ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়-অতিবৃষ্টি-বজ্রপাত-খরার বিপদ বাংলায়! জেলা ধরে তালিকা প্রকাশ আবহাওয়া দফতরের
শুধু ২০২১ নয় সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে একাধিক ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) আছড়ে পড়েছে। অনেকেরই স্মরণে রয়েছে গতবছরে দিঘায় জলোচ্ছ্বাসের কথা। অতিবর্ষণের (heavy rain) কারণে কলকাতায় জল জমার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ স
শুধু ২০২১ নয় সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে একাধিক ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) আছড়ে পড়েছে। অনেকেরই স্মরণে রয়েছে গতবছরে দিঘায় জলোচ্ছ্বাসের কথা। অতিবর্ষণের (heavy rain) কারণে কলকাতায় জল জমার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সকলেই জানেন। এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার নেই। জলবায়ু বদলের প্রভাব যে বাংলার ওপরে পড়েছে, এইসব ঘটনাই তার প্রতিফলন। আবহাওয়া দফতরের 'হ্যাজার্ড অ্যাটলাস' (Hazard Atlas)-এ সেইসব তথ্য উঠে এসেছে।
'হ্যাজার্ড অ্যাটলাস' কী
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের পুনের জলবায়ু গবেষণা শাখার তরফে এই হ্যাজার্ড অ্যাটলাস তৈরি করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালি আবহ বিজ্ঞানী পুলক গুহঠাকুরতা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ১৪৭ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে ১৯৬১ সাল থেকে ২০২০ সালের সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সঙ্গে বাংলার ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাত এবং খরার রিপোর্ট তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে কোথায় কী হতে পারে তার একটা সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড়ের প্রকোপ উপকূলের ৩ জেলায়
কখনও ফণী, কখনও বুলবুল, ২০২০-র আমফান কিংবা কয়েকমাস আগের জওয়াদ, একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে বাংলার উপকূলে। শুধু ঝড়ে ক্ষতি নয়, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে হওয়া বৃষ্টিতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাংলার বিভিন্ন জেলায়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের হ্যাজার্ড অ্যাটলাস-এ তিন জেলা উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে বিপদের তালিকায় রয়েছে এই তিন জেলা। এছাড়া এই তিন জেলায় প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে প্রায় ১২ ফুটের মতো জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বর্ষণের তালিকায় যেসব জেলা
ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে সবসময়ই প্রবল বর্ষণও পিছু নেয়। শুধু ঘূর্ণিঝড় নয় নিম্নচাপের কারণেও প্রবল বর্ষণও হয়ে থাকে। সম্ভাব্য প্রবল বর্ষণের কবলে পড়ার তালিকায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাই রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে হওয়া বর্ষণের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এইসব জেলাগুলিকে তালিকায় রাখা হয়েছে।
অতিবৃষ্টির তালিকায় যেসব জেলা
২০২১-এ রাজ্যের কোনও কোনও জায়গায় অতিবৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, অতিবৃষ্টির কারণে শহর কলকাতায় জল জমেছে। তবে শুধু কলকাতায় নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলিতেও অতিবৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে ১৯০১ সাল থেকে ২০১৯-এর মধ্যে বিভিন্ন জেলায় অতিবৃষ্টি বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়াকে বাদ দিলে বাকি জেলাগুলি অতিবৃষ্টির কবলে। গত কয়েক বছরে আবহাওয়া দফতরের তরফে অল্প সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে বারে বারে।থ এবার সেকথা 'হ্যাজার্ড অ্যাটলাস'-এ উঠে এসেছে।
বজ্রপাতের আশঙ্কা যেসব জেলায়
সাম্প্রতিক বছরগুলিকে বহর বেড়েছে। আগের থেকে বহু মানুষের মৃত্যুও হচ্ছে। সেই কারণে আবহাওয়া দফতরের তরফে আলাদা করেও বজ্রপাতের সতর্কবার্তা জারি করা হচ্ছে। গত বছরগুলিতে বজ্রপাতের হিসেব কষে আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং হাওড়ায় বজ্রপাত বেশে হয়েছে। আর উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে এই তালিকায় রয়েছে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুর।
রয়েছে খরার আশঙ্কাও
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বর্ষণ হলেও ভবিষ্যতে খরা থাকবে না তেমনটা নয়। গঙ্গার পূর্ব পাড়ের জেলা নদিয়ায় ভবিষ্যতে খরার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে হ্যাজার্ড অ্যাটলাসে উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে পশ্চিমপাড়ের জেলা বীরভূমকেও রাখা হয়েছে সম্ভাব্য খরা পরিস্থিতির তালিকায়। বছরের পর বছর জেলাগুলির বৃষ্টির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এবং আন্তর্জাতিক সূচকের মাধ্যমে তৈরি করা দুর্বিপাক মানচিত্রে এই দুই জেলার কথা উঠে এসেছে।
দেশে করোনায় আক্রান্ত ২৪ ঘন্টায় ৩.৩৭ লক্ষের বেশি! পজিটিভিটি রেট ১৭.২২%