ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবলীলায় ক্ষতি ১ লক্ষ কোটিরও বেশি! নবান্নের হিসেব কেন্দ্রকে
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান (থাইল্যান্ডের আঞ্চলিক ভাষায় উম্পুন) ধ্বংসলীলা চালিয়ে গিয়েছে বাংলার বুকে। শনিবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কেন্দ্রের সাত সদস্যের দল বৈঠক করে। তখনই তাঁদের হাতে রাজ্যের তরফে তুলে দেওয়া হল আম্ফানে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব। রাজ্য প্রায় ১ লক্ষ আড়াই হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পেশ করে।

আম্ফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে নিয়ে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার পর এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করেছিলেন। এরপর কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল দুদিন ধরে রাজ্য পরিদর্শন করে। বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা।
এরপর এদিন নবান্নে রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় দল। কেন্দ্রীয় দলকে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এক কোটি অতি নগন্য। এরপরই রাজ্যের তরফে হিসেব পেশ করা হয় সাত সদস্যের আন্তঃমন্ত্রক দলের কাছে। এই দলে ছিলেন কেন্দ্রের স্বরাষট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অনুজ শর্মা। ছিলেন কৃষি, মৎস্যচাষ, পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও।
রাজ্যের তরফে প্রতিনিধিদের হিসেব দেওয়া হয়েছে, রাজ্যে ২৮ লক্ষ ৫৬ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েচে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। ফসল নষ্ট হয়েছে ৬ হাজার ৫৮১ কোটি টাকার।
এছাড়া মৎস্যজীবীদের প্রায় ৮ হাজার মাছ ধরার নৌকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার কুঁড়ে ঘর। এ ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যে প্রায় ২১ লক্ষ ২২ হাজার গবাদি পশু মারা গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাদার ৬৪০টি স্কুল, ৩০১টি কলেজ, ১২ হাদার ৬৭৮টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র।
নদী বাঁধ ভেঙেছে ২৪৫ কিলোমিটার। প্রায় চার কিলোমিটার সমুদ্র বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে। বনভূমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার হেক্টর। এছাড়া রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের খুঁটি, জল সরবরাহ ব্যবস্থা, নিকাশি ব্যবস্থার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাকুল্যে মোট ক্ষতিপর পরিমাণ ১ লক্ষ ২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।