বাংলা জুড়ে মানব পাচার রুখতে অভূতপূর্ব সাফল্য মাত্র এক বছরের মধ্যে! কী বলছে পরিসংখ্যান
ক্রমেই বাড়ছে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। দিনে দুপুরে নিখোঁজ হওয়ার বিভিন্ন ঘটনা বাংলা জুড়ে ক্রমেই প্রকট হচ্ছে।
ক্রমেই বাড়ছে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। দিনে দুপুরে নিখোঁজ হওয়ার বিভিন্ন ঘটনা বাংলা জুড়ে এর আগে বহুবার শোনা গিয়েছে। তবে ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্য়ে তা অভূতপূর্বভাবে কমতে থাকে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তাক লাগানো পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ১০ গুণ কমে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মানব পাচারের সংখ্যা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই অপরাধ ঘিরে পরিসংখ্য়ানই কী বলছে?
ভারতে সবচেয়ে বেশি মানব পাচার চলছে পশ্চিমবঙ্গের পথে!
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বলছে, ভারতের ২৫ শতাংশ মানব পাচার চলে শুরু মাত্র পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে। ক্রমেই এই বাংলা মানবপাচারের মতো অপরাধের আঁতুর ঘর হয়ে উঠেছিল। ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই দাবি করছে। ২০১৬ সালে গোটা দেশের ৪৪ শতাংশ মানব পাচার এই পশ্চিমবঙ্গ দিয়েই হয়েছে বলে দাবি ক্রাইম রেকর্ডের। ২০১৬ সালে ২০.৬৪ শতাংশ শিশুপাচারে ঘটনা ঘটেছে। যা ২০১৭ সালে নেমে দাঁড়িয়েছে ১৬.১ শতাংশে।
কোন এলাকায় বেশি চলছে এই অপরাধ?
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মানব পাচারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলার মাধ্যমে মানব পাচারের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের চরম তৎপরতায় সেই অপরাধ অনেকটাই কমেছে। ৪ টি আন্তর্জাতিক সীমান্ত সম্পন্ন পশ্চিমবঙ্গকে 'পাচার' এর মতো অপরাধ থেকে দূরে রাখতে প্রশাসনিকস্তরে ব্যাপক তৎপরতা দেখা গিয়ে এই কয়েক বছরে।
মানব পাচার ও পরিসংখ্যান
ক্রাইম রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলা থেকে ৮১৮৭ জন শিশু নিখোঁজ হয়। যা সেই বছর গোটা দেশের নিরিখে ছিল ১২.৯ শতাংশ। যা ২০১৬ সালের তুলনায় অনেকটাই কম। ২০১৬ সালে বাংলায় নিখোঁজ শিশুর সংখ্যা ছিল ৮৩৩৫জন। ফলে দেখা যাচ্ছে ধীরে ধীরে বাংলায় পাচারের অপরাধ কমতে শুরু করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে মানব পাচার বিষয়ক ঘটনা ছিল ৩৫৭৯টি। যা এক বছরের মাথায় গিয়ে দাঁড়ায় ৩৫৭ টি ঘটনায়। নিখোঁজদের উদ্ধারের ক্ষেত্রেও চমকপ্রদ পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে নিখোঁজদের উদ্ধারের ঘটনাও। ২০১৬ সালে ২৩,৬২৪ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছিল। ২০১৭ সালে উদ্ধার হয়েছেন ৫৩৩৪৫ জন।
কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
শিশু পাচার থেকে মানব পাচার নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে বেশ কয়েকটি এনজিও। গড়ে উঠেছে 'শক্তি বাহিনী'র মতো সংগঠন। এগিয়ে এসেছে মার্কিন কনস্যুলেটও। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগও যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে রাজ্য সরকারও এই মানব পাচার রুখতে উদ্যোগী হয়েছে।