্যও ছিলেন। কিন্তু নয়া জমানায় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেসে ভিড়তে শুরু করায় তিনিও তাতে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাঁর এই শিবির বদলকে কেউ কেউ 'সুবিধাবাদ' আখ্যা দিলেও ঘনিষ্ঠ মহলে রুদ্রনীলবাবু বলেছেন, তিনি মানুষের সেবা করতে চান। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিবিরে যোগ দিয়েছেন।