হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাতেই হাইকোর্টে সিবিআই, জামিন পেয়েই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে তোপ ববির
সকাল থেকে উত্তেজনা! কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে রাজ্যের দুইমন্ত্রী এবং এক বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছে গেল সিবিআই। একেবারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে মুড়ে ফেলা হল গোটা এলাকা।
সকাল থেকে উত্তেজনা! কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে রাজ্যের দুইমন্ত্রী এবং এক বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছে গেল সিবিআই। একেবারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে মুড়ে ফেলা হল গোটা এলাকা।
আগে থেকে প্ল্যান করেই গ্রেফতার করা হল রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম,
পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। আর এরপর থেকেই উত্তাল বাংলা।
তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যে প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কদের দাবি, বাংলায় বিজেপি তাদের হার মেনে নিতে পারছে না। আর সেই কারণে এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মুকুল-শুভেন্দুর নাম না থাকা নিয়েও প্রশ্ন শাসকদলের।
অন্যদিকে, বিজেপির দাবি কখনই তাঁরা তদন্তকারী সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে না। আর মুকুল-শুভেন্দুর নাম না থাকা নিয়ে বিজেপির দাবি তৃণমূলের একাধিক সাংসদের নামও নেই সেই তালিকাতে। আর এই তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই সন্ধ্যায় জামিন পেয়ে যান ধৃত চারজন। আদলতে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে সিবিআই।
সিবিআইয়ের সমস্ত দাবি খারিজ করে দেয় আদালত।
জানা যাচ্ছে, নিম্ন আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পরে দফায় দফায় বৈঠক নিজাম প্যালেসে। জানা যাচ্ছে, নগরদায়রা আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীরা। সম্ভবত চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করতে পারে সিবিআই।
তবে এবার একেবারে কোমর বেধে আইনি লড়াইয়ে নামছে সিবিআইয়ের আইনজীবী। অন্যদিকে রাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা। সকাল থেকে নিজাম প্যালেসের অফিস ঘেরাও করে রাখা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এই অবস্থায় নারদা মামলার শুনানি সম্ভব নয়, প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়ে এমনটাই আবেদণ করল সিবিআই। এই মুহূর্তে হাইকোর্টে মামলার শুনানি চলছে। এমনটাই জানা যাচ্ছে।
আদালতে শুনানিতে সিবিআইয়ের আবেদন, হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। এই অবস্থায় যদি তৈরি করা হয় তাহলে তদন্ত সম্ভব নয়। অন্যদিকে, নারদকাণ্ডে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপিকে কড়া সুরে আক্রমণ শানালেন ফিরহাদ হাকিম।
বাজেভাবে হেরে যাওয়ার জন্যই বিজেপি বাংলার মানুষের ওপর প্রতিহিংসা রাজনীতি করছে বলেই তোপ দাগেন তিনি। ফেসবুকে দেওয়া বার্তায় নারদকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতিতে বিজেপির এভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি দেশবাসী দেখছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। জামিন পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফেসবুকে তাঁর বক্তব্য রাখেন ফিরহাদ হাকিম।
তিনি লেখেন, 'আজ আমাকে ও আমার সতীর্থদের প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হতে হল। বিজেপির প্রতিহিংসা আসলে বাংলার মানুষের প্রতি। বাংলার মানুষ যেভাবে বিপুল ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে জিতিয়েছেন সেটা মেনে নিতে না পেরেই এই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি।
কোভিড সংক্রান্ত সব কাজ রুখে দিয়ে বাংলাকে দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। বাংলা তথা দেশের লাখো লাখো মানুষের মৃত্যুর থেকেও তাদের কাছে ক্ষমতার লোক্ষ অনেক বেশি।'
তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় ফেরার পরই কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর শীর্ষে ফেরা ফিরহাদ হাকিমের নারদকাণ্ড প্রসঙ্গে সংযোজন, 'কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে ২০১৪ সালে একটি স্টিং অপারেশনের নাটক সাজানো হয়েছিল। যার প্রমাণ এখনও হয়নি। শুধুমাত্র ভোটের আগে আমাদের হেনস্থা করার তাগিদে বিষয়টা সামনে তুলে আনা হয়। আসলে এটা প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়।'