যাদবপুরের বিক্ষোভকে 'পরিকল্পিত ঘটনা' বলে ক্ষোভ উগড়ালেন রাজ্যপাল ধনকড়! কাকে রাখলেন নিশানায়
মঙ্গলবার সকাল ১১:৩০ মিনিট পর্যন্ত টানা ৪৫ মিনিট ধরে শহরের ঐতিহ্যবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুরের ক্যাম্পাসে ঘেরাও করে রাখা হয় আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধানকড়কে।
মঙ্গলবার সকাল ১১:৩০ মিনিট পর্যন্ত টানা ৪৫ মিনিট ধরে শহরের ঐতিহ্যবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুরের ক্যাম্পাসে ঘেরাও করে রাখা হয় আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে। এরপরও চলে পড়ুয়াদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ। ক্যাম্পাসে ঢুকে তাঁর গাড়ি ঘিরে চলে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। চলে গো ব্যাক স্লোগান। সিএএ, এনআরসির প্রতিবাদ ও এই ইস্যুতে রাজ্যাপালের অবস্থানের জেরে চলে এই বিক্ষোভ। আর এমন এক দিনে যাদবপুর এই ছবি দেখল ,যেদিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন দিবস।
মঙ্গলবার কী ঘটেছে?
মঙ্গলবার সমাবর্তনের দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের গাড়ি ঢুকতেই সেখানে পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন তিনি। যাঁর হাত ধরে এই সমাবর্তন শুরু হওয়ার কথা সেই রাজ্যপালের ঘেরাওয়ের জেরে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। প্রসঙ্গত, সোমবারও একই ছবি দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। সেদিন পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানান যাদবপুরের আচার্য জগদীপ ধনকড়। তবে তারপরেও পরিস্থিতি উত্তাল হয় সোমবার। তিনি সেখানে প্রশ্ন করেন, 'কিভাবে আচার্য ছাড়া সমাবর্তন সংগঠিত হতে পারে? যেখানে আচার্য নিজে উপস্থিতি রয়েছেন ক্যাম্পাসে।'
'পরিকল্পিত ঘটনা'
পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে গাড়ির ভিতর কার্যত বন্দি হয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধানকড়। এরপর তিনি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন, পড়ুয়াদের এই অশান্তির পরিবেশ ও বিক্ষোভের ঘটনা 'পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে।' এরপরই তিনি মমতা সরকারের বিরুদ্ধে নিজের রাগ উগড়ে দেন।
যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি
গোটা পরিস্থিতি কে 'যন্ত্রণাদায়ক' বলে ব্যাখ্যা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন এমন পরিস্থিতিতে আইনের পতন বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, কোনও মতেই তিনি এমন পরিস্থিতি বরদাস্ত করবেননা। তিনি জানানা কয়েকজন ব্যক্তির জন্য পড়ুয়াদের এমন পরিস্থিতি।এর নেপথ্যে রয়েছে রাজ্য সরকার।
মমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ
আচার্য জগদীপ ধনকড় গোটা পরিস্থিতির জন্য উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকেই দায়ী করেছেন। এছাড়াও তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বারবার উসকানি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, 'এই বিক্ষোভ তৈরি করা হয়েছে। আমি সরকারকে বলছি যে সরকারি অর্থ ব্যবহার করে বিক্ষোভকে উস্কানি দেবেন না। বলেন, আমি মিডিয়াকে আবেদন করছি ওরা দেখাক, কী করে মুষ্ঠিমেয় লোক এভাবে কয়েক হাজার ছাত্রের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।' তিনি জানান , বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধানিক প্রধান হিসাবে তাঁকে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হচ্ছে।
'ওঁরা আগুন নিয়ে খেলছে'
রাজ্যপাল যখন ক্যাম্পাসে , তখন তাঁর গাড়ি ঘেরাও হতেই ক্যাম্পাসের অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে ফোন করে কথা বলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। এরপরই গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে রাজ্যপাল বলেন, ' আমি এখানে আমার কাজ করতে এসেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাকে বলেন যে তিনি অসহায় তবে আমি অসহায় না। ওরা আগুন নিয়ে খেলছে। রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শিক্ষার মধ্যে তারা বিষ ঢালছে। ' তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের লজ্জা এটা। এটা আমার জন্য খুব দুঃখের বিষয়।'
|
অনিশ্চিত সমাবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্জি
এদিন সমাবর্তন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে গোটা ঘটনার জেরে। পড়ুয়ারা আন্দোলের রাস্তা থেকে সরে যেমন আসেননি, তেমনি সকালে দেখা যায়, গাড়ি ঘেরাওয়ের মধ্যেও রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে গাড়ির মধ্যেই ছিলেন। এরপর বারবার আন্দোলনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর্জি জানায় রাজ্যপালের রাস্তা ছাড়ার জন্য যাতে অনড় অবস্থান দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের।