আইএসসি-আইসিএসসিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করলেন এঁরা, জেনে নিন তাঁদের সম্পর্কে
পশ্চিমবঙ্গের ৯ জন শিক্ষার্থী আইএসসি-র মাধাতালিকার শীর্ষ তিনটি পদে এবং আরও ২ জন আইসিএসসি পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
প্রকাশিত হয়েছে আইসিএসসি ও আইএসসি পরীক্ষার ফল। কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনস্ বা সিআইএসসিএ পরিচালিত দশম ও দ্বাদশ শ্রেনীর এই দুটি পরীক্ষাতেই অসামান্য ফল করেছে কলকাতা ও শহরতলীর ছাত্রছাত্রীরা।
দ্বাদশ শ্রেনীর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট বা আই এস সি পরীক্ষায় শীর্ষ তিনটি পদে স্থান পেয়েছেন কলকাতার আটজন ছাত্রছাত্রী। মাধ্য়মিক স্তরের ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট ফর সেকেন্ডারি এক্সামিনেশন বা আইসিএসই-র মেধা তালিকার প্রথম তিন জনের মধ্যেও রয়েছেন কলকাতার তিনজন। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে।
কৌশিকী দাসগুপ্ত চৌধুরী
'আমি সাধারণত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। ফাইনাল পরীক্ষার আগে তা বাড়িয়ে এগারো থেকে বারো ঘণ্টা হয়ে যেত। তবে, আমার কোনও প্রাইভেট টিউটর ছিল না। আমি গল্পের বই পড়তে ভালবাসি এবং মিউজিক আমার অন্য়তম পছন্দের। রসায়ন নিয়ে পড়াটাই আমার লক্ষ্য। আইআইটি-তে পড়া আমার স্বপ্ন। পরীক্ষার উত্তীর্ণ হলে সেই স্বপ্ন সফল হবে।'
ঋষভ জালান
'পড়াশোনা করার কোনও নির্দিষ্ট সময় আমার ছিল না। দিনে আমি সর্বাধিক পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। উপন্যাস পড়তে আমার ভালো লাগে। এছাড়াও ক্লাসিক্যাল মিউজিকের আমি ভক্ত। দিল্লির শ্রীরাম কলেজে আমি বিকম পড়তে চাই। তারপর আমি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে চাই এবং এমবিএ পড়ার ইচ্ছেও রয়েছে। কর্মাস নিয়ে আমার কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।'
জয়দীপ বসু
'আমার মুডের উপর পড়াশোনার সময়টা নির্ভর করত। বিজ্ঞানে আমি ১০০% নম্বর আশা করেছিলাম। । তবে ইংরাজিটা নিয়ে আমি সংশয়ে ছিলাম। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আমার গৃহশিক্ষক ছিলেন। এছাড়াও আমার স্কুলের শিক্ষকরাও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। রসায়ন নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চাই। কারণ, রসায়ন আমার প্রিয় বিষয়।'
অমৃতা সরকার
'প্রতি দিন অন্তত ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। অঙ্ক ও কম্পিউটার সায়েন্সে আমার গৃহশিক্ষক ছিল। আমারা বাবা-মা যেহেতু ইতিহাসের শিক্ষক তাই ইতিহাসের নোট তৈরির কাজটা তাঁরাই করে দিয়েছেন। বই পড়াটা আমার নেশা এবং ইতিহাস নিয়ে ভবিষ্যতে গবেষণা করার ইচ্ছে আছে। অবশ্য অ্যাডমিন্সিট্রেটিভ সার্ভিসেস বা পুলিশ সার্ভিসেস যোগ দেওয়ার ইচ্ছে আছে।'
সুমেধা ঘোষ
'সারা বছর ধরেই একটা নির্দিষ্ট সময় মেনে পড়াশোনা করে গিয়েছি। পড়াশোনার সময়টা ধীরে ধীরে বাড়িয়েছি। বারো থেকে চোদ্দ ঘণ্টা করে ফাইনালের আগে পড়াশোনা করেছি। লিখতে আমি খুব ভালোবাসি এবং মিউজিক শোনা আমার পছন্দের। আমি সবসময়ই নিজের জন্য অপশন খোলা রাখি এবং আমি সেই সব জিনিস নিয়েই ভাবি যেগুলি ভবিষ্যতে করতে আমি পছন্দ করব। এখন পর্যন্ত যা ঠিক করেছি তাতে আমি স্নাতক স্তরে অর্থনীতি বা ফিনান্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই।'
দিবিষা জয়সওয়াল
'১২ ঘণ্টা করে আমি পড়াশোনা করতাম। একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আমার গৃহশিক্ষক ছিল। কিন্তু, এরপর থেকে আমি নিজে নিজেই পড়াশোনা করেছি। শিল্প এবং কলা, ক্রিয়েটিভ রাইটিং-করতে আমি ভালোবাসি। জাতীয় স্তরে স্কুলের প্রতিনিধি হিসাবে বিতর্ক অনুষ্ঠানে অংশও নিয়েছি। জন হপকিংস বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, অর্থনীতি এবং ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে আমি পড়াশোনা করতে চাই।'
আর্যমান জৈন
'পড়াশোনার কোনও নির্দিষ্ট সময় আমার ছিল না। আমার স্কুলের শিক্ষকরা খুব সাহায্য করেছেন। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটিতে আমি ভর্তি হয়ে গিয়েছি। বিহেভিওরাল ইকোনমিকস নিয়ে সেখানে পড়াশোনা করব। সেখানে আমার স্নাতক স্তরের পড়াশোনার করার পর আমি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করতে চাই। ক্রিকেট খেলা ও ভিডিও গেমস আমার পছন্দের।'
আমন চৌধুরী
'নয়াদিল্লির একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমি বিকএম-এ ভর্তির পরিকল্পনা নিয়েছি। সেখানে আমি অ্যাকচুরিয়াল সায়েন্স নিয়ে পড়তে চাই। ব্যাডমিন্টন খেলতে আমি পছন্দ করি। অনবরত পরিকল্পনা করা এবং ধারাবাহিকতা ও কঠোর পরিশ্রম আমাকে ভালো নম্বর পেতে সাহায্য করেছে।'
স্পৃহা পাণ্ডে
'আমি কোনও দিনই ভাবিনি যে স্কুলের টপার হব। দশ থেকে বারো ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না। আমি শিক্ষক হতে চাই। রসায়ন অথবা পদার্থবিদ্যায় আমি মাস্টার্স এবং তারপরে পিএইচডি করতে চাই।'
অনুরাগ ঘোষ
'ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পড়াশোনা করাটা আমার অভ্য়াসে ছিল। ৯৮% নম্বর পাওয়ার লক্ষ্য রেখেছিলাম। সেখানে আমি ৯৯% পাওয়ায় খুবই খুশি। একাদশ শ্রেণিতে আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়ব। পরে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ব। স্টোরিবুক পড়া এবং ক্রিকেট খেলা দেখতে আমি পছন্দ করি। আর এগুলি আমার প্রিয় অভ্যাস।'