বাংলায় কীভাবে ২০০ আসন পেরোবে তৃণমূল কংগ্রেস, অসুখ দেখে টোটকা পিকে-র
নির্বাচনে কৌশলী প্রশান্ত কিশোর পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের হাল ফেরাতে দায়িত্ব নিয়েছেন। আর এই দায়িত্ব নেওয়ার পর এই রাজ্যের সমস্ত জেলায় ব্লকে ব্লকে পৌঁছে গিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের দল। তারা রীতিমতো এলাকার সমস্যা এলাকার মানুষের ভালোলাগা-মন্দলাগা এবং সাংগঠনিক স্তরে শক্তির দুর্বলতা বিচার করে টোটকা দিচ্ছেন। আর সেটা মেনে চলার নির্দেশ রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের ওপর। রাজ্যের জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কিছুটা অংশ আদিবাসী অধ্যুষিত। তপশিলি জাতি উপজাতি অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর সেখানে বসবাস।

উত্তরবঙ্গ বড় ফ্যাক্টর
এই অঞ্চলের ভোটেই বড় থাবা বসিয়েছে বিজেপি। সবমিলিয়ে রাজ্যে ২৯৪ টি আসনের মধ্যে প্রায় ৬০টি আসন এখন বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসকদলের কাছে। এই কুড়ি শতাংশ আসনে ভালো ফল করতে না পারলে তৃণমূলের পক্ষে লড়াই কঠিন হয়ে যাবে। আর যদি এই কুড়ি শতাংশ আসনে তৃণমূল ভালো লড়াই করে, তাহলে ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনে দুশোর বেশি আসন পেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনটাই প্রশান্ত কিশোর রিপোর্টে উঠে এসেছে।

জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া
তবে আচমকাই অঞ্চলের তৃণমূলের কেন কমে গেল এই এলাকায়? এক্ষেত্রে যে কারণ উঠে এসেছে তা হল - জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এই উপজাতি এলাকাগুলিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা স্থানীয় জনগণের থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। যার ফলে বিজেপি তার ফায়দা লুটে এই জায়গাটায় ধস নামিয়ে দিতে পেরেছে। প্রশান্ত কিশোরের নির্দেশ মেনে এখন দল ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে।

মতুয়া ভোটেও ধস
শুধু উত্তরবঙ্গের এবং পশ্চিমাঞ্চলের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাই নয়, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষ তৃণমূলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন। এক্ষেত্রে মতুয়ারা তার বড় উদাহরণ। বিজেপি মতুয়াদের ভোটকে নিজের দিকে টানতে সমর্থ হয়েছে। তৃণমূল জনসমর্থন হারিয়েছে। এই অবস্থায় তাদেরকেও পাশে পেতে তৃণমূলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জনসংযোগের নির্দেশ
ইতিমধ্যে এই সমস্ত এলাকাগুলিতে সরকারি পরিষেবা যাতে আরও ভালভাবে পৌছে দেওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে নিজে দায়িত্ব নিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকদের তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, জেলার তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন - মানুষের কাছে গিয়ে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে। আর তাহলেই মানুষ আবার ফিরে আসবে। মানুষের কাছে আপাতত জনসংযোগকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছে তৃণমূল।
টিম পিকে-র গ্রাউন্ড রিপোর্ট, উত্তরবঙ্গে হারানো জমি ফিরে পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস