শাঁওলি ইস্যুতে বয়ান সরকারের, কী উদ্যোগ নিলেন মমতা
শাঁওলি মিত্রকে নিয়ে হওয়া সমস্যার সমাধান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে কাজ চালাচ্ছিলেন সেভাবেই কাজ চালাবেন। শাঁওলি মিত্রের মন্তব্য প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শাঁওলি মিত্রকে নিয়ে হওয়া সমস্যার সমাধান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যেভাবে কাজ চালাচ্ছিলেন সেভাবেই কাজ চালাবেন। বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতির পদ ছাড়া নিয়ে শাঁওলি মিত্রের মন্তব্য প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।
সপ্তাহ তিনেক আগে শাঁওলি মিত্র মুখ্যমন্ত্রীকে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাকে ইস্তফাপত্র বলতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাজ করতে গিয়ে আধিকারিক পর্যায়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে সেই সমস্যা মুখ্যমন্ত্রী সমাধান করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে শাঁওলি মিত্রকে বোঝানোর কাজও শুরু করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর রবীন্দ্র রচনাবলী দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শাঁওলি মিত্রকে। সেইসময় বাংলা অ্যাকাডেমির দায়িত্বে ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। তিনি দায়িত্ব ছাড়ার পর সরকারি তরফে রবীন্দ্র রচনাবলীর সঙ্গে বাংলা অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নেন শাঁওলি মিত্র।
শাঁওলি মিত্র রবিবার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সাল পর্যন্ত কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু তারপর থেকেই অসুবিধার শুরু। সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেনন, পরিকাঠামোর অভাবে কাজ করতে পারছেন না। বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি হিসেবে কাজ চালানোর জন্য যে পরিকাঠামো তিনি চেয়েছিলেন, তা সরকারি পর্যায়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ভাল ভাবে কাজ করতে না পারলে পদে থেকে কী লাভ এমন প্রশ্নও করেছন শাঁওলি মিত্র। কাজ করতে তিনি উৎসাহ বোধ করছেন না বলে জানিয়েছিলেন।
সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে শাঁওলি মিত্র জানিয়েছিলেন, কোন কোন পয়েন্টে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে, তা মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে জানিয়েছে। বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়ে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন শাঁওলি।
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বের সময় থেকেই তৎকালীন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গী হয়েছিলেন শাঁওলি মিত্র। পশ্চিমবঙ্গে বাম শাসনের শেষের দিকে, পরিবর্তিন চাই শ্লোগান দিয়ে যে হোর্ডিং প্রকাশিত হয়েছিল, তাঁতে অন্যতম ছিলেন শাঁওলি মিত্র।
২০০৯ সালে মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময় রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় পরিবর্তন চাই স্লোগান দেওয়া বিদ্বজনের একাংশকে রেলের কমিটিতে ঠাঁই দেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্পিতা ঘোষ, বিভাস চক্রবর্তী, শুভাপ্রসন্নদের সঙ্গে সেই তালিকায় ছিলেন শাঁওলি মিত্রও। কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও মাসে কেউ পেতেন ২৫ হাজার টাকা। কেউ বা পেতেন ৫০ হাজার টাকা। রেলমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছরে শুধু ভাতা বাবদই খরচ হত প্রায় ৪ কোটি টাকা। যদিও অধীর চৌধুরী ২০১৩ সালে রেল প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর রেলের সেই কমিটি ভেঙে দেন।
শাঁওলি মিত্র বাংলা থিয়েটার ও সিনেমার অভিনেত্রী। ঋত্বিক ঘটকের যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রে বঙ্গবালা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। বাংলা নাট্যজগতের প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র এবং তৃপ্তি মিত্রের কন্যা ২০১১ সালে রবীন্দ্র সার্ধশত জন্মবর্ষ উদযাপন সমিতির দায়িত্বেও ছিলেন।