করোনা মাথায় রেখেই দুর্গাপুজোর গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্য সরকার
আর এক মাসও বাকি নেই, ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজো। কিন্তু যেভাবে করোনার বাড়বাড়ন্ত তাতে এবছর জমকালো দুর্গাপুজো হবে না রাজ্যে। তবুও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বলেই কথা তাই শক্ত হাতে পুজো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান রাজ্য প্রশাসন তাই করোনা সংক্রমণ বাগে আনতে না পারলেও দুর্গাপূজাতে সংক্রমণে না ছড়ায় সে কারণেই শক্ত গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দর্শনার্থীদের মাস্ক বাধ্যতামূলক। যদি কেউ মাস্ক পড়ে না আসেন, তার জন্য প্যান্ডেল কর্তৃপক্ষকে মাস্কের ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
দর্শনার্থীদের ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজারও। পুজো কতৃপক্ষকে প্যান্ডেলে পর্যাপ্ত স্যানিটাইজার রাখতে হবে। এছাড়াও সময়ান্তরে প্যান্ডেল স্যানিটাইজ করতে হবে, আশপাশের এলাকাও স্যানিটাইজ করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে হবে দর্শনার্থীদের। আর দর্শনার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে তার জন্য মোতায়েন করা হবে পুলিস ও ভলেন্টিয়ার। পুজো কর্তৃপক্ষকেও পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন রাখতে হবে প্যান্ডেলে। তাঁদেরকেও মাস্ক পরতে হবে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। ভিড় হলে বা কেউ কোনও নিয়ম না মানলে তাঁরা সামাল দেবেন।
পুজো মণ্ডপে বা তার আশপাশে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুমোদিত হবে না। সেরা পুজো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচারকদের বড় টিম মণ্ডপে এসে ভিড় করতে পারবেন না। বড়জোর দুটো গাড়ির অনুমোদন মিলবে, তাও সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে। বেশিরভাগ খুঁটিয়ে দেখার কাজ ভার্চুয়ালি করতে হবে।
পুজোর উদ্বোধন ও বিসর্জন দুইই করতে হবে ন্যূনতম লোক নিয়ে। উদ্বোধন করতে হবে যতটা সম্ভব ভার্চুয়ালি। ভিড় এড়ানোর জন্য আরও বেশি দিন ধরে খোলা রাখা যেতে পারে প্যান্ডেল। তৃতীয়া থেকেই উদ্বোধন হতে পারে পুজোর। পুজোর পরে কোনও কার্নিভাল হবে না। অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে আনতে হবে, যাতে ফউল সংগ্রহ করতে ভিড় না হয়। পুরোহিত যেন মাইকে মন্ত্র পড়েন, যাতে অনেক দূর পর্যন্ত শোনা যায়, কেউ ভিড় না করেন।
নিজেদের পুজোর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম-নীতিরও প্রচার চালাতে হবে প্রতিটি পুজো কমিটিকে। সোশ্যাল মিডিয়া ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমে নিয়মিত চলবে এই প্রচার।
বিসর্জনের জন্য কোন ঘাটে কখন কোন পুজোর বিসর্জন তা আগাম পরিকল্পনা করতে হবে প্রশাসনের সঙ্গে। অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুর খেলা- এসব অনুষ্ঠান পরিকল্পিত ভাবে করতে হবে। কোনও ভিড় করা চলবে না।

পাশাপাশি, পুজো কর্তৃপক্ষকে রাজ্য প্রশাসনের স্পষ্ট নির্দেশ, খোলামেলা বড় প্যান্ডেল করতে হবে। ঢোকা ও বেরোনোর গেট আলাদা রাখতে হবে। যদি সম্ভব হয় তবে চার দেওয়াল খোলা রাখতে হবে। যাতে দর্শনার্থীরা দূর থেকে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন। প্যান্ডেলের ভেতরে যথেষ্ট জায়গা থাকতে হবে, যাতে দর্শকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন। প্রয়োজনে মেঝেতে দাগ দিয়ে বোঝাতে হবে যাতে কারও কোনও সমস্যা না হয়। কোনওখানেই ভিড় ও জমায়েত করতে দেওয়া যাবে না। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমস্ত কোভিড-নীতি মেনে চলতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে এবং দর্শকদেরও।