
বিধাননগর-আসানসোলের একের পর এক ওয়ার্ড হার মানাল উদয়নের রেকর্ডকেও! প্রবণতা নিয়ে চিন্তিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
চারটি পুর কর্পোরেশনে ( west bengal municipal election 2022) বিপুল ভোটে জয় তৃণমূলের (trinamool congress)। মুখ্যমন্ত্রী জয়ের জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। যদিও এই চার পুরসভার মধ্যে বিশেষ করে কলকাতার সংলগ্ন বিধাননগর (bidhannagar) এবং আসানসোলের (asansol) ভোটের ফল নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, প্রাপ্ত ভোটের হার কখনই স্বাভাবিক প্রবণতা নয়।


আসানসোলের ৫ টি ওয়ার্ডে তৃণমূলের ভোট ৯০ শতাংশের কাছে
এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আসানসোলে তৃণমূল ৬৪ শতাংশ ভোট পেলেও পুরসভার ৫০, ৫৪, ৫৮, ৩ এবং ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের হার যথাক্রমে ৯৩%, ৯১%, ৯৬%, ৮৯% এবং ৮৯%। ভোটের দিন বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীদের ওপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল এটা তারই ফল বলেও অভিযোগ করছেন বিরোধীরা।

বিধাননগরের ১৭ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল পেয়েছে ৮০%-এর বেশি ভোট
বিধাননগরে তৃণমূল ৭৩,৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হলেও ১৭ টি ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থীরা ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন। এর মধ্যে ৪ জন আবার ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ডের পিনাকী নন্দী ৮৫.৯০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ২ নম্বর ওয়ার্ডের রহিমা বিবি ৯৪.৩৬ শতাংশ, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অরিত্রিকা ভট্টাচার্য ৯৫.৯৪ শতাংশ, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহনওয়াজ আলি মণ্ডল ৯২.২২ শতাংশ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায় ৮৬.৪১ শতাংশ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দেবরাজ চক্রবর্তী ৮৩.৬৭ শতাংশ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্জ্রনাথ বাগুই ৮০.৭৭ শতাংশ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের অতীন্দ্র সানা ৮৩.৩৭ শতাংশ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মণীশ মুখোপাধ্যা ৮২.২২ শতাংশ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ণিমা নস্কর ৮২.২২ শতাংশ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুশোভন মণ্ডল ৮৭.৮৯ শতাংশ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিনু মণ্ডল ৮৭.৬৭ শতাংশ, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবীর সর্দার ৮৫.৬১ শতাংশ, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়দেব নস্কর ৮১.৭২ শতাংশ, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের চামেলী নস্কর ৮৫.৯৭ শতাংশ, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলো দত্ত ৯২.৩৭ শতাংশ, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তুলসী সিংহ রায় ৮৭.৭২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
|
গণতন্ত্রের লজ্জা বলেছেন, শুভেন্দু অধিকারী
তৃণমূলের এই জয়কে গণতন্ত্রের লজ্জা বলে টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। টুইটেও তিনি বলেছেন, এই ফলাফল প্রমাণ করে পুর নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।

স্বাভাবিক প্রবণতা নয়, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
তৃণমূলের এই ফল স্বাভাবিক প্রবণতা নয় বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী এই কথা বলতে গিয়ে বাম আমলের ভোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা স্লটার অফ ডেমোক্রেসি বইয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন।

তৃণমূলের ফল হার মানিয়েছে উদয়ন গুহের রেকর্ডকেও
চার পুর কর্পোরেশনের মধ্যে বিধাননগর এবং আসানসোলের একের পর এক কেন্দ্রে তৃণমূলের ফল মাস কয়েক আগে রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রে হওয়া উপনির্বাচনে প্রাপ্ত তৃণমূলের ভোটকে হার মানিয়েছে। বলা ভাল সেই ভোটে রেকর্ড করা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের রেকর্ডকে হার মানিয়েছে। উদয়ন গুহ প্রায় একলক্ষ চৌষট্টি হাজার ভোটে জিতেছিলেন। তার প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮৪. ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে সেই নির্বাচনে গোসাবা এবং খড়দহেও তৃণমূল প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট উদয়ন গুহের থেকে কিছুটা কম ছিল। গোসাবায় তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮৫ শতাংশের কাছাকাছি।
জনগণই সুদে-আসলে হিসেব করবে ২০২৪-এ! ২০১৭-তে তৃণমূলের দুর্গাপুর পুরসভা জয়ের কথা মনে করালেন শুভেন্দু