শিক্ষক অবসরের সময়সীমা ৭০, চিকিৎসকদের ৬৮! রাজ্যের ভাবনায় বেকারত্ব বাড়ার আশঙ্কা
এবার শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর ভাবনাও শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। একেবারে ১০ বছর বাড়িয়ে শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে ৭০-এ নিয়ে যেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা, ৩১ অক্টোবর : এবার শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর ভাবনাও শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। একেবারে ১০ বছর বাড়িয়ে শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে ৭০-এ নিয়ে যেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক সমস্যা দূর করতেই এই অভিনব উদ্যোগ নিতে চলেছেন তিনি। এর আগে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক সমস্যা মেটাতে চিকিৎসকদের অবসরের বয়স বাড়ানোর একইরকম উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে এই ভাবনার কথা প্রকাশ হয়ে পড়তেই বিরোধীদের দাবি, রাজ্যে বেকারের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। উচ্চশিক্ষার পর যুব সম্প্রদায় কাজের জন্য হাহাকার করছে। তার থেকেও বড় শিক্ষাক্ষেত্র হোক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র- তাজা রক্তের দরকার। তারুণ্যের অভুত্থান না হলে জোয়ার আসবে না কোনও ক্ষেত্রেই। এক্ষেত্রে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি ভিন্ন। তাঁর যুক্তি, চিকিৎসা হোক বা শিক্ষাদান- উভয় ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতার একটা বিশাল বড় ভূমিকা আছে।
অবসরের
সঙ্গে
সঙ্গে
বহু
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে
অভিজ্ঞ
শিক্ষকশূন্য
হয়ে
পড়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
বা
হাসপাতালেও
একই
অবস্থা।
তাই
অবসরের
বয়স
বাড়িয়ে
দিলে
রোগী
বা
ছাত্রছাত্রীরা
উপকৃতই
হবেন।
আর
এতে
সরকারেরও
নিয়োগ
সমস্যাও
অনেকাংশে
কমবে।
শিক্ষকদের
কর্মজীবনের
সময়সীমা
এখন
৬০
বৎসর।
তা
বাড়িয়ে
৭০
বছর
করতে
হলে
বিল
আনতে
হবে
বিধানসভায়।
একইভাবে
স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও
৬৫
থেকে
৬৮
করতে
বিল
আনতে
হবে।
কিছুদিন আগেই বিধানসভায় বিল পাস করে প্রশাসনিক প্রধানদের অবসরের বয়স বাড়ানো হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও পুরোপুরি মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনার স্তরে আছে বিষয়টি। বিরোধী রাজনৈতিক শিবির একেবারে ভিন্ন মেরুতে রয়েছে। এই অবসর সংক্রান্ত ভাবনা-চিন্তা শুরু হলে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে তার প্রভাব পড়বেই। এক্ষেত্রে যে নতুন কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগের সম্ভাবনা কমবে, তা বলাই বাহুল্য। এই ভাবনার উদ্রেক হওয়ার পর শিক্ষক সংগঠনগুলি মনে করছে, শিক্ষিত বেকারদের চাকরির সুযোগ অন্তত খাতায়-কলমে হলেও আছে, এবার থেকে সেই সম্ভাবনারও বিসর্জন ঘটতে চলেছে।
পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার জন্যই সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়স কমিয়ে ৬০ করেছিল। এবার সেই সিদ্ধান্তকে বিসর্জন দিয়ে একেবারে ৭০ করতে চাইছে অবসরের বয়স। বর্তমান সরকারের আমলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। আগের তুলনায় অনেকাংশে বেড়েছে পড়ুয়ার সংখ্যাও। শুধু বাড়েনি শিক্ষকের সংখ্যা।
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতও জাতীয় সূচকের থেকে অনেকটাই নীচে। দীর্ঘদিন রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়োগ কার্যত বন্ধ। শুধু বিরোধীদের কোমর ভেঙে গেছে বলেই এখনও আন্দোলন শুরু হয়নি। তবে বিরোধী কংগ্রেস ও বামদলগুলি শীঘ্রই এ নিয়ে আন্দোলনে নামবে বলে চূড়ান্ত করেছে। তার আগে বিরোধীদের কাছ থেকে আন্দোলনের হাতিয়ার কেড়ে নিতেই এই ভাবনার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।